তেইশ একর অনাবাদি খাস জমি কৃষকদের ধান চাষ করার নির্দেশ ইউএনওর

নিউজ২৪লাইনঃ
ইয়ামিন কাদের নিলয়
বিশেষ প্রতিনিধি

সম্প্রতি জেলা প্রশাসকদের সাথে মাননীয় প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমন্বয় মিটিং এ ২৫ দফা নির্দেশনার প্রথম দফা ছিলো-খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে। পতিত জমিতে ফসল ফলাতে হবে। কোনো জমি যেন অনাবাদি না থাকে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। তারি ধারাবাহিতায় শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার আরশিনগর ইউনিয়ের ৮নং ওয়ার্ডের মাদবর কান্দি গ্রামে অনাবাদি ২৩ একর সরকারি খাস জমিতে স্থানীয় কৃষকদের দ্বারা চাষাবাদের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
২৭ জানুয়ারি(শুক্রুবার) বেলা ১১ টার দিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা “এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে” সেটি বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসানের পরামর্শে কৃষকদের জমিগুলোতে চাষাবাদ করার নির্দেষ দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন। নির্দেশনা শুনে স্থানীয় কৃষক কৃষানীদের মুখে আনন্দের হাঁসি ফুটেছে।
জানা গেছে পূর্বে জমিটিগুলোতে ৪০ বছর সস্থানীয়রা ইরি,আমন,বোরো ধান চাষ করেছেন।কিন্তু সস্থানীয় কিছু কুচক্রীমহল দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে জমিটি অনাবাদি করে রাখছে। তারা ঐ জমিতে মাছের ঘের করবে বলে চুক্তি করে। তবে বর্তমান ভুমি রেকর্ড বিআরএস’ খতিয়ানে জমিগুলা খাস হয়ে রয়েছে। পূর্বে এস এ, আরএস খতিয়ানে রেকর্ড সত্রে অংশীদারীরা এই জমিটিতে ইরিধান চাষ করতে বাধা প্রদান করে আসছে। তাই মাননীয় প্রাধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ও লক্ষ দেশে কৃষি বিপ্লব ঘটাতে হবে। এবং এক ইঞ্চি জমি কোথায়ও অনাবাদি করে রাখা যাবে না। তাই সেই নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন অনাবাদি জমিগুলাতে স্থানীয় কৃষকদের দ্বারা চাষাবাদের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এসময় কৃষকদের চাষাবাদের জন্য সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেয়া হয় আরশিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইমামুল হাফিজ নাদিম,ইউপি চেয়ারম্যান আলম সরদার,ইউপি সদস্য সহ কৃষক কৃষানীরা।
কৃষক নুরউদ্দিন সরদার বলেন,দীর্ষ পাঁচ বছর পরে আমরা এই জমিতে ধান লাগাইতে পারবো। আজ আমাদের টিওনো স্যার ধান চাষ করার আদেশ দিয়া গেছে।আমরা অনেক খুশি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।এবং বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়া করি তাকে যেন আল্লাহ জান্নাত দান করেন।
কৃষানী সালমা আক্তার বলেন, আমরা মাছ চাই না, আমরা ভাত চাই।কারন ভাত থাকলে পিয়াজ, মরিচ দিয়াও খাইতে পারুম।ভাত না পেলে কি দিয়া খামু। আর চাইলের যে দাম আমরা কেমনে কিনুম।তাই এখানে পাঁচ বছর পরে সরকার আমাদের ধান চাষ করার সুযোগ দেওয়ায় আমরা অনেক খুঁশি।প্রাধানমন্ত্রীর জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করবো।
কৃষক মোক্তার চকিদার বলেন,আজকে টিওনো স্যার এসে আমাদের জমিতে ধান চাষ করতে বলেছেন। আমরা ৫বছর ধরে কিছু লাগাতে পারছিনা।ধান লাগাইয়া মুটামুটি সংসার চালাইয়া বাচতে পারমু।তাই টিওনো স্যাররকে ধন্যবাদ জানাই।
ইউপি চেয়ারম্যান আলম সরদার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা “এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে” সেই লক্ষ বাস্তবায়নের জন্য আজকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাদের ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে ২৩ একর খাস অনাবাদি জমিতে স্থানীয় কৃষকদের দিয়ে আবাদিকরন করার উদ্দোগ নিয়েছেন। আমরা সর্বসময় কৃষকদের পাশে থাকতে চাই।এবং এখানে কোন পক্ষ যাতে কৃষকদের চাষাবাদে বিগ্ন ঘটাতে না পারে সেদিকে আমরা লক্ষ রাখবো ইনশাল্লাহ।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আরশিনগর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা “এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে” সেই লক্ষ বাস্তবায়নে শ্রদ্ধেয় জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান স্যারের পরামর্শে সরকারি প্রায় ২৩ একর খাস জমিতে স্থানীয় কৃষক কৃষানীদের দ্বারা চাষাবাদের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সাথে আরশিনগর ইউনিয়ন পরিষদকে চাষাবাদের সার্বিক তত্ত্বাবধান দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন,এখানে দীর্ষ ৫ বছর যাবত কোন ফসল ফলানো হত না। তাই জমিটি অনাবাদি হয়ে গিয়েছে। এবং একটি পক্ষ কৃষকদের চাষাবাদ না করার জন্য হুমকি দিয়ে আসছিলো।তাই আজকে আমরা বেসরকারিভাবে এখানে পুনরায় জমিটিকে আবাদের আওতায় আনার উদ্দোগ নিয়েছি। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে এই প্রত্যয়কে সামনে রেখে আমরা এগিয়ে যাবো।

Spread the love

পাঠক আপনার মতামত দিন