অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ, স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে

নিউজ২৪লাইন:
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আমজাদিয়া একাডেমি স্কুলে অষ্টম শ্রেণি ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এসেছে ঐ স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০মে) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আমজাদিয়া একাডেমী স্কুলের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
জাজিরা উপজেলার পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হাজী জৈনুদ্দিন মাদবর কান্দি গ্রামের মৃত নুরু মিয়া ঘড়ামি দীর্ঘ দিন উক্ত বিদ্যালয়ের কেরানির দায়িত্ব পালন করেছেন কিন্তু তার মৃত্যুর পরে সেই চাকরি তার ছেলে মাসুদ ঘড়ামি (৩২) করে আসছিলেন , মাসুদ গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আমজাদিয়া একাডেমী স্কুলের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ধস্তা-ধস্তির এক পর্যায়ে ঐ শিক্ষার্থী শিক্ষক মাসুদকে ছিটকে ফেলে পালিয়ে আসে।
এরপরের দিন বান্ধবীদেরকে ঘটনাটি জানালে এরপর স্কুলের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিত হয়ে এর প্রতিবাদ জানায় এবং ৩১ শে মে সকল শিক্ষার্থীরা মিলে মানব্বন্ধন করে। মানব বন্ধনের এক পর্যায়ে পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্কুল কমিটির সভাপতি আলমগীর ঢালির নিটক পৌছান। তখন তিনি শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেন যে, তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন।
ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তড়িঘড়ি করে আমজাদিয়া একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জিয়া,স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর ঢালী এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
উক্ত ঘটনার খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহের জন্য স্কুলে যাওয়ার পরে দেখা যায় এক ভিন্ন চিত্র।স্কুলের প্রধান শিক্ষক, ইউপি চেয়ারম্যান ও স্কুল কমিটির সভাপতি আলমগীর ঢালীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এবং স্কুল শিক্ষক বৃন্দ সম্মিলিত হয়ে উক্ত বিষয়টির প্রতি আইনি ব্যবস্থা না নিয়ে স্থানীয় ভাবে মিমাংশা করার জন্য স্কুল প্রধানের কক্ষে বৈঠকে বসেছে। তাদের বক্তব্য নেয়ার কথা বললে তারা বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
ঐ ছাত্রী বলেন, গত ৩০ মে (মঙ্গলবার) আমি প্রাইভেট পড়ার জন্য স্কুলে গেলে মাসুদ স্যার আমাকে অফিস কক্ষে ডাকেন। স্যার ডাকছেন তাই কোনো কিছু না ভেবে সেখানে যাই। কিন্তু অফিস কক্ষে যাওয়ার পর তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরেন এবং কোলে তুলে নেন, অনেক চেষ্টার পরে আমি তার থেকে ছুটে দৌড়ে বাইরে চলে আসি এবং ঘটনাটি আমার বান্ধবীকে জানাই।
ছাত্রীর বাবা শফিক মুন্সি বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান ও স্কুল কতৃপক্ষের সদস্যরা মামলা মোকাদ্দমা করতে না করেছেন। তারা আমাকে বলেছেন যে তারা ঘটনাটি স্থানীয় ভাবে মিমাংশা করবেন।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষক মাসুদ ঘড়ামি যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে আমি তার উপযুক্ত শাস্তি চাই। সে যেন ভবিষ্যতে আর এ ধরনের কাজ না করতে পারে।
স্থানীয় লোকজন জানান উক্ত ঘটনাটি খুবই জঘন্য তম একটি কাজ আমরা এলাকাবাসী সকলেই এর সুষ্ঠ বিচার চাই,
এ বিষয়ে জানার জন্য শিক্ষক মাসুদ ঘড়ামির বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তাকে একাধিক বার ফোন দিলেও সে বার বার ফোন কেটে দেন পরবর্তীতে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জাজিরা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজ উদ্দৌলা বলেন ,বিষয়টি আমি ইতি মধ্যেই শুনেছি ।তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পদ্মা দক্ষিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উক্ত ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানতেন না। আজকে জানার পরে আসামীকে ধরার জন্য অভিযান চালাচ্ছেন।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুল হাসান সোহেল জানান এই বিষয়টি এখনো আমাকে জানানো হয়নি, তবে আমি তদন্ত করে এর যথাযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবো
পাঠক আপনার মতামত দিন