মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করা সম্ভব নয়- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিউজ24লাইন ডেস্ক;

আদালতের রায়ের কারণে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায় আছে। রায়ে বলা আছে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সংরক্ষিত থাকবে। তাহলে কোটার বিষয়ে আমরা কীভাবে আদালতের ওই রায় লঙ্ঘন করব। সেটা তো আমরা করতে পারছি না। এটা করলে তো আমরা আদালত অবমাননায় পড়ে যাব। এটা কেউ করতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কোটা আন্দোলনকারীদের মধ্যে যারা ভিসির বাড়িতে ভাংচুর ও আক্রমণ করেছে তাদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে। উচ্ছৃঙ্খলা কখনও বরদাশত করা যায় না।

বৃহস্পতিবার দশম সংসদের একুশতম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

কোটা সংস্কারের আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে হামলা চালানোর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাংচুরকারীরা ভিসির বাড়ির ক্যামেরার চিপস নিয়ে গেলেও আশপাশে থাকা ক্যামেরা দেখে তাদের একজন একজন করে খুঁজে বের করা হচ্ছে। যারা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে, আক্রমণ করেছে, তাদের ছাড় নেই। তাদের গ্রেফতার ও তদন্ত করা হচ্ছে। অনেকে স্বীকারও করছে। যত আন্দোলনই হোক না কেন তাদের ছাড়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, যেখানে কোটা পূরণ হবে না, খালি থাকবে, তা মেধা থেকে নিয়োগ হবে। এটা করে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক বছর থেকেই এই প্রক্রিয়া চালু রয়েছে।

কোটা আন্দোলনের দাবি সুনির্দিষ্ট নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা যে ঠিক কী চায় বারবার জিজ্ঞেস করা হয়েছে; কিন্তু তা সঠিকভাবে বলতে পারে না। আন্দোলন তারা করছে খুব ভালো কথা। বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, ছেলেপুলে আন্দোলন করতেই পারে। কিন্তু ভিসির বাড়িতে আক্রমণ করে সেখানে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া, গাড়ি আগুন দিয়ে পোড়ানো, বাড়ি ভাংচুর করা, বেডরুম পর্যন্ত পৌঁছে ভাংচুর এবং লুটপাট করা, স্টিলের আলমারি ভেঙে অলঙ্কার, টাকা-পয়সা সবকিছু লুটপাট করেছে। ভিসির পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে লুকিয়ে থেকে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। এটা কি কোনো শিক্ষার্থীর কাজ? এটা কি কোনো শিক্ষার্থী করতে পারে?

সংসদ নেতা আরও বলেন, কথায় কথায় বলে ক্লাস করবে না। ক্লাসে তালা দেয়? ক্ষতিগ্রস্ত কারা হবে? অনেক কষ্টে সেশনজট দূর করা হয়েছে। তাদের কারণে এখন আবার সেই সেশনজট।

ছাত্রছাত্রীরা রাষ্ট্রের ভর্তুকির টাকায় লেখাপড়া করে- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ১৫ টাকা সিট ভাড়া আর ৩৮ টাকা খাবার- এমনটি পৃথিবীর কোথায় আছে? আজ নতুন নতুন হল বানানো হয়েছে। ১৫ টাকা সিট ভাড়া আর ৩৮ টাকায় খাবার খেয়ে তারা লাফালাফি করে। তাহলে সিট ভাড়া আর খাবারে বাজারদর যা রয়েছে, তাদের তা দিতে হবে। সেটা তারা দিক।

তিনি বলেন, তারা হলের গেট ভেঙে ফেলে দেবে। মধ্যরাতে হল থেকে ছাত্রীরা বেরিয়ে যাবে। আমার টেনশনে আমি বাঁচি না। আমি পুলিশকে, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বলেছি- এই মেয়েদের যেন কোনো ক্ষতি না হয়। ভোর ৬টা পর্যন্ত জেগে থেকে যার যার হলে পৌঁছে যাওয়ার পর আমি ঘুমাতে গিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বলেছি কোটা সংস্কার আমরা করব। আমি তো বলেছি কোটা পুরোপুরি বাদ দিতে। আমরা তো মন্ত্রিপরিষদ সচিব দিয়ে একটি কমিটিও করে দিয়েছি। তারা সেটা দেখছে। তাহলে এদের অসুবিধাটা কোথায়?

আগামী নির্বাচনে বিরোধী দলসহ যারা আছে সবাই অংশ নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে এ ব্যাপারে জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জনগণ ২০০৮ নৌকা মার্কায় দিয়েছিল; আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছিল।

Spread the love

পাঠক আপনার মতামত দিন