শীতে খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছি আব্দুল মতিন রাড়ী

আমান আহমেদ সজিব ll
ভেদরগঞ্জ শরীয়তপুর প্রতিনিধি ll
শীত যত বাড়ছে খেজুরের রসের চাহিদাও ততো বাড়ছে। গ্রামীণ জনপদের ঘরে ঘরে এই রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের পিঠা ও পায়েস। তাই তীব্র শীত উপেক্ষা করে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় গাছি আব্দুল মতিন রাড়ী।

সুস্বাদু এই রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়। ফলে কাজের চাপে দম নেয়ার সময় পান না তারা। খেজুরের ও রস বিক্রি করেও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন গাছিরা।

গাছিরা প্রতিদিন বিকেলে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি (মাটির পাত্র) প্লাস্টিকের বোতল বেঁধে রাখে রসের জন্য। পরদিন সকালে রস সংগ্রহ করা হয়।

আবহমানকাল থেকে গ্রামবাংলার আদি ঐতিহ্যের সঙ্গে খেজুরের রস ও শীতকাল একাকার হয়ে আসছে। শীতের মূল উৎসবই হলো শীতের পিঠা। যার মূল উপাদান খেজুরের রস, তালের রস, ঝোলাগুড় ও পাটালীগুড়।

শীতের সকালে উঠানের রোদে বসে যেমন পিঠা খেতে শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ সকলেরই ভালো লাগে। তেমনই শীতের সকালে গাছ থেকে পেড়ে আনা খেজুরের কাচা রস খেতেও অনেক মজা লাগে।

আবার গ্রামের ঘরে ঘরে পিঠা ও পায়েস তৈরির ধুম পড়ে যায়। শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সবাই মেতে উঠে পিঠা খাওয়ার উৎসবে। তাই প্রতিবছর খেজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতি শুরু হয় শীতের শুরুতেই। এ বছরও দেশের বিভিন্ন গ্রামে খেজুরগাছ কাটার কাজ শেষ, এখন শুধু রস জ্বাল দেওয়া ও গুড় তৈরির কার্যক্রম।

গাছের মাথায় অনেকখানি বাকল তুলে সেখানে হাঁড়ি বেঁধে এ রস সংগ্রহ করা হয়। অনেক গ্রামে ক্রেতারা আগাম রসের জন্য গাছিদের অগ্রিম টাকা দিয়ে থাকেন। সেই টাকায় অনেকে রস সংগ্রহের বিভিন্ন উপকরণ কিনে রস সংগ্রহ শুরু করেন।

শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানাধীন এলাকার গাছি আব্দুল মতিন রাড়ী জানান, অন্য মৌসুমে তিনি বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। কিন্তু শীত এলেই খেজুরগাছ কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। এ অঞ্চলে খেজুর রসের পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় ভালো আয় করেন তিনি। এছাড়াও শীতের সময় ধনী-গরীব সকলের কাছে খেজুরের গুড়েরও বেশ কদর আছে।
তিনি আরো জানান তার নিজের খেজুর গাছের বাগান থেকে রস্ সংগ্রহ করে জেলা সহ অন্য জেলায় ও পাঠানো হয়।
পাশাপাশি এলাকার অন্য লোকদের গাছ থেকেও রস
সংগ্রহ করতে হয়। তাই গাছের মালিককে রসের একটা অংশ দিতে হয় তার। তারপরেও প্রতিবছর তিনি রস ও গুড় বিক্রি করে লাভবান হয়ে থাকেন। তবে বেশি লাভবান হন কাচা রস বিক্রয় করে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাজায় প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে খেজুরগাছের ভূমিকা অপরিসীম। এ উপজেলায় বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে এখনো শত শত খেজুর গাছ আছে। খেজুরগাছ ও রসের সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে ক্রমশ তা হ্রাস পাচ্ছে। তবে বাণিজ্যিক ভিত্তিক কোনও গাছ আমাদের উপজেলায় নাই।

শরীয়তপুর জেলার যে কোন জায়গায় খাটি রস পেতে
যোগাযোগঃ +880 1713-591197

Spread the love

পাঠক আপনার মতামত দিন