শরীয়তপুর জাজিরায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ

 

নুরুজ্জামান শেখ।।

শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের রুপবাবুর হাট বাজার সংলগ্ন এর পশ্চিম পাশে মোসাম্মৎ সেলিনা বেগম এর ক্রয় কৃত ৩৪ শতাংশ জমির ভিতর সরকারি রাস্তা সংলগ্ন আদালতের ১৪৪/১৪৫ ধারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মোয়াজ্জেম শিকদারের ছেলে সালাম শিকদার জাজিরা সহকারী ভূমি কমিশনার এর গাড়ী চালক রাতের আধারে জোরপূর্বক দোকানঘর নির্মাণ করেন।সরেজমিন ঘুরে এবং কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে পূর্ব নাওডোবার আব্দুল কাদির মোল্লার মেয়ে মোসাম্মৎ সেলিনা বেগম (নাছিমা) গত ২৭নভেম্বর ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব নাওডোবার ফেদু শিকদারের কান্দির মোয়াজ্জেম সিকদার ও বাসের শিকদার এর নিকট হইতে সাফ কবলা দলিল মূলে ৩৪ শতাংশ জমি ক্রয় করে। নাসিমা বেগম ৯৯ নং পূর্ব নাওডোবার দিয়ারা মৌজায় ১০ ও ৯ নং খতিয়ানে ৬৭৯৯ এবং ৬৭৯৮ নং দাগে সাফ কবলা দলিল মূলে ৩৪ শতাংশ নালিশী ভূমি ক্রয় করেন। যাহার চৌহদ্দি-পূর্বে সেকেন্দার, পশ্চিমে সেকেন্দার শিকদার, দক্ষিনে সরকারি রাস্তা-উত্তরে বিবাদী নিজ। এলাকাবাসী মঙ্গল শিকদার বলেন সেলিনা বেগম নিচু জমি ক্রয় করে মাটি দিয়ে ভরাট করে গাছ লাগিয়ে ২৫ বছর যাবৎ ভোগ দখল করে আসছে। সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে কয়েক বছর পূর্বে বাছের শিকদারের ছেলে সালাম শিকদার তার দাদী ফিরোজা বেগম এবং তার ফুফু রিজিয়া বেগমের নিকট হইতে ৯৯নং পূর্ব নাওডোবার দিয়ারা মৌজায় ১০ও ৯নং খতিয়ানে ৬৭৯৯ ও ৬৭৯৮ নং দাগের ৩৭ শতাংশ জমি ক্রয় করে। সেলিনা বেগম তার ভোগ দখলকৃত গাছ লাগানো বাগান করা জমিটি রাস্তার পাশে হওয়ায় বর্তমান বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় লোভের বশবর্তী হয়ে গাড়িচালক সালাম শিকদার সেলিনা বেগমের অনুপুস্থিতিতে ওই জমি মেপে সীমানা নির্ধারণ করে খুটি গাড়ে। বর্তমানে ঢাকায় বসবাসরত ওই জমির মালিক সেলিনা বেগম এ ঘটনায় বিষয়টি জানতে পেরে বাড়ি চলে আসে। সেলিনা বেগম সালাম শিকদারের অসৎ উদ্দেশ্যের কথা ভেবে ওই জমিতে যাতে কোনো স্থাপনা নির্মাণ না করতে পারে, তিনি নিরুপায় হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়ে গত ৯ মার্চ ২০২০ খ্রিস্টাব্দে ১৪৫ ধারা ফৌজদারী কার্যবিধি একটি মামলা দায়ের করেন।সালাম শিকদার আদালতের ১৪৫ ধারা অমান্য করে রাতের আধারে চুপিসারে চুরি করে স্থাপনা নির্মাণ করতে গেলে সেলিনা বেগম টের পেয়ে সেলিনা বেগম ও ভাই, ভাবি, ভাতিজা বাধা দিতে গেলে সালাম সিকদার ও তার দলবল শ্লীলতাহানি সহ মারপিট ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পূর্বের ন্যায় সেলিনা বেগম নিরুপায় হয়ে ১৪ই অক্টোবর ২০২০ শরীয়তপুর বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জাজিরা সি .আর ১৪৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করে।কিন্তু সালাম সিকদার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আইন অমান্য করে আদালতের ১৪৪ ধারা কে অমান্য করে রাতের আধারে জোরপূর্বক দোকানঘর স্থাপনা নির্মাণ করে। বর্তমানে সি.আর ১৪৪ ধারা মামলাটি চলমান আছে। বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত উক্ত দরখাস্তের ভিত্তিতে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, নাওডুবা ইউনিয়ন ভূমি অফিস কে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। উক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা দখল বিষয়ে তদন্ত প্রাপ্ত হইয়া সরোজমিনে উপস্থিত হইয়া সাক্ষীদের উপস্থিতিতে তদন্তপূর্বক সেলিনা বেগম এর দখলে আছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

সেলিনা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন আজ থেকে প্রায় ২৬ বছর আগে মোয়াজ্জেম সিকদার এবং তার ভাই বাছের শিকদার এদের কাছ থেকে সাফ কবলা দলিল মূলে ৩৪ শতাংশ জমি ক্রয় করি।যখন জমিটি ক্রয় করি তখন জমিটি ছিল নিচু, এই নিচু জমিতে মাটি ভরাট করে ২২থেকে ২৩ বছর ধরে গাছের বাগান করে ভোগ দখল করে আসছি। কিন্তু পরবর্তীতে বাসের শিকদারের ছেলে সালাম শিকদার তার দাদী ও ফুফুর ওয়ারিশ সম্পত্তি ক্রয় করে আমার ভোগ দখলকৃত জমির উপর ঘর উত্তোলনের চেষ্টা করে। অথচ আমার জমিনের উত্তরে অনেক জমিন রয়েছে। আমার জমির উপর ঘর উত্তোলনের সময় বাধা দিতে গেলে আমার ভাতিজা ও ভাবীর উপর হামলা করে, তখন আমি নিরুপায় হয়ে জাজিরা থানায় গিয়ে ওসি স্যার কে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন আদালতে১৪৪ ধারায় মামলা দায়ের করতে।তখন আমি আদালতে ১৪৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করি। এই সালাম শিকদার ১৪৪/১৪৫ ধারা অমান্য করে জোরপূর্বক ঘর উত্তোলন করে। আমি এখন নিরুপায় আমি যাতে আপনাদের মাধ্যমে সঠিক বিচার পেতে পারি তাহার সুব্যবস্থা করে দিবেন। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
সালাম সিকদারের স্ত্রী বকুল বেগম গণমাধ্যমকে বলেন আমি আমার নামের সম্পত্তির উপর ঘর তুলছি। সেলিনা বেগম আমাকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমি আমার দাদী শাশুড়ি ও ফুফু শাশুড়ির কাছ থেকে তাদের অংশ ৩৭ শতাংশ জমি ক্রয় করি। আমি সেই জমির উপর ঘর তুলছি ।আমি আমার শ্বশুর বাসের শিকদার ও চাচা শশুর মোয়াজ্জেম শিকদারের জমি খাইনা, জমি চাইও না। এই জমি নিয়ে আদালতে বন্টন মামলা চলতেছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমি যদি আইনে পাই তাহলে খাবো, না পাইলে খাইবো না।
জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজহারুল ইসলাম সরেজমিনে গণমাধ্যমকে বলেন যিনি এই জায়গাটাকে নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে সালাম ড্রাইভার এর ফাদার ও তার চাচা বাসের সিকদারও মোয়াজ্জেম সিকদার ২৬ বছর আগে সেলিনা বেগম এর কাছে এই জমিটি বিক্রয় করেন। তখন জমিটি ছিল লো ল্যান্ড। এই জমিতে মাটি ভরাট করে গাছের বাগান করেন। আপনারা আমার পাশে গাছ গুলো দেখতে পাচ্ছেন। বাসের শিকদারের আপন সন্তান ও তার ঔরসজাত সন্তান সালাম শিকদার তারা আপন দাদি ও তার ফুফুর কাছ থেকে একটি অংশ কিনে, পিছনে বিশাল সম্পত্তি রেখে এই সম্পত্তির দাবিদার হয়ে দাবি করতেছে। প্রকৃত ঘটনা হইলো এই যে এই গাছগুলো লাগানো কিনা সরোজমিনে এসে জনগণকে জিজ্ঞাসাবাদ করা। এ ব্যাপারে আদালতে মামলা আছে ,আমার কাছে অভিযোগ আছে বিষয়টি তদন্তা দিন। তদন্ত করে আইনগত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Spread the love

পাঠক আপনার মতামত দিন