নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পদ্মায় মা ইলিশ ধরার মহোৎসব!

নিউজ২৪লাইন:, মাওয়া (মুন্সীগঞ্জ)- পদ্মা নদীতে মাছ ধরার দৃশ্য বাস্তবে অনেকেরই দেখাটা অসম্ভব হলেও এ দৃশ্যটি বর্তমান এ মৌসুমে চোখে পড়ার মতো।

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে সরকারিভাবে মা ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও মুন্সীগঞ্জের লৌহজং পদ্মা-নদীর ডহড়ি, কলমা, হাজরা, শুরেশ্বর, বটেরশ্বরসহ বেশহেকটি অংশে ইলিশ নিধন ও বিক্রির ধুম পড়েছে।

সৌখিন ও মৌসুমী চোরা শিকারীদের অপতৎপরতায় স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ সোচ্চার হলেও কোনভাবেই মৎস্য শিকার রোধ করা যাচ্ছে না।

সৌখিন ও মৌসুমী চোরা শিকারীদের সহযোগিতা করছেন স্থানীয় মাওয়া নৌ পুলিশ ফাড়ির ঘনিষ্ঠ একজন পুলিশের সোর্স, এমন অভিযোগ উঠেছে। এই সুযোগে মৎস্য শিকারী ও ক্রেতা-বিক্রেতারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা খেই হারিয়ে ফেলছেন।

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, গত ৪ অক্টোবর থেকে অভিযান শুরুর পর হতে মুন্সীগঞ্জ অঞ্চলে আজ পর্যন্ত ১২টি অভিযানে ১ লক্ষ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, প্রায় ১০ মন ইলিশ, কয়েকটি ইঞ্জিন চালিত ডিঙ্গী নৌকা এবং ৭৩ জনকে আটক করা হয়েছে। একই সাথে ১৪টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৩৫ জন জেলের মধ্যে ১৬ জনকে এক মাস ও ২ জন কে ৩ মাসের জেল এবং বয়স বিবেচনায় প্রায় ২০ জনকে অভিভাবকের মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এ নিয়েও বিভিন্ন মহলে নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। গত এক সপ্তাহের অভিযানে জব্দকৃত জাল-নৌকা ধ্বংস করাসহ জব্দকৃত ইলিশ স্থানীয় দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

এসব বিষয়ে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল আউয়াল জানান, মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সর্ম্পকে জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে অভিযান ব্যহত হচ্ছে কিছুটা, তবে আমরা প্রতিদিন ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারিসহ মুন্সীগঞ্জের লৌহজং পদ্মা-নদীর বেশ কয়েকটি অংশে অভিযান পরিচালনা করছি।

অল্প সংখ্যক আনসার, ব্যাটালিয়ন আনসার,ও পুলিশ নিয়ে গত দু’দিন আগে নদীতে অভিযান পরিচালনাকালে লৌহজং চরাঞ্চলের চোরা শিকারীরা দলবদ্ধ হয়ে লাঠি-সোঠা হাতে আমার এ্যাসিল্যান্ডের উপর চড়াও হয়েছে।

তিনি জানান, এদের রুখতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক র‌্যাব ও পুলিশ নিয়ে অচিরেই অভিযান পরিচালনা করতে বিশেষ বৈঠকে জরুরী সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তবে এর মধ্যেও নদীতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

লৌহজং উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা-আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, প্রজনন মৌসুমে নদীতে জাল-নৌকা বন্ধ রাখতে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলার প্রায় পাচঁশ ২৩ জন প্রকৃত জেলেদের মাঝে ২০ কেজি হারে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও মা ইলিশ শিকার রোধে নদীতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে।

Spread the love