দুস্থ ও এতিমদের সেবায় শরীয়তপুরের নুরিয়া এতিমখানা

নিউজ২৪লাইন:

মঞ্জুরুল ইসলাম রনি শরীয়তপুর

শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের কাশিপুর গ্রামের দুস্থ অসহায় ও এতিমদের সেবার জন্য নুরিয়া এতিমখানা টি ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই এতিমখানা ১৯৮২ সালের জানুয়ারি মাসে নিবন্ধিত হয়। দুস্ত ও অসহায় এতিমদের তিন বেলা খাবার এবং পড়ালেখার সুব্যবস্থা জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক ক্যাপিটেশন গ্রান্ট প্রাপ্ত হয় নুরিয়া এতিমখানা।

এতিমখানায় গিয়ে দেখা গিয়েছে ৩০ জন এতিম এবং ৪৫জন দুস্থ অসহায় শিশু রয়েছে। নুরিয়া এতিমখানার দুস্ত, অসহায় এতিম শিশুরা সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের হুজুর ও চেয়ারম্যান সালাম চাচা অনেক ভালো। আমাদেরকে তারা অনেক আদর যত্ন করে। আমাদের কাছে, আমাদের বাবা মা না থাকা সত্ত্বেও, তাদের ভালবাসা আর আদরে আমরা সকল দুঃখ কষ্ট ভুলে যাই। আমাগো পড়ালেখা করায় আমাদের হুজুর, আমরা ভালো জায়গায় থাকি, ভালো খাবার খাই, তারা আমাদের সবসময় ভালো ভালো জামা কাপড় দেয়, আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করি, যারা আমাদের লালন-পালন করে এতো সেবা যত্ন করছেন, তাদের কে যেনো আল্লাহ তায়ালা উত্তম পুরস্কার প্রদান করেন।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তিরা সাংবাদিকদের জানান, নরিয়া এতিমখানা ও মাদ্রাসার কোন বদনাম আমরা এলাকাবাসি কোনদিন শুনি নাই। আমাদের মাঝে অনেক গরিব মানুষ আছে যারা রিসকা ও মানুষের বাড়িতে কাজ করে খায় আমাদের সন্তানকে ভালো জায়গায় লেখাপড়া করার মতোন টাকাপয়সা আমাদের কাছে নাই। আমরা গরীব অসহায় মানুষ আমাদের অনেকের ছেলে মেয়েরা এই মাদ্রাসায় ফ্রী লেখাপড়া করে এতিমখানায় থাকা খাওয়ার জন্য আমরা কোন টাকা পয়সা দেইনা। এতিমখানার সভাপতি, চেয়ারম্যান সালাম হাওলাদার এবং তার ভাই অনেক টাকা পয়সা অসহায় এতিমদের জন্য তারা খরচ করেন। এবং সব সময় দুস্থ ও এতিম ছাত্রদের খোঁজ খবর রাখেন। চেয়ারম্যান সাহেব এতিমখানা ও মাদ্রাসার দায়িত্ব নিয়েছে বলে এখনো ভালোভাবে চলতেছে।

আবাসিক নুরিয়া এতিমখানার সভাপতি সালাম হাওলাদার বলেন, নুরিয়া এতিমখানা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই অসহায় দুস্ত এতিম ছাত্রদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। সমাজসেবা থেকে আমরা ৬৩ জনের তিন বেলা খাবারের অনুদান পাই। কিন্তু আমরা খাবার দিচ্ছি ৭৫/৮০ জন কে এই টাকায় আমাদের হয় না। আমি এবং আমার ভাই সহ সমাজের বিত্তশালী লোকদের কাছ থেকে অর্থ অনুদান সংগ্রহ করে এই এতিমখানাটি চালিয়ে আসছি। অথচ উল্টো আমাদের বদনাম হয়। এই এতিমখানা থেকে অনেক অসহায় এতিম শিশু বড় হয়ে বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করে জীবনকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে নিয়েছে।

চিতলিয়া নুরিয়া এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এই এতিমখানায় প্রতিদিন ৭৫থেকে ৮০ জনের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। আমরা অনেক কষ্ট করে এই এতিমখানাটি চালাচ্ছি। আমরা বলি মাঝে মাঝে আপনারা এখানে আসবেন খোঁজ খবর নিবেন এতে আমাদের ভালো হয়। সমাজসেবা কর্মকর্তাগন মাঝেমধ্যে এখানে এসে তদারকি করেন, আসলে আমরা এই এতিমখানার অসহায়-দুস্থ এতিম ছাত্রদের কি সেবা দেই।

সমাজসেবা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, আমি নুরিয়া এতিমখানায় হঠাৎ করে পরিদর্শনে গিয়ে ছিলাম।তখন দেখতে পাই ৮০জনের বেশি হবে ওই এতিমখানায় দুস্থ অসহায় এতিম ছাত্র একসাথে খাবার খাচ্ছে। আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা এই সমাজের অবহেলিত দুস্থ অসহায় এতিম শিশুদের মানুষ করার জন্য আর্থিক অনুদান দিয়ে সাহায্য করে আসছে এটা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমি আরও বলতে চাই এই সমাজের অবহেলিত দুস্থ অসহায় এতিমদের খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান চিকিৎসা সুনিশ্চিত করে মানুষের মত মানুষ করে, গড়ে তোলার জন্য সমাজের বিত্তশালী লোকদের এগিয়ে আসতে হবে। এই দায় নেত্রীর একার নয় আপনাদেরও।

Spread the love

পাঠক আপনার মতামত দিন