শরীয়তপুরে জন্মদিন অনুষ্ঠানে নিয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ; ভিডিও ভাইরাল, অভিযুক্তরা পলাতক
নিউজ২৪লাইন:
মঞ্জুরুল ইসলাম রনি শরীয়তপুর :
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের এক স্কুলছাত্রী জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের পরে সেই ভিডিও আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালের ঘটনা ঘটেছে। এতে লোকলজ্জায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে ওই কিশোরীর। উক্ত ঘটনায় ভেদরগঞ্জ থানায় মামলা হলেও আসামীপক্ষের চাপে ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে ভুক্তভুগী পরিবার।
মামলার আসামীরা হলেন, ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের সাজনপুর দাসপাড়া গ্রামের অশিম দাসের ছেলে অর্পণ দাস (১৯), একই এলাকার কোমল দাসের ছেলে দুর্জয় দাস(১৯), দক্ষিণ মহিষার গ্রামের মোক্তার সরদারের ছেলে মুবদি সরদার(১৮)। তারা সকলেই সাজনপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ১ ও ৩নং আসামীরা ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
পুলিশ ও ভুক্তভুগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকমাস পূর্বে জন্মদিনের অনুষ্ঠান কথা বলে সাজনপুর বাজার থেকে ওই স্কুলছাত্রীকে ১নং আসামী অর্পণ দাসের বাড়িতে নিয়ে যায় দূর্জয় দাস ও মুবদি সরদার। বাড়িতে গিয়ে জন্মদিন অনুষ্ঠানের ফাঁকে ওই বান্ধবী স্কুলছাত্রীকে একটি রুমে নিয়ে যায় অভিযুক্ত সহপাঠি তিন বন্ধু। একপর্যায়ে দুর্জয় ও মুবদির সহযোগিতায় ওই মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে অর্পণ দাস। তাদের ওইসব কর্মকান্ড আবার মুঠোফোনে ধারন করে সহযোগীতাকারী দুই বন্ধু। ধর্ষণের পর থেকেই ওই স্কুলছাত্রীকে আবারও কুপস্তাব দিতে থাকে দুর্জয় ও মুবদি। তবে ওই কিশোরীকে তাদের প্রস্তাবে কোন ভাবে রাজি করতে না পেরে সেইদিনের ধারনকৃত ধর্ষণের ভিডিও ক্লিপটি ইন্টানেটে ভাইরাল করে দেয় অভিযুক্তরা। ভিডিও ভাইরালের পর থেকে সামাজিক চাপে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে ওই কিশোরীর।
এরপর গত ৫ জুন ভেদরগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা দায়ের করে ওই কিশোরী। তবে মামলা হলেও এখনো আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় উল্ট মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ওই কিশোরীর পরিবারের।
শনিবার (১৮জুন) ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর বাড়িতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মামলার আসামীরা তার সাথে একই স্কুলে পড়ালেখা করে। সহপাঠি হওয়ায় জন্মদিনের অনুষ্ঠান যেতে রাজি হই। কিন্তু ওরা আমাকে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ও সেই ভিডিও ধারন করেছে। পরবর্তীতে আমাকে ওই ভিডিও দেখিয়ে ব্যাবহার করার চেষ্টা করছে। আমি রাজি না হওয়ায় ওরা ওই ধারনকৃত ক্লিপটি ভাইরাল করে দিয়েছে। ওরা আমার জীবনটাকে নষ্ট করে দিছে। ওদের আমি বিচার চাই। আসামীরা অনেক প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্ন চাপের মধ্যে আছি। সামনে আমার এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারবো কি না জানিনা।
মামলার তদন্তকারী অফিসার ভেদরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিব সূত্রধর বলেন, ধর্ষণ ও ওই ঘটনা ভাইরাল ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে ও আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পাঠক আপনার মতামত দিন