শরীয়তপুরে মৃত ব্যক্তির নামে চাঁদাবাজি মামলা

নিউজ২৪লাইন:

ভেদরগঞ্জ ||
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরভাগা ইউনিয়নে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে অসহায় কৃষকদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে মিলন বকাউল নামে এক চিহ্নিত ভূমি দস্যুর বিরুদ্ধে। মিলন বকাউল একই ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত ইদ্রিস আলী বকাউলের ছেল। গত ২৭ নভেম্বর দায়েরকৃত চাঁদাবাজি মামলায় ভুক্তভোগী ছয় কৃষকের বিরুদ্ধে সখিপুর থানায় মামলা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ফলে অসহায়ের মত বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ঐসব কৃষকরা। এজারের আসামীদের মধ্যে ৭নং আসামী মৃত হাকিম হাওলাদারের ছেলে মুজাফফর হাওলাদার ৬ বছর আগে মারা গেছেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে জানাগেছে, ৪৫ বছর আগে ভেদরগঞ্জ উপজেলাধীন চরভাগা ইউনিয়নের খুনিকান্দি এলাকার কৃষক মোতালেব হাওলাদার, আজিজল মাল, মুজাফফর হাওলাদার, হরমুজ মাল ও কাদির মালের কাছে চরভাগা মৌজার আরএস ৪ একর জমি বিক্রি করে মিলন বকাউলের বাবা ইদ্রিস বকাউল। জমিগুলোতে এসব কৃষকরা নিজেদের মত করে ফসল বুনে আসছিলো। কিন্তু দুই মাস ধরে মিলন বকাউল ও একটি ভূমি দস্যু চক্র ঐসব জমি নিজেদের নামে বন্দোবস্ত এনেছে বলে দাবি করে। এক সময় ফসল ভর্তি জমি জোরপূর্ব দখলের চেষ্ট করলে ভূমিদস্যু চক্রটির সাথে কৃষকদের ব্যাপক দ্বন্ধ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের সম্মীলিত বিরোধীতার মুখে দখল চেষ্টায় ব্যর্থ হয় চক্রটি। পরে গত ২৭ নভেম্বর তারিখ ঐসব সহায় কৃষকদের হয়রানির উদ্দেশ্যে শরীয়তপুর আদালতে একটি মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলার আবেদন করে মিলন বকাউল। সে মামলায় ঐসব কৃষকদের বিরুদ্ধে সরাসরি এফআইআরের নির্দেশ দেয় আদালত।

ভুক্তভোগী নুরু মাল বলেন, দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে ভোগদখল করা জমি হঠাৎ করেই মিলন ও তার চক্রের লোকজন জোরপূর্বক দখল করতে চাইছে। এখন দখল করতে না পারায় মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। আমরা অসহায় মানুষ।

মামলার আসামী কাদির মাল বলেন, আমাদের জমিতে রাতের আধাঁরে ঘরের বেড়া ও ভাঙ্গাচুরা টিন ফেলে রেখে তারা বলে, আমরা নাকি তাদের ঘর ভেঙ্গে ফেলেছি। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিবে।

মোতালেব হাওলাদার বলেন, আমার ভাই মুজাফফর হাওলাদার ৬ বছর আগে মারা গেছে। তার বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজি/লুটপাটের মামলা করেছে মিলন। মৃত মানুষের বিরুদ্ধে কিভাবে মামলা হয়! আমরা এ হয়রানি থেকে বাঁচতে চাই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বোরহান বেপারী, আজহার মোল্যা, মোহম্মদ আলী বেপারী বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্নভাবে আমাদের এলাকার লোকজনের জমি দখলের চেষ্টা করে আসছিলো। কিন্তু স্থানীয়দের প্রতিরোধের কারনে পারেনি। এখন তাদের হয়রানির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।

ভূমি দস্যু মিলন বকাউল বলেন, আমার জানা মতে, তিনি বেঁচে আছেন। কোন মৃত ব্যক্তির নামে মামলা করি নাই। তারা আমার জমিতে দখল নিতে দেয় না।

সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশের একটি মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

Spread the love

পাঠক আপনার মতামত দিন