ডামুড্যায় শেষ হলো নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ

শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় শেষ হলো আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের অঙ্গ সংগঠন আমরা রমণীর ‘Door to Door Mobile Entrepreneurs’ প্রকল্পের নারী উদ্যোক্তাদের তিনদিনব্যাপী প্রশিক্ষণ। গত ৭ থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত শরীয়তপুর-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব নাহিম রাজ্জাকের শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার বাসভবনে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্রয় ও বাজারজাতকরণ দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রকল্পের নির্বাচিত ২০ জন নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।

 

প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন সালমা খানম লাকী, যিনি ২০১৫ থেকে এখন পর্যন্ত ডোকোমেন্টেশন, মনিটরিং ও কমিউনিকেশন অফিসার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন ‘ফিউচার সলিউশন ফর বিজনেস লিমিটেড’ এর ‘আমার দেশ আমার গ্রাম’ এর সাথে। এখানে তিনি ক্রিশ্চিয়ান এইডের একটি প্রকল্পে প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবেও কাজ করেছেন। তিনি ২০০০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত UNDP তে বিভিন্ন সেকশনে কাজ করেছেন- হিউম্যান রিসোর্স, ট্রেনিং ও এ্যাডমিনিন্ট্রেশন। UNDP থেকে প্রশিক্ষক হিসেবে ৬/৭টি জেলায় প্রশিক্ষণ নেওয়ার পাশাপাশি তিনি তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের অধীনেও ৬৪ জেলায় ই-কমার্সের উপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন এবং ২০টি জেলায় প্রশিক্ষক হিসেবে প্রশিক্ষণও দিয়েছেন।

 

তিনদিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণে  নিজেদেরকে উপস্থাপন করার কৌশলসমূহ, নিজেদেরকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলা, প্রকল্প বাস্তবায়নের উপায়সমূহ, প্রকল্পের সেবা ও পণ্য বিক্রয় এবং বাজারজাতকরণ পদ্মতিসমূহ, ই-কমার্সের ধারণা প্রভূতি বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।

 

প্রসঙ্গত, ‘আমরা রমণী’ এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যার লক্ষ্য নারীদের অনুপ্রাণিত করা, সংগঠিত করা এবং ক্ষমতায়ন করা। গত ২০ নভেম্বর ২০২১ তারিখে আমরা  রমণীর চেয়ারপার্সন মালিয়া হোসেনের সভাপতিত্বে ও শরীয়তপুর-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব নাহিম রাজ্জাকের উপস্থিতিতে ‘Door to Door Mobile Entrepreneurs’ প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী সেই অনুষ্ঠানে নির্বাচিত ১০ জন নারী উদ্যোক্তাদের হাতে ‘উদ্যোক্তা ব্যাগ’ তুলে দিয়ে অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সমাপ্ত করে ‘আমরা রমণী’। উল্লেখ্য, নির্বাচিত এই নারী উদ্যোক্তারা ঘরে ঘরে গিয়ে অনলাইন চিকিৎসা প্রদান, মহিলাদের স্বাস্থ্যকর পণ্য বিক্রি ও টেলিযোগাযোগ সুবিধা প্রদানসহ ইত্যাদি নানা পরিসেবা প্রদান করে যাচ্ছেন।

ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে “স্কাস” এর পোল্ট্রিফার্ম উদ্বোধন

 

আনোয়ার সিকদার, কক্সবাজার;

সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) -এর উদ্যোগে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে কক্সবাজার থেকে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের জন্য স্কাস চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমার নিজস্ব তহবিল থেকে পরিচালিত জীবিকায়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে পোল্ট্রিফার্মের উদ্বোধন করা হয়েছে।

 

রবিবার (২জানুয়ারি) বিকেলে  নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) এর উদ্যোগে- এ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য রাখেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত।

এসময় তিনি বলেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের শুরু থেকেই সরকারের সহযোগী পার্টনার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। স্কাসের চলমান কার্যক্রম নিয়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং

কক্সবাজার থেকে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করার জন্য স্কাসকে ধন্যবাদ দেন। এর আগে প্রধান অতিথি শাহ রেজওয়ান হায়াত ফিতা ও কেক কেটে পোল্ট্রিফার্মের উদ্বোধন করেন।

পরে স্কাসের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা মুসল্লীদের জন্য পবিত্র কোরআন শরিফ, তাজবিহ, টুপি ও জায়নামাজ বিতরণ করেন তিনি।

পোল্ট্রিফার্ম উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন, ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩ এর সহকারি পরিচালক কমান্ডার আনোয়ারুল কবির, অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, লেফটেন্যান্ট আব্দুর রশিদ, ভাসানচরের ক্যাম্প ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম, সহকারি ক্যাম্প ইনচার্জ রায়হান আলী, স্কাসের চিফ অ্যাকাউন্টেন্ট মোহাম্মদ রাশেদুল রহমান শেখ ও স্কাসের হেড অব ইন্সপেক্টর  এস এম মামুন।

তাছাড়াও রোহিঙ্গাদের জন্য নব নির্মিত পোল্ট্রিফার্মে গত শনিবার দুপুরে সংস্থার পক্ষ থেকে খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

 

উল্লেখ্য ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের শুরু থেকেই স্কাস চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে।

নরসিংদীতে খোরশেদ মিয়ার জমিতে সরিষার বাম্পার ফলন

 

নিউজ২৪লাইন:
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের চরমরজাল এলাকার খোরশেদ মিয়ার জমিতে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে এখন হলুদের ঢেউ। চারদিকে তাকালে শুধু হলুদ রংয়ের সমারহ দেখা যায়। এ যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যের আধার। সরিষার এই ফলনে কৃষকের চোখেমুখে আনন্দের আভা ফুটে উঠেছে।
এদিকে বিভিন্ন চাষিসহ খোরশেদ মিয়া সংবাদ কর্মী রদ্রকে বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। ফসল ভালো হলেও এই সরিষার প্রতি দিন দিন মানুষের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। তবে বাপ দাদাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমরা এখনো খেঁটে সরিষা চাষ করি।
কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনুকূল আবহাওয়া আর যথাযথ পরিচর্চার কারণে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঘ মাসের শেষ দিকে ও ফাল্গুনের শুরুতে ক্ষেত থেকে সরিষা তোলা শুর হবে।
অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষার উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং গত কয়েক বছর ধরে বাজারে সরিষার ভালো দাম থাকায় চাষিরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৬টি উপজেলায় এবছর সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা পরিলক্ষিত হয়। আশা করা যাচ্ছে, এবার সরিষার উৎপাদনও বাড়বে।’
জেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘অনুকূল আবাহাওয়া ও নিবিড় পরিচর্যার কারণে এ জেলার কৃষকেরা সরিষার ভালো ফলন পেয়েছেন। জেলায় প্রতিবছরই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হচ্ছে। বাজারে সরিষার দাম বেশি থাকায় এবং ফল ভালো হওয়ায় কৃষকেরা সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়ছে।

বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দিলো ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক- বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকার তিনটি রাজ্যে সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে (বিএসএফ) অতিরিক্ত ক্ষমতা দিয়েছে ভারত।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন নিজেদের সীমানার ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত গ্রেফতার, তল্লাশি এবং জব্দ করার ক্ষমতা পাবেন বিএসএফ কর্মকর্তারা।

দিল্লি বলছে, সীমান্তে এলাকাজুড়ে ড্রোনে করে অস্ত্র টানার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বিএসএফ-এর আওতাধীন এলাকা বাড়ানো হয়েছে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লির এই সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিকভাবে রাজ্যগুলোর স্বায়ত্তশাসন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

নতুন এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে ভারতের এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “রাজনৈতিকভাবে খুবই স্পর্শকাতর একটি পদক্ষেপ। বিএসএফ এর প্রধান লক্ষ্য সীমান্ত পাহারা এবং অনুপ্রবেশ ঠেকানো। সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনায় দেখা গেছে তারা লাইন পাহারা দিতে সক্ষম নয়।”

নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে স্থানীয় পুলিশ, গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিএসএফ এর নিয়মিত বিরোধ তৈরি হবে।

নির্দেশনা অনুযায়ী বিএসএফ কর্মকর্তারা পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব এবং আসামে গ্রেফতার ও তল্লাশি অভিযান চালাতে পারবে। এসব অভিযান চালাতে কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর (সিআরপিসি), পাসপোর্ট আইন এবং ভারতে প্রবেশের আইন প্রয়োগ করতে পারবে।

আসাম, পশ্চিমবঙ্গ এবং পাঞ্জাবে রাজ্য ভারত-পাকিস্তান এবং ভারত-বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার অভ্যন্তর পর্যন্ত এসব অভিযান চালাতে পারবে বিএসএফ। অনেকটা পুলিশের মতোই তল্লাশি চালাতে পারবে তারা।

আগে এই আওতা ছিল ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। এর পাশাপাশি বিএসএফ নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, ত্রিপুরা, মনিপুর এবং লাদাখে তল্লাশি ও গ্রেফতার অভিযান চালাতে পারবে বলে জানা গেছে।

রিং আইডির পরিচালক সাইফুল গ্রেপ্তার

বেসরকারি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রিং আইডি পরিচালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আজ শনিবার (০২ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান।

 

সিআইডি জানায়, শুক্রবার (১ অক্টোবর) সাইফুল ইসলামকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

 

এর আগে (৩০ সেপ্টেম্বর) ভাটারা থানায় সাইফুলসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

 

মামলায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করাসহ অজ্ঞাত আরও ১০/১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

 

মামলায় অভিযোগ করা হয়, প্রতিষ্ঠানটি গত মে মাসে ২৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, জুন মাসে ১০৯ কোটি ১৩ লাখ, জুলাই মাসে ৭৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়। এই টাকা যাতে বিদেশ পাচার হতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে তাদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে। মামলায় আসামিরা কিভাবে জড়িত রয়েছে, বিপুল পরিমাণ অর্থ কিভাবে সংরক্ষণ করেছে তার বিস্তারিত জানতে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদকে মামলার তদারকি কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

শতভাগ বোনাস পাবেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা

শিক্ষকদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের শতভাগ উৎসব ভাতা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো বেসরকারির শিক্ষক-কর্মচারীররাও দুই ঈদে শতভাগ বোনাস বা উৎসব ভাতা পাবেন।

 

এমন বিধান রেখে ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১’ জারি করেছে সরকার। রোববার (২৮ মার্চ) স্বাক্ষরিত নীতিমালাটি সোমবার (২৯ মার্চ) প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।

 

 

জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষকরা সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের সমান বোনাস পাওয়ার কথা থাকলেও বেসরকারি শিক্ষকরা বোনাস পেতেন ২৫ শতাংশ আর কর্মচারীরা বোনাস পেতেন ৫০ শতাংশ।

 

নীতিমালার ১১ (৭) ধারায় বলা হয়েছে, ‘বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল বেতন/বোনাসের নির্ধারিত অংশ/উৎসব ভাতার নির্ধারিত অংশ সরকারের ২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল/সরকার নির্ধারিত সর্বশেষ জাতীয় বেতন স্কেলের সঙ্গে অথবা সরকারের নির্দেশনার সঙ্গে মিল রেখে করতে হবে।’

 

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের মুখপাত্র মো. নজরুল ইসলাম রনি বলেন, দীর্ঘদিন পর আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করেছে সরকার। অনেক প্রতীক্ষার পর সরকারের এই সিদ্ধান্তে শিক্ষকরা আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকবেন।’

দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি; জনগনের নাভিশ্বাস।

রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা পুরনো। পবিত্র এ মাসে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় সিন্ডিকেট করে প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দাম বাড়িয়ে দেন। তবে এবার রমজান আসার পূর্বেই নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির হতে শুরু করেছে। দেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে এমনিতেই মানুষের আয় কমেছে। এ অবস্থায় বেশ কিছু পণ্যের দাম নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এখনই অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে রমজানে বাজারে আরো অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হবে।

গতকাল সরজমিনে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রমজান না আসতেই প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দাম বাড়তে শুরু করেছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও কারণ ছাড়াই চাহিদার ওপর ভিত্তি করে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়।

যা ভোক্তাদের ওপর চরম জুলুম বলে মনে করছেন তারা।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, রমজানে প্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে, চিনি, আটা, গুঁড়া দুধ, তেল,  পিয়াজ, বেগুন, খেজুর, শসা ও লেবুর দাম ইতিমধ্যেই চড়া হতে শুরু করেছে। বিক্রেতাদের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটার ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির হিসেবে গত বছর এই সময়ে যার মূল্য ছিল ১০০ থেকে ১০৮ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে লিটারে বেড়েছে ২৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। এ ছাড়া খোলা সয়াবিন তেল লিটার বর্তমানে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। বছরে বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে আরো ১-২ মাস আগে থেকেই ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এদিকে চড়া হতে শুরু করেছে চিনির দাম। বর্তমানে দেশি প্যাকেটজাত লাল চিনি ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সাদা চিনি ৭৫ টাকা। যা ৩ দিন আগেও ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ২ দশমিক ২২ শতাংশ। গত বছর এই সময়ে ছিল ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এ ছাড়া বাজারে খোলা চিনি কেজিতে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ৩ দিন আগে যা ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে বিক্রেতারা জানান। বর্তমান বাজারে সব ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত আটা কেজিতে ৩৮ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা কিছুদিন আগে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ কেজিতে বেড়েছে ৩ টাকা। আটার ২ কেজির প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা। অন্যদিকে খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৩০ থেকে ৩২ টাকা। ওদিকে হঠাৎ করে বাজারে গুঁড়া দুধের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। কেজিতে অন্তত ৪০ টাকা বেড়েছে। বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে গুঁড়া দুধ কেজিতে ৬৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা ৩ দিন আগে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশের বাজারে বেড়েছে বলে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

রমজানে প্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে বেগুন অন্যতম। এ মাসে সবজিটির চাহিদা তুলনামূলক বেশি থাকে। কয়েকদিন সস্তায় বিক্রি হলেও ২ দিন ধরে চড়া হতে শুরু করেছে বেগুনের দাম। ২-৩ দিনের ব্যবধানে বেড়েছে কেজিতে ১০-১২ টাকা। খুচরা বাজারে বেগুন গতকাল ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা ২ দিন আগেও ছিল ২০-৩০ টাকা। কয়েকদিন আগে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া শসা এখন ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম চাওয়া হচ্ছে ৮০ টাকা পর্যন্ত। লেবু হালিপ্রতি ৫০ থেকে শুরু করে ৭০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এক সপ্তাহ আগে মূল্য ছিল ৪০ টাকা।

ওদিকে এখনো কমেনি মুরগিসহ অন্যান্য মাংসের দাম। বরং ক্রমেই আরো ঊর্ধ্বমুখী। মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজারে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে চাওয়া হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা। এক মাস আগেও যার মূল্য ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। দেশি কক মুরগি কয়েকদিন আগে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন যা ৫৫০ টাকা দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। এ ছাড়া ১ মাস আগে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। সাদা ব্রয়লার ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। এক মাস আগে যার মূল্য ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। ডালের দাম নতুন করে না বাড়লেও এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল দেখা যায়, দেশি ভালো মানের ডাল মানভেদে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা ডাল ৬৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ছোলার দাম না বাড়লেও বৃদ্ধির লক্ষণ রয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। মানভেদে এখন কেজিতে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। অন্যদিকে চালের দামও কমার লক্ষণ নেই। বর্তমানে মিনিকেট দেশি চাল ৬৪ থেকে ৭০ টাকা এবং ভারতের মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রমজানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য হলো খেজুর। ইফতারে খেজুর খান না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু দেখা গেছে খেজুরের দাম গত বছরের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি মরিয়ম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, যা গত বছর বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকায়। গাছ পাকা মরিয়ম বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়, যা গত বছর বিক্রেতারা ৬০০-৭০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। আরব আমিরাতের ভালো মানের বরই খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়, যা গত বছর একই সময় বিক্রি হয়েছে ২৫০-৩০০ টাকায়।

রমজানে দাম বৃদ্ধির বিষয়ে মোহাম্মদপুর টাউনহলের মুদি দোকানি মোজাম্মেল হক বলেন, রমজান এলে কিছু পণ্যের দাম বাড়ে। এটা আমাদের দেশের একটা রীতি হয়ে গেছে। তবে এ ক্ষেত্রে তো আমাদের কিছু করার নেই। আমরা যে দামেই পণ্য কিনি সীমিত লাভে তা বিক্রি করতে হয়। অতিরিক্ত লাভ করেন বড় ব্যবসায়ীরা। তারা বিভিন্ন অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়ানোর ফলে আমাদের ব্যবসা করতেও সমস্যায় পড়তে হয়। দাম বাড়লে কাস্টমারদের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়।

কনসাস কনজুমার্স সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ মানবজমিনকে বলেন, পণ্যের দাম বাড়ার পেছনে সিন্ডিকেটকারীদের কারসাজি থাকে। রমজান এলেই পণ্যের দাম বাড়ানোর নতুন ট্রেন্ড চালু হয়েছে। এক সময় রমজানের মধ্যে পণ্যের দাম বাড়ানো হতো আর এখন রমজান আসার ১-২ মাস আগেই কৌশলে দাম বাড়ানো হয়। আবার রোজার সপ্তাহ খানেক আগে একটু কমানো হয়। দেখা যায় যে, বাড়ানো হয় ২০ শতাংশ আর সেই সময় কমানো হয় ৫ শতাংশ। যেন তারা বলতে পারে যে পণ্যের দাম কমেছে। এই ধরনের অপকৌশল ভোক্তাদের সঙ্গে ভয়াবহ প্রতারণার শামিল বলে মনে করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, এ অবস্থায় রমজানে যদি সিন্ডিকেট না ভাঙা যায় তবে বাজার আরো অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। সেজন্য সরকারের যে সমস্ত সংস্থাগুলো আছে তাদের উচিত সিন্ডিকেটগুলো চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া। কিন্তু বরাবরই তাদের মধ্যে সেই সদিচ্ছা দেখা যায় না। অথবা যেকোনো কারণেই হোক তারা সিন্ডিকেট ভাঙতে পারে না। তারা যেন এই কাজগুলো করতে পারে সেজন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের প্রতি আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

1 2 3 5