শহীদ দৌলত, উত্তাল রাজনীতির রক্তাক্ত স্বাক্ষী – বাদল

          শহীদ দৌলত খাঁন। চকরিয়ার রাজপথের এক রক্তাক্ত অধ্যায়ের সাক্ষী।স্বৈরশাসক এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে কক্সবাজার জেলার একমাত্র শহীদের নাম।১৯৮৭ সালের ৫ ডিসেম্বর পুলিশের বেপরোয়া গুলিতে  প্রাণ হারান তিনি।সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া তীব্র আন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর জেনারেল এরশাদের নয় বছরের শাসনের অবসান ঘটে।পত্রিকান্তরে প্রকাশ, সে সময়কার গণআন্দোলনে ৩৭০ জন্য ছাত্রজনতা জীবন দিয়েছিল,পঙ্গুত্ব বরণ করে অসংখ্যজন।১ বছর ৩২৬ দিন হরতাল, অবরোধ হয়েছিল ৭০ দিন।বিশ্ববেহায়া এরশাদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সকল ছাত্রসংগঠন ও রাজনৈতিক দল প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে।রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল “১৯৮২ থেকে ৯০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সেই  পরিস্থিতিকে অত্যান্ত ভয়ঙ্কর এবং বিপদজনক হিসেবে উল্লেখ করেছেন”।কার্ফু, সন্ধ্যা আইন লেগেই থাকতো। দুইজনের  অধিক চলাফেরা ছিল নিষিদ্ধ, আইন অমান্যকারীদের দেখা মাত্র গুলির কিংবা ৭ বছরের জেল জরিমানার নির্দেশনা ছিল প্রশাসনের কাছে।দেশের অন্যান্য জায়গার মত চকরিয়ায়ও তীব্র  আন্দোলনে  রাস্তায় নামে বিক্ষুদ্ধ ছাত্রজনতা।পুলিশদের ফাঁকি দিয়ে  কারফিউ অমান্য করে সভা সমাবেশ ও রাতে ঝুঁকি নিয়ে  মশাল মিশিল করেছি।তেমনিভাবে ৫ ডিসেম্বরে  শহীদ ছাত্রনেতা দৌলত খান যে মিশিলে গুলিবিদ্ধ হয়, সেই মিছিলের সহযাত্রী ছিলাম  অনেকের সাথে।তখন আমি  তত্কালীন জাতীয় ছাত্রলীগ চকরিয়া কলেজ শাখার সভাপতি ।দৌলত খাঁন  ছিলেন উপজেলা জাতীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিভাষায় প্রতিটি সংগ্রামের পিছনে একটি লক্ষ্যমাত্রা রয়। তেমনিভাবে নব্বই দশকের সেই  আন্দোলনের আকাঙ্খায় ছিল গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা,  আইনের শাসন, বাক-স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, শিক্ষাসহ সকল মৌলিক অধিকার ব্যবস্থার  উন্নয়ন এবং দূর্নীতি  দমন করা।অন্যদিকে ছাত্র  সংগঠনদের   ১০ দফায় বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয় যে “১৯৮২ সাল থেকে সব রাজনৈতিক  হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে এবং সকল শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও মর্যাদা প্রদান করতে হবে”।আন্দোলনে এরশাদশাহীর বিদায় হল। কিন্তু পরবর্তী   কোন সরকারই সেসকল শর্ত মনে রাখে নাই। বেমালুম ভুলে চেপে গেছে।সামরিক শাসন বিরোধী ঐক্যবদ্ধ চেতনার সব চুক্তিবদ্ধ শর্তসমূহ নিয়ে  কেউ মাথা ঘামানো প্রয়োজন মনে করে নাই। সেই  গণআন্দোলনের  অনেকে   পরবর্তী সময়ে এমপি মন্ত্রী কিংবা বড়বড় পদে আসীন হয়েছে।নব্বই দশকের আন্দোলনের কিংবদন্তি নেতার তকমায় ক্ষমতা ব্যবহার করে অঢেল টাকার মালিক হয়ে যায়।কিন্তু  কেউ কথা রাখে নাই। সবাই চুক্তির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে ।শুধু ভুক্তভোগীরাই মনে রেখেছে, হায় হুতাশের  মাধ্যমে,যাতনার সাথে, কষ্টের মাঝে। এমনকি  শহীদ পরিবারের খবর রাখার প্রয়োজন মনে করে নাই কেউ। পঙ্গু নেতাকর্মীরা  চিকিৎসা সেবার নিশ্চয়তা,সহায়তা পায় নাই। তাই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে  এত ত্যাগের বিনিময়ে কি অর্জন হল? কী পেল স্বদেশ? কি লাভ হলো এত প্রাণ বলিদান?কি পেল শহীদদের পরিবার।এসকল  বেদনা এখনো তাড়াকরে সে সময়কার আন্দোলনকারী  ছাত্রনেতাদের। এখনো অনেক নেতাকর্মী মানবেতর জীবন যাপন করছে।চকরিয়ার  শহীদ দৌলত খাঁন ছিল তার পরিবারের বড় সন্তান, বয়স্ক  মাতাপিতারএকমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে।উল্লেখ করার মতো  সহযোগিতা নিয়ে কেউ তার পরিবারের পাশে এসে  দাঁড়ায় নাই।নব্বই দশকের চকরিয়ার রাজপথের প্রাণ পুরুষ জননেতা এডভোকেট আমজাদ হোসেন যখন নবগঠিত  চকরিয়া পৌরসভার প্রশাসক নিযুক্ত হয়েছিল তখন দৌলতের পরিবারকে দুইটি রিক্সা সহায়তা দিয়েছিল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৯৬ সালে প্রথম এবং বর্তমানে  তিন মেয়াদের  ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে  চলমান আছে  ।অনেকে আঙুল ফুলে বটগাছ হয়েছে, বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে চোখে পড়ার মত। কিন্তু যাদের রক্তেঘামে ভিজে দল শক্তিশালী তাদের কোন মুল্যায়ন নাই।হাইব্রিড সুবিধাবাধীদের বিপুল সংখ্যক উত্থানের ফলে অস্তিত্ব টিকে থাকার সংকট নিয়ে আছে অনেকে বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গায়। জীবনবাজি করে যারা  আন্দোলন করেছে তাঁরা হারিয়ে যাচ্ছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই এরশাদকে এদেশের  মানুষ মেনে নিতে পারেনাই।  রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে আসে মানুষ। আন্দোলন দমনে এরশাদ সেনাবাহিনী ও পুলিশ লেলিয়ে একের পর এক মানুষ খুন করতে থাকে । বিক্ষোভকারীদের দমনে বেপরোয়া এরশাদ রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করে।১৯৮৭ সালের ৫ই ডিসেম্বর সকাল থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠে পুলিশ ।তাদের  যুদ্ধাংদেহী ভূমিকা দেখে হতভম্ব হয়ে যায় চকরিয়ার  আন্দোলনকারীরা।  ষ্টেশনে আসা নেতাকর্মীদের বিনা উস্কানিতে তাড়া করতে থাকে, ভয় দেখিয়ে ছাত্রজনতাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ধাওয়া দিয়ে   কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।তখন  রাজনৈতিক কর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ এবং মুক্তির দাবী নিয়ে চকরিয়া উপজেলা চত্বরে সমবেত  সমাবেশে , জননেতা এডভোকেট আমজাদ হোসেনের বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে পুলিশ গুলি  চালায়। তখনই  গুলিবিদ্ধ দৌলত খাঁন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।পরে হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

প্রতিবছর ডিসেম্বর এলেই সেই ভয়াবহ মুহূর্তের দৃশ্য মানসপটে ভেসে উঠে, তাড়া করে।সেই মিশিল উপজেলায় সমবেত হওয়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত  অগ্রভাগে ছাত্রনেতা সরওয়ার আলম, মোহাম্মদ আইয়ুব (আলীকদম), খানে আলম (শীলখালী)এবং আমি এক সাথেই ছিলাম।উল্লেখ্য যে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন তীব্রতা পাবার পরথেকে প্রশাসনের কড়া নজর ছিলো সরওয়ার আলমের উপর।তিনি ছিলেন তখনকার সময়ের সাহসী ছাত্রনেতাদের মধ্যে অন্যতম একজন।ফলে হুলিয়া লেগেই থাকতো, গ্রেফতার আতঙ্ক তাড়া করতো সবসময়।বহুল পরিচিত ছাত্রনেতা ছিলেন তিনি । সেই দিনের পরিস্থিতি, গতিবিধি এবং পুলিশের বেপরোয়া মনোভাব বুঝতে পেরে আমার কেন জানি মনে হলো,সরওয়ার ভাইকে   নাগালে পেলে পুলিশ গ্রেফতার করবেই।তাই মিছিলটি উপজেলা চত্বরের প্রবেশমুখে   সরওয়ার ভাইকে ভিতরে না গিয়ে সরিয়ে থাকতে  অনুরোধ করি এবং  পাশের রেষ্টুরেন্ট থেকে দুইটি সিংগারা কিনে দিয়ে নাপিতের দোকানের দিকে অপেক্ষায় রাখি।সেদিনের ঘটনার পরে কেন জানি মনে হলো সরওয়ার ভাইকে সরে যাওয়ার অনুরোধ না করলে হয়তোবা ঘটনা অন্যভাবে লিখতে হতো আজকের দিনে।(আমি আমার নিজস্ব মতামত তুলে ধরলাম মাত্র)।আন্দোলন রত সবারই গৌরবময় ভূমিকা অনস্বীকার্য।সবার ত্যাগ তিতিক্ষার ফসল স্বৈরশাসকের বিতাড়ন।  কমবেশি ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলন করেছে,হুমকির মাঝে ছিলো সবাই ।প্রতি ডিসেম্বর মাস এলেই  অন্য আরেকটি  স্মৃতি এখনো ভেসে উঠে,মনে পড়ে বারবার, ৫ ডিসেম্বরের দিনটিতে হ্নদয়ে রক্তক্ষরণ হয়।দৌলত খান গুলিবিদ্ধ হওয়ার সাথে সাথেই বাতাসের বেগে খবর  হয়ে যায় যে ঢেমুশিয়ার(আমার গ্রাম)  একটি ছেলে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায়। তখন কোণাখালী ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা হয় নাই।উপকুলীয় এই এলাকায় সক্রিয় রাজনীতিতে  জড়িত ছিলাম বলে সবাই ধরে নিয়েছিল যে গুলিবিদ্ধ হয়ে আমিই মারা গেছি। ফলে ছেলের মৃত্যু সংবাদে আমার  মায়ের কান্না বিলাপ শুরু হয়ে যায় । পাড়া প্রতিবেশি সহ আত্মীয়স্বজন সবায়  শোকাভিভূত হয়ে পড়ে । তখন মোবাইলের যুগ ছিল না বিধায়  তাত্ক্ষণিকভাবে জানার সুযোগ ছিল না। সেদিন হয়তোবা আন্দোলনকারীদের মধ্যে অন্যকেউও হতে পারতো দৌলত খানের সাথে কিংবা আমি ।কারণ সেদিন  শত-শত ছাত্রজনতা এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে শামিল ছিল। সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য মানসপটে ভেসে উটলেই  হতবিহ্বল হয়ে যাই।রাজনৈতিক বিজ্ঞদের মতে,”নব্বই দশকের আন্দোলন দেশপ্রেমের ঐতিহাসিক ছবক হয়ে থাকবে। নিঃস্বার্থ ভাবে খেয়ে না খেয়ে রাজপথে আন্দোলন করেছে সবাই”। চিরিংগায় পপুলার বেকারির রুটি ছিল তখনকার রাজনৈতিক কর্মীদের উত্তম খাবার। কিন্তু আজকাল রাজনীতির সে চিরচেনা চেতনা মৃতপ্রায়।ছাত্র রাজনীতিতে ছাত্রদের কোন দাবি নিয়ে শোর উঠে না।দলের সাইনবোর্ডে টেন্ডারবাজী লাইসেন্সবাজী ও দখলবেদখল নিয়ে নেতাদের লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার হতে দেখা যায়। দিনের পর দিন রাজনীতির এ হাল  দেখে সাধারণ মানুষের মাঝে হতাশা ও বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে।তাই বিশেষজ্ঞ মহলের অভিমত,   “রাজনীতিবিদরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে দেশের স্থিতিশীল সামষ্টিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়”।তাই রাজনীতিতে সুস্থতা ফিরিয়ে আসুক কামনা করে নিবেদিত ত্যাগী কর্মীরা।

৫ ডিসেম্বরের শহীদ দৌলত খাঁনের আত্মার শান্তি কামনা করছি।সাথে সাথে  আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন -২০২৪, কক্সবাজার -১ আসনের নির্বাচিত সাংসদের প্রতি নব্বই দশকের  ছাত্রনেতাদের পক্ষ থেকে শহীদ দৌলত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেবার দাবি জানাচ্ছি।তার স্মৃতি ধরে রাখতে তাঁর  জন্মস্থান  কোণাখালী ইউনিয়নের নাম “দৌলত নগর” নামকরণ করা সহ প্রস্তাবিত  মাতামুহুরি  উপজেলা কার্যক্রম শুরু হলে নবগঠিত সে উপজেলার অডিটোরিয়ামের নাম “শহীদ দৌলতের” নামে নামকরণ করতে  দাবি জানাচ্ছি। কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরি  সংলগ্ন শহীদ দৌলত ময়দানের নামফলক এবং চকরিয়া থানা রাস্তার মাথা থেকে উপজেলা পর্যন্ত দৌলত সড়কের নামফলক লাগানোর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে।
অমর হউক শহীদ স্মৃতি, দৌলত খাঁন স্মৃতি।
জয় বাংলা।
———————–


নব্বই দশকের সাবেক ছাত্রনেতা এবং সমাজকর্মী

বিশেষ কৌশলে জুতার মধ্যে ইয়াবা পরিবহনকালে ০১ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব ১০

মো:টিটুল মোল্লা,ফরিদপুর।।

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব নিয়মিত জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, অস্ত্রধারী অপরাধী, ছিনতাইকারীসহ মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছে। “চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে” স্লোগানকে সামনে রেখে মাদক নির্মূলে র‌্যাব মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যায় র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ ঘাট থানাধীন এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে আনুমানিক ৫,৫৮,৩০০/- (পাঁচ লক্ষ আটান্ন হাজার তিনশত) টাকা মূল্য মানের ১৮৬১ (এক হাজার আটশত একষট্টি) পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে।উক্ত আসামী বিশেষ কৌশলে জুতার সোলের মধ্যে লুকায়িত অবস্থায় ইয়াবা পরিবহন করছিল। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মোঃ শাহ আলম (৩০), পিতা- দিল মোহাম্মদ, সাং- আজু খাইয়া ০৭ নং ওয়ার্ড, থানা- নাইক্ষ্যাংছড়ি, জেলা- বান্দরবান বলে জানা যায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত শাহ আলম একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। সে বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে রাজবাড়ীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে মাদক মামলা রুজু করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

ক্ষতিকারক কিটনাশক দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার ২৫ শতাংশ জমির ফসল নষ্টের অভিযোগ

শেখ নজরুল ইসলাম,শরীয়তপুর।।

শরীয়তপুরের ডোমসার ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বেড়াচিকন্দি পূর্ব শত্রুতার জেরে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম খাঁনের ফসলি জমিতে আগাছানাশক বিষ দিয়ে জমির শরিষা নষ্টের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের মোজাম্মেল খাঁনের (৬৫)বিরুদ্ধে ৷ এতে ২৫ শতাংশ জমির শরিষা ফসল পুরোটাই মরে গেছে ৷ এই ঘটনায় পালং মডেল থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম খাঁন ৷

অভিযোগকারী জমির মালিক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম খাঁন জানান,গত ২৭ নভেম্বর সোমবার রাতে আমার জমিতে ঘাঁস মারার বিশ দেয় মুজাম্মেল খাঁ ৷ আমি এই ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যাই ৷ একটা মানুষ কিভাবে এই বয়সে এমন কাজ করতে পারে ! এই বছর আমি অনেক পরিশ্রম করে এই জমিত চাষ দিয়ে শরিষা আবাদ করি ৷ ক্ষেতের পরিচর্যাও বেশি নিয়েছি,যার ফলে শরিষা ফসল খুব ভাল হইছিল ৷ এই ভাল ফসল হয়েছে দেখে মুজাম্মেল খাঁ হিংসায় রাতের আধারে ঘাঁস মারার ঔষধ দিয়ে আমার ক্ষেতের সব ফসল পুরিয়ে দিয়েছে ৷ এতে আমি আর্থিক ভাবে যেমন ক্ষতি হয়েছি,মানষিক ভাবেও খুবই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি ৷ এটা কেমন শত্রুতা আমার মাথায় আসে না ৷ আমি মুজাম্মেল খাঁর বিচার চাই ৷

শত্রুতার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন,মুজাম্মেল খাঁর সাথে আমার জমি জমা এবং দলবল নিয়ে বিরোধ আছে ৷ সে করে বিএনপি আর আমি করি আওয়ামীলীগ ৷ তবে দুই চার ছয় মাসের মধ্যে তার সাথে আমার কোন ঝগড়া বিবাদ হয় নাই ৷ সে হটাৎ করে কেন এই কাজ করলো আমি জানি না ৷

এই ফসল নষ্টের বিষয় নিন্দা জানিয়ে ঐ এলাকার মসজিদের ইমাম মো খালেক সরদার,হাবিবুর রহমান খাঁন,চাঁনমিয়া চোকদার,আলীআক্তার খাঁন ও মোতালেব কোটারী বলেন- কতটা নিচু মনের হইলে এমন জঘন্য কাজ করতে পারে আমাদের মাথায় আসে না ৷ মানুষের সাথে মানুষের শত্রুতা থাকতে পারে ৷ তাই বলে ফসল নষ্ট করবে ? আমরা এর দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবী করছি ৷ যাতে কেউ ভবিষ্যতে এমন জঘন্য কাজ করতে না পারে ৷

এই বিষয়ে অভিযুক্ত মুজাম্মেল খাঁনের সাথে কথা বলতে তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি ৷

এই বিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মেজবাহ উদ্দীন আহম্মেদ বলেন,আমি অভিযোগ পেয়েছি,অভিযোগের সত্যতা যাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ কর

ফরিদপুর ৪ আসন থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন

মো:টিটুল মোল্লা,ফরিদপুর।।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ‌ ফরিদপুর ৪ আসনের মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন ‌ স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন।

কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বর্তমান ফরিদপুর ৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন।

তিনি আজ দুপুরে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ কামরুল আহসান তালুকদার এর নিকট মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
এ সময় ‌তার সাথে উপস্থিত ছিলেন,ফরিদপুর জেলা পরিষদের ‌ চেয়ারম্যান ‌ শাহাদাত হোসেন সহ একাধিক নেতৃবৃন্দ।।

ধর্ষক সালাউদ্দীনের বিচারের দাবিতে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে ভুক্তভোগী নারীর সাংবাদ সম্মেলন

মো: টিটুল মোল্লা,ফরিদপুর।। 

ধর্ষক সালাউদ্দিন এর বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী নারী।
ভুক্তভোগী নারী ফরিদপুর সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।আজ বুধবার বেলা ১১ টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিক শামসুদ্দিন মোল্লা স্মৃতি মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি সঞ্জীব দাসের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রহিমা আক্তার জানান,,উক্ত সালাউদ্দিনের সাথে তার দীর্ঘদিন যাবত প্রেমের সম্পর্কের কারনে পারিবারিকভাবেই বিয়ের কথা হচ্ছিল তাদের।

পরবর্তীতে ধর্ষক সালাউদ্দীন ছলে বলে তাকে নিয়ে প্রভাবশালী বন্ধুদের সহযোগিতায় তাকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পরবর্তীতে সালাউদ্দিন ভুক্তভোগীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে।বিষয়টি সালাউদ্দিনের এলাকার চেয়ারম্যানকে অবগত করলে সেখান থেকে বিয়ের তারিখ দেয়া হয়।সালাউদ্দীন সেই বিচারকের বিচার অমান্য করে আজকাল করে করে বারবার তা পরিবর্তন করে।

সংবাদ সম্মেলনে,ভুক্তভোগী নারী এই ঘটনার বিচার দাবি করে তার প্রতিকার চেয়ে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবে উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনটি সমাপ্তি করেন।

ফরিদপুরের কানাইপুরে তুলার ফ্যাক্টরীতে অগ্নিকাণ্ড

মো:টিটুল মোল্লা, ফরিদপুর”

ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নে আজ শনিবার দুপুরে তুলার গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় তিন লক্ষ টাকার ‌ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ‌ধারনা করা গেছে।

কানাইপুরের ‌মৃধা মার্কেটের পিছনে মোঃ আমির মিয়ার মালিকানাধীন তুলার ফ্যাক্টারীতে অগ্নিকাণ্ড সংগঠিত হলে কর্মরত শ্রমিকরা পানি ও গ্যাস দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরবতীতে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে ,ফ্যাক্টরীর মেশিন চলাকালীন ঘর্ষনের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে।।

ফরিদপুরে আলোচিত তুরাগ হত্যার প্রধান আসামী-”কানা তুষার”কে পিস্তলসহ গ্রেফতার

মো:টিটুল মোল্লা, ফরিদপুর।।

ফরিদপুরের আলোচিত সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র তুরাগ হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী কানা তুষার কে হত্যায় ব্যবহারীত পিস্তলসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ফরিদপুর পুলিশ সুপার,মো. শাহজাহান তাঁর কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন,মাদক কারবারের টাকা আত্মসাৎ করায় তাঁর তুরাগের ওপর ক্ষোভ ছিল দুই দুই ব্যবসায়ীর মধ্যে।

তুরাগেরন ওপর সেই ক্ষোভের জেরেই তুরাগকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আসামীরা।

উল্লেখ্য, ১১ই অক্টোবর সন্ধ্যায় ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের একটি বাগানে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে।হত্যার পরে তুরাগের বাঁ হাত কেটে উল্লাস করতে করতে অটোরিকশায় করে চলে যায় হত্যাকারীরা।।

ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পরে তুরাগের বাবা মো. আলাউদ্দিন হাওলাদার (৬৭) কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

২৩ ইং নভেম্বর( বৃহস্পতিবার)ভোরে বরিশালের বাবুগঞ্জ এলাকার ডিগ্রি কলেজের পাশ থেকে তুষারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার জানান,তুরাগ হত্যার মিশনে অংশ নেওয়া ও পরিকল্পনাকারীরা তারা প্রায় সবাই এখন গ্রেপ্তার হয়ে আইনের আওতায় আছে। এদের মধ্যে কানা তুষারের নেতৃত্বে সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় রাজন, সাজন, জুয়েল ও টিপু।

 

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান,মাদকের টাকা লেনদেনে সমস্যা হওয়ায়তুরগকে হত্যার ছক সাজায় কানা তুষার।এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত দুটি ম্যাগাজিন ও একটি গুলিসহ বিদেশি ৭.৬৫ বোর পিস্তল উদ্ধার করে।

কানা তুষারের বিরুদ্ধে তুরাগ হত্যাসহ দুটি হত্যা মামলা, ১২টি মাদক মামলা, দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলাসহ ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় ২১টি মামলা রয়েছে।

বোন স্বপ্নার চাওয়া উপহার হিসেবে তুরাগের হাত কেটে নেয় কানা তুষার।

এ জন্য হত্যায় জরতীদের মধ্যে মামলায় বোন স্বপ্নাকেও আসামি করা হয়েছে।

 

এছাড়াও পুলিশের একটি সূত্র থেকে যানা যায়, কানা তুষারের অত্যাচারে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরেই অতিষ্ঠ। আনুমানিক ১৫ বছর আগে তাকে পাবলিকে ধরে চোখে চুন ঢেলে দিয়েছিলেন।

তারপর থেকেই এলাকাবাসী তাকে কানা তুষার নামেই ডাকে।এখন সে “কানা তুষার” নামেই পরিচিত।

এতে করে দুটি চোখই কানা হয়ে যায় তুষারের।বিভিন্ন চিকিৎসার উন্নতির ফলে এখন সে হালকা দেখতে পারে বলে জানাগেছে।

 

তিনি বলেন,উক্ত মামলায় কারাগারে ১৭ই (নভেম্বর) রাজন, সাজন, জুয়েল ও আক্কাস জমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

 

এজাহার ভুক্ত আসামীদের মধ্যে দু’জন আসামী এখনো পলাতক আছে।দ্রুত তাদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলমান আছে বলে জানিয়ে দেন তিনি।

 

পুলিশ সুপার মো.শাহজাহান বলেন,তুরাগের কেটে নেয়া হাতের এখনো কোনো সন্ধান পাওয়া যায় নি।।ধৃত কানা তুষারের কাছে আরো অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের জন্য আবেদন করবে পুলিশ।।

1 2 3 362