“বিলকিস বেগম” নিজ বাড়িকেই বানিয়েছেন আবাসিক হোটেল,চালাচ্ছে রমরমা দেহ ব্যবসা

বিশেষ প্রতিনিধি,,

ফরিদপুর শহরতলির গোয়ালচামট ২ নং সড়কের শেষের দিকে বাইপাস সংলগ্ন বিলকিস বেগম নামে এক বাড়িওয়ালীর রুম ভাড়া নিয়ে প্রেমিক যুগল আর দেহ ব্যাবসায়ীদের চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। এতে করে এলাকার ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সাধারন জনগনের সম্মানহীনতার ভয়ে রাস্তায় চলাচলেও মুশকিল হয়ে পরেছে। গত বৃহস্পতিবার বাড়িতে অসামাজিক কাজে লিপ্ত অবস্থায় স্কুল কলেজের তরুন তরুনীসহ বাড়ির মালিক বিলকিস বেগম কে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা। এসময় বিলকিসের দুই ঘরে তল্লাশী চালিয়ে ৩ রুম থেকে ফরিদপুর ও আসপাশের উপজেলাসহ রাজবাড়ি জেলার মোট ৫ জন উঠতি বয়সের ছেলে মেয়ে ও অন্য একটি রুম থেকে নাসির (৪০) নামে একজন দালালকে আটক করে। স্থানীয় সুত্রে জানা যায় ঐ বাড়িতে প্রতিনিয়তই অপরিচিত ছেলেমেয়েদের আনাগোনা দেখতে পেয়ে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। অন্যান্য দিনের ন্যায় গত বৃহস্পতিবারও একের পর এক ছেলে মেয়েদের জুটি ঐ বাড়িতে ঢুকতে দেখলে স্থানীয়রা তল্লাশী চালিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত অবস্থায় দুই রুম থেকে এক জন করে ছেলে মেয়েসহ মোট ৪জন ও অন্য একটি রুম থেকে নাসির নামে এক ব্যাক্তিকে আটক করে। এ সময় আরো একটি রুমে একজন মেয়েকে পাওয়া গেলেও তার সাথে থাকা ছেলেটি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এরা অনেকেই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী। পরে বাড়ির মালিক বিলডকিসসহ মোট৭ জন কে পুলিশের নিকট হস্থান্তর করে স্থানীয়রা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর পৌরসভার অন্তর্গত ৭ নং ওয়ার্ডের বাইপাস সংলগ্ন এ এলাকার পানি নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা না থাকায় রিতিমত একটি বিলে পরিনত হয়ে পুরো বছর ধরেই পানি ভেঙ্গে পথ চলাচল করতে হয় স্থানীয়দের। আর এ বিলের মাঝেই একতলা বিশিষ্ঠ একটি ঘরের অন্তত ৭/৮ টি সাড়িবদ্ধ রুম ও পাশে আরো একটি পাকা ঘর বানিয়ে সাধারনত একাই বসবাস করে আসছেন বিলকিস বেগম। সারা বছর বাড়ির চতুরদিকে কাদা পানি থাকায় বাড়ির ভেতরে সচরাচর কারো যাতায়াত করে না। আর এ সুযোগেই বিলকিস দীর্ঘ দিন যাবত সবার চোখ ফাকি দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এক একটি রুম প্রেমিক যুগলদের নিকট ভাড়া দিয়ে অবৈধ ব্যবসা করে আসছিলো। এমনকি দেহ ব্যবসায়ীদের বাড়িতে রেখেও তিনি রমরমা ব্যবসা পরিচালোনা করে আসছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এতে করে এলাকার ভাবমূর্তি নষ্টসহ এসব নোংরামির ফলে রাস্তায় চলাচলেও বিপাকে পরতে হয়েছে স্থানীয়দের। এ নিয়ে একাধীকবার বিলকিসকে উক্ত অবৈধ ব্যবসা বন্ধের অনুরোধ করলেও কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই দিনের পর দিন তার ব্যবসা চালিয়ে গেছেন। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত বিলকিস বেগম জানান আমি একটি সরকারি দপ্তরের আয়া পদে চাকরির করার সুবাদে নানা শ্রেণী পেশার মানুষের উঠাবসা থাকায় চাকরির জন্য অনেকে আসে আমার কাছে। তবে অসামাজিক কাজে স্থানীয়দের নিকট হাতে নাতে আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে ফরিদপুর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: জিল্লুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত বৃহস্পতিবারে এলাকাবাসীর বিলকিসসহ তরুন-তরুনীদের আটক করে স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করেছে।

অবশেষে ঔষধ সিন্ডিকেটের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে স্বাধীন ফরিদপুরের ব্যবসায়ীরা

অবশেষে বাংলাদেশ কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতি (বিসিডিএস) ফরিদপুর জেলা শাখা কর্তৃক ওষুধের দাম সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে বিক্রি করতে ফার্মেসি মালিকদের বাধ্য করা এবং চলতি বছরের গত ফেব্রুয়ারি থেকে সব ফার্মেসি মালিককে এমআরপি মূল্যে ওষুধ বিক্রি করার জন্য সমিতির পক্ষ থেকে যে কঠোর নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল সেখান থেকে সরে এসেছে সমিতিটি। এখন থেকে দোকানিরা এমআরপি মূল্যের থেকে ছাড় দিয়ে ওষুধ বিক্রি করতে পারবেন, সমিতি তাদেরকে জরিমানা বা অন্য কোন উপায়ে শাস্তি প্রদান করতে পারবে না।

২৪ মে বুধবার বিকেল ৩ টায় ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসন, ফরিদপুর চেম্বার অ্যান্ড কমার্স, ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির নেতারা ও ওষুধ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর সঙ্গে যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, এখন থেকে ফরিদপুরের ঔষধ বিক্রেতারা আগের মতই সারা দেশের ন্যায় ক্রেতার কাছে থেকে কিছু টাকা কম রেখে বা এমআরপি মূল্যের থেকে ছাড় দিয়ে ওষুধ বিক্রি করতে পারবেন, সমিতি তাদেরকে জরিমানা বা অন্য কোন উপায়ে শাস্তি প্রদান করতে পারবে না।। এতে বিসিডিএস সমিতির পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে বা গোপনে কোন ধরনের বাধা দেওয়া হবে না বলে অঙ্গীকার করেন নেতারা।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ইয়াছিন কবীরের সভাপতিত্বে ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর ফরিদপুরের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল শেখ, ফরিদপুর চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের পরিচালক ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম চৌধুরী, ফরিদপুর জেলা কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির সভাপতি মাজহারুল আলম চঞ্চল, সহ-সভাপতি মো. রনি ইসলাম ও ড্রাগ সমিতির সকল সদস্যবৃন্দ,,,এবং ফরিদপুর বাস মালিক গ্রুপের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান বনি, বাতিঘর ফরিদপুরের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ পারভেজ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড ফরিদপুরের সাধারণ সম্পাদক রুম্মন চৌধুরী, ব্লাড ব্যাংক ফরিদপুরের সভাপতি খায়রুল ইসলাম রোমান, আলোকিত ফরিদপুরের প্রতিষ্ঠাতা ও কৃষি কলেজের সাবেক ভিপি মোঃ এনামুল হাসান গিয়াস,আমরা করবো জয়ের সাধারন সম্পাদক শরীফ খান,উই কেয়ার ফরিদপুরের সভাপতি সন্ঞ্জয় সাহা,স্বেচ্ছাসেবি নাদিম আবরার ইতু,সেচ্ছাসেবি রমজান শেখ,স্বেচ্ছাসেবি শেখ ইলিয়াস,পজেটিভ ফরিদপুরের তুহিন বিন আলমগীর,স্বেচ্ছাসেবি মনোয়ার আবির,স্বেচ্ছাসেবি ও সাধারন সম্পাদক ফরিদপুর মুক্তিযুদ্ধ মন্ঞ্চ এর রাজিব হাসান পারভেজ ও সেচ্ছাসেবি ওহিদ ভাই,সে্বচ্ছাসেবি ও শিক্ষক এনামুল হাসান মাসুম এবং স্বেচ্ছাসেবি ও সাংবাদিক মিয়া সৈকত এছাড়া আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

সংযমের শিক্ষা রোজা’য় “ইফতারি প্রথা” অমানবিক

রমজান রহমতের এবং  বরকতময় মাসের নাম। ত্যাগ ও সংযম এর  মহান বার্তা নিয়ে হাজির হয় পবিত্র  রমজান মাস।এই মাসে সেহেরি এবং ইফতারের মাধ্যমে একটি আলাদা স্বাদ উপভোগ করে রোজাদার মুসলমানগণ।রাসুল (সাঃ) এর ঘোষণা মতে  “এই মাসেই  হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ রজনী লাইলাতুলকদর”।বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে রমজান উপলক্ষে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে রেখে সরবরাহ বৃদ্ধি করে,কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি আর ভেজাল খাদ্যের দাপটে রোজাদাররা ক্রয়ক্ষমতা হারায়। আবার  সামাজিকতার নামে মেয়ের শশুর বাড়িতে ইফতারি পাঠানোর কুপ্রথায় হাঁপিয়ে উঠে মেয়ের বাবা। ফলে রোজার ফজিলতের  সংযম,  ত্যাগের মহিমা এবং ভাবগাম্ভীর্যতা নষ্ট হয়ে পড়ে।

সংগৃহীত একটি গল্পের আদলে পবিত্র রমজানের মাহাত্ম্য  তুলে ধরার চেষ্টা করছি,”জাপানিজদের কাছে রোজা একটি বিস্ময়ের নাম। সারাদিন না খেয়ে থাকতে হবে। কিন্তু কেন”? এই না খাওয়া নিয়ে তাদের আরো মজার মজার প্রশ্নও আছে। তারা যেসব প্রশ্নগুলো করে, পানিও খাওয়া যাবে না?সিগারেটও না?লুকিয়ে যদি খাও?যদি শাওয়ারে ঢুকে পানি খাও?রোজাদার বাঙালী অনেক হেসে বলে,  লুকিয়ে কেন খাবো?আমিতো ইচ্ছে করলে বিরিয়ানী রেঁধে ঘরে বসেই খেতে পারি। কিন্তু ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত  আমরা কিছুই খাইনা।এটা মহান আল্লাহতালার নির্দেশ। এতে আমরা অভ্যস্ত।তখন শুরু হয় বিস্ময়ের আরেক ধাপ।আবারও একগাদা প্রশ্ন করে জাপানিজ  :”কেন খাও না?অদৃশ্য খোদা বলেছেন বলে?তিনি দেখতে পাবেন বলে?তোমাদের এত সংযম!এতটাই আত্মনিয়ন্ত্রণ!!!এরপর জাপানিজ  যে দুটো প্রশ্ন করে তাতে বাক্যহারা হয়ে পড়েন রোজাদার বাঙালী।জাপানিজের প্রশ্ন ছিল, “তবে তো তোমাদের দেশে কেউ মিথ্যা কথা বলে না,ঘুষ খায়না,কেউ পাপ করে না,পুলিশ ও লাগে না”।তখন রোজাদার বাঙালীর মুখ থেকে কোন কথা বের হয় না কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায়। কারণ আমরা জানি ৯০% মুসলমানের দেশ আমাদের।মুষ্টিমেয় হয়তো কিছু মানুষ ছাড়া সবাই রোজা রাখে।কিন্তু আমরা কি বলতে পারবো,রমজানের মধ্যেও মিথ্যা কথা বলা বন্ধ হয়েছে? প্রতারণা, জোচ্চুরি,মোনাফেকি বন্ধ? রমজানে যে খাদ্য দিয়ে ইফতার  হয়,সেহেরি খাওয়া হয় তার মধ্যে ভেজাল মিশানো হচ্ছে কিনা,পণ্য গুদামজাত করে বেশি টাকা মুনাফা করা বন্ধ  হচ্ছে কিনা, মানুষের হক মেরে খাওয়া বন্ধ হচ্ছে কিনা।অফিস পাড়ায় ঘুষ লেনাদেনা বন্ধ হয়েছে কিনা।ত্যাগ ও সংযমের শিক্ষা নিয়ে রমজান আমাদের দীক্ষিত করতে আসে প্রতিবছর ঘুরে ঘুরে। এই বছর রমজানের সময়টাতে তাপমাত্রা ৪১ডিগ্রী সেলসিয়াসের ঘরে। সারাবিশ্বের মানুষ হেরে যাচ্ছে তাপমাত্রার কাছে।গরমে পিপাসায় কাতর রোজাদার তবুও রোজা রেখে   তাপমাত্রাকে হারিয়ে দিচ্ছে। সারাদিন রোজা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং তারাবির নামাজও আদায় করা হয়।কিন্ত এই কঠিন সাধনার ফলপ্রসূ উপলব্ধি আমাদের কতটা তাড়িত করছে। শিরক, কুফরি, সুদ, ঘুষ, মিথ্যাচার, লোভ, হিংসা অহংকার থেকে কতটা মুক্ত হতে পেরেছে    মানুষ।প্রশ্ন থেকে যায় অনেক,অনেক প্রশ্ন।

পবিত্র রোজার  মাসে আমাদের সমাজে  কিছু কুপ্রথা রমজানের মাহাত্ম্যকে নিন্দিত করতে দেখা যায়। তারমধ্যে একটি হলো মেয়ের শশুর বাড়িতে ইফতারি দেওয়ার প্রথা।দরিদ্র পরিবারের জন্য এই প্রথাটি একপ্রকার অমানবিক এবং জঘন্যতম আর ধনীদের জন্য বিলাসিতা ।এই প্রথার প্রচলন মহামারী আকারে ছড়িয়ে শিকড় গেঁড়ে বসে আছে দেশের সকল জায়গায়। সাধারণত: বাঙালী সমাজে মেয়েদের তার পরিবার সব সময় দেখভাল করে। সুখী দেখতে চায়।তাই বিভিন্ন সময়ে বিশেষ কিছু দিনে মেয়ের জন্য হাদিয়া হিসেবে কিছু খাদ্য কিংবা জিনিস পাঠানো হয়।বাঙালী মুসলমানদের প্রাচীন একটি রীতি হচ্ছে মেয়ের শশুর বাড়িতে ইফতারি পাঠানো ।সামাজিক বন্ধনের  এটি ছিল একসময় আনন্দের।বাবার  সাধ্যমতে দেওয়া হতো কোন বাধ্যগত ছিল না। এবিষয়ে নবী করিম (সাঃ)বলেছেন, “তোমরা একে ওপরকে হাদিয়া দাও,যেন তোমাদের মাঝে ঋদ্ধতা বৃদ্ধি পায়”।
কিন্তু মেয়ের শশুরবাড়ির লোকজন যখন বাধ্যগত ভাবে তাদের চাহিদা মতো দাবি করে  এবং কনের উপর ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করে,মানষিক নিপীড়ন চালান,  তখন  ইফতারি আর  সামাজিক বন্ধনের পর্যায়ে  থাকে না,হয়ে যায় সামাজিকতার নামে মেয়ের বাবার উপর  অবিচার।যা অহরহ হচ্ছে। কখনো দেখা যায় সন্তোষজনক ইফতার না পাঠানো হলে মেয়ের উপর ঘটে মানষিক ও অমানবিক নির্যাতন।কটুকথা অশ্রাব্য গালাগাল। এমনকি শারীরিক ভাবে ও নির্যাতন করা হয়।আদরের মেয়ের সুখের আশায় অনেক বাবা ঋণ করে,গরু বিক্রি করে মেয়ের শশুর বাড়ির চাহিদা মেটায়, আর রাতে ঋণে জর্জরিত বাবা একেলা বালিশে মাথা রেখে কাঁদে।নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, “কেউ যদি কাউকে একটি খেজুর দিয়ে ইফতার করায় তাহলে সে রোজাদারের সওয়াব পাবে”। আর বর্তমান সময়ে   জোর করে কনের বাপের বাড়ি থেকে ইফতার আদায় করায়  সওয়াব তো হবেই না বরং গোনাহের কাজ হবে। পবিত্র কোরানের সুরা বাকারা  (১৮৩) আয়াতে এরশাদ হচ্ছে, “হে ঈমানদারগণ ফরজ করা হয়েছে তোমাদের উপর রোজা যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর। যাতে তোমরা সংযমী হতে পারো।মোত্তাকী ও পরহেজগার হতে পারো”।
সর্বোপরি  মানুষের অন্তরে তাক্বওয়া’র গুণ সৃষ্টির লক্ষ্যে রোজাকে অবশ্যই পালনীয় ফরজ করা হয়েছে। তাক্বওয়া অর্থ হলো আল্লাহতালার প্রতি ভালবাসা ও ভয়ের অনুভূতি।এই “ত্বাকওয়া” ই হচ্ছে রোজার আসল কথা।ইসলামীক বিশারদদের মতে, “পৃথিবীতে পাপ-পঙ্কিলতার কাঁটা ছড়ানো রয়েছে, তা থেকে সতর্কভাবে নিজেকে বাঁচিয়ে চলার নাম হলো তাক্বওয়া”।আর এর অভাবের কারণেই  রমজান মাসে  ইফতারি নিয়ে মেয়ের শশুর বাড়ির অযাচিত চাহিদা, ব্যবসায়ীদের খাদ্যে ভেজাল মিশানো, ঘুষ দূর্নীতি চলছে, যা কাম্য নয়।

যৌতুক প্রথা সমাজের  একটি অভিশাপের নাম। মুখে যতই যৌতুক বিরোধী কথা বলা হয় না কেন   , মেয়ের শশুর বাড়ির সন্তুষ্টি এবং মেয়ের  সুখের জন্য প্রায় বাবা মেয়ের বিয়েতে বিভিন্ন আইটেমের জিনিস দিয়ে থাকে সাধ্যমতে।আজকাল বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের  অনেক মেয়ে বিয়ে হচ্ছে না যৌতুকের  টাকার জন্য। রাস্তা-ঘাটে খেয়াল করলে দেখা যায়  যে, অনেক গরীব মা-বাবা মেয়ের বিয়ের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে  হাত পাতে,ভিক্ষা করে।যৌতুক প্রথার কারণে  বিবাহ উপযুক্ত বহু  মেয়ে পরিবারের বুঝা হয়ে আছে অনেকের । কিন্তু ইসলামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ইসলামই নারীদের সর্বোচ্চ সন্মান দিয়েছে। নিরাপত্তা  দিয়ে হেফাজত করেছে। কিন্তু আজকাল সমাজে চলমান কিছু  বিষয়  ইসলামের মুল রীতিনীতির বিপরীত। সভ্যতার নামে অসভ্যতা।বিভিন্ন আইটেমের ইফতার সহ ঈদে মেয়ের  শশুর বাড়িতে সবাইকে কাপড়,কোরবানের গরু কিংবা ছাগল সহ বিভিন্ন সময়ে পাঠানো জিনিস যৌতুকেরই শামিল। খবরের কাগজ খুললেই দেখা যায় যৌতুক দিতে  অপারগতায় শশুর বাড়ির নির্যাতনে   অনেক মেয়ের  মৃত্যু এবং বিবাহ ভেঙ্গে  যায়। এই কুসংস্কার কত যে ভয়ানক তা একমাত্র ভুক্তভোগী পরিবারই জানতে পারে। তাই এসব কুপ্রথা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে ভবিষ্যতে আরো কত মেয়ে তার শশুর বাড়িতে অত্যাচারিত হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ইফতার সুন্নত। কাউকে ইফতার করানো নিঃসন্দেহে  সওয়াবের কাজ। কিন্তু ইফতারি  কুপ্রথার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন সমাজ নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞ মহল।আলেম সমাজ বিষয়টি নিয়ে  মাহফিলে বয়ান করতে থাকলে,  সাধারণ মানুষ বেশী করে মেনে চলবে, আশাবাদী সাধারণ মানুষের।

রোজার দিনে এক মা তাঁর সন্তানকে নিয়ে রিক্সায় বাড়ি ফিরছিলেন। প্রতিজন মা’রই তার সন্তানের প্রতি গভীর ভালবাসা থাকে। সন্তানের চেহারা দেখে বলতে পারে সুখ, দুঃখ,  ক্ষুধা, তৃষ্ণা এবং সুশিক্ষা নিশ্চিত করার দিকেও তার গভীর মনোযোগ থাকে। চলার পথে ছোট  সন্তানটি যখন মার কাছে জানতে চায়, “আচ্ছা মা না খেয়ে থাকলেই কি রোজা হয়?”মা তখন যথার্থ বলেছেন, “না বাবা রোজার সময় সংযম করতে হয়।অন্যের কষ্ট বুঝতে হয় আর মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হয়”। কিন্তু শেষ কথাটি তিনি মনে রাখতে পারে না।তাই একটু পরেই প্রবীণ রিক্সাচালককে বেশ কর্কশ কন্ঠে তিনি বলে উঠেন,”আরে এত আস্তে রিক্সা চালালে তো ইফতার রাস্তায় করতে হবে। জোরে চালান”।রিক্সা চালক তখন অসহায় ভাবে জানান,”সারাদিন রোজা রেখে  আর জোরে রিক্সা চালানোর মত শক্তি নেই তার।কথা শুনে থ’হয়ে যান ঐ মা।রিক্সাওয়ালার প্রতি সন্তানের সামনে  তার খারাপ ব্যবহার এবং তার প্রভাব তার সন্তানের উপর পড়বে বুঝতে পারে মা।তখনই প্রবীণ রিক্সচালকের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। তিনি পরিবারের জন্য আনা সমস্ত ইফতারের খাবার মুরুব্বি রিক্সাওয়ালাকে দিয়ে দেন।রোজার মাসের সংযমের শিক্ষা সবার মাঝে ঋদ্ধতা নিয়ে আসুক।মাহাত্ম্য এখানেই।

সবধরনের খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রেখে, শুদ্ধ হওয়ার পথে অগ্রসর হওয়াই রমজানের শিক্ষা ।ব্যবসার নামে যদি অনৈতিকতা এবং কুপ্রথায় অমানবিকতা প্রদর্শন করা হয় তাহলে,যে রমজান  উচ্চ নৈতিক চরিত্র, উন্নত মানবতাবোধ,ত্যাগ,শিক্ষা দেয়,এই পবিত্র মাসের আমল-ইবাদতের সঙ্গে চরম অবমাননাই করা হয়।
————–


লেখক-বদরুল ইসলাম বাদল
সদস্য, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটি.

Read more

প্রতিভাধর সৃজনশীল মানুষের সান্নিধ্যে আসুক শিক্ষার্থীরা

করোনা পরবর্তী পৃথিবীতে নতুন প্রাণের স্পন্দন।কবির ভাষায়,” জাগিল কি ছন্দ, আজি এ বসন্ত আকাশে।” নিথর পৃথিবী কোমা থেকে জেগে ফিরে আসছে নতুন ছন্দ, তাল,তান, গান, সুর নিয়ে। দীর্ঘ বিরতির পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাঙালী সংস্কৃতির চর্চা নিয়ে সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন শেষ হল ।মহামারীতে টানা দুই তিন বছর এই আয়োজন বন্ধ ছিল।সাধারণত জানুয়ারী ফেব্রুয়ারিতে এসব প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চায় গুরুত্ব প্রদানের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “শারীরিক -মানসিক বিকাশে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চার বিকল্প নেই”।বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যথার্থ বলেছিলেন,” আনন্দহীন শিক্ষা, শিক্ষা নয়।যে শিক্ষায় আনন্দ নেই, সে শিক্ষা প্রকৃত শিক্ষা হতে পারে না। ”

শিক্ষাবিদের মতে”শিক্ষা একটি জাতির অবয়ব নির্মাণ করে, সাহিত্যে সে অবয়বের প্রতিফলন ঘটে। আর সংস্কৃতি তাকে পূর্ণতা দান করে। এভাবেই একটি জাতির পরিচয় বিধৃত হয় তার শিক্ষা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে”।অন্য ভাবে ,”একটি দেশ এবং জাতির অগ্রগতির মুল চালিকা শক্তি হল শিক্ষা”।আবার তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে আধুনিক রাষ্ট্রের কাঠামোতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে দরকার যুগোপযোগী শিক্ষা।তাই পড়ুয়াদের জাগরিত করতে হবে সৃজনশীল প্রতিভার। প্রাথমিক স্তরে এই কাজটির হাতেখড়ি হয় বিদ্যালয়ে।এটাই পড়ুয়াদের অবচেতন মনন বিকাশের আতুরঘর।যার ধারাবাহিক সৃজনশীল জ্ঞানের প্রবাহ নিজের এবং জাতির অগ্রগতি অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিন প্রতিক্ষেত্রে বিকশিত মেধা চর্চার পরিবেশ তৈরীর ভূমিকা বিদ্যালয়কেই দেখতে হয়।বলা হয়ে থাকে যে “বিদ্যালয় সমাজ,রাষ্ট্র এবং জাতির সংস্কৃতি, ঐতিহ্য শুধু লালনই করে না, সংরক্ষণ ও পরিচর্যায় অগ্রণী ভূমিকা রাখে”।প্রমাণিত সত্য যে,প্রতিটি জাতির উন্নতির ভিত্তি নির্ভর করে সে জাতির শিক্ষার উপর”। বহুল প্রচলিত প্রবাদ “যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত”। তবে কথাটি সুপ্রচলিত সত্যি হলেও বর্তমান প্রেক্ষাপটে “সুশিক্ষা” র উপরই শিক্ষাবিদগন জোর অভিমত ব্যক্ত করছেন। সার্টিফিকেট কিংবা জিপিএ মেধা নির্ধারণের মাপকাঠি নয়।এখন সর্ব ক্ষেত্রে ভাল রেজাল্ট নিয়ে হইচই। আর ভাল রেজাল্ট মানে জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কোচিং সেন্টারের নোট মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় হুবহু লিখে নাম্বার নিয়ে পাশ করাকেই মনে করে অতিউৎসাহী অভিভাবকমহল। বিশ্লেষকগণ এই রকম ভাল রেজাল্টকে কোচিং সেন্টারেরই পাশ মনে করেন।কারণ নোট তৈরির কাজটি করে থাকে কোচিং সেন্টার । শিক্ষাথীরা মুখস্ত করে উত্তর পত্রে হুবহু লিখে আসে ।এই পর্যায়ে নব্বই দশকের আমার একজন সন্মানিত শিক্ষকের কথা তুলে ধরার চেষ্টা করছি ।তিনি এডভোকেট শাহআলম।চকরিয়া উপজেলা আদালতের সিনিয়র আইনজীবী। তিনি আইনজীবি পেশায় আসার আগে চকরিয়া উপজেলাধীন ইলিশিয়া জমিলা বেগম উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। তিনি নবম দশম শ্রেণির বাংলা ক্লাস নিতেন। নোট তৈরী নিয়ে তিনি বলতেন যে,” আমি নোট তৈরীতে বিশ্বাসী নই।প্রতিটি ছাত্রছাত্রীদের নিজের মত করে নোট তৈরীর পারদর্শী করে গড়ে তুলতে চাই।আমি চাই আমার ক্লাসের শিক্ষার্থীদের নোট তৈরী করার জন্য নিজেদের মধ্যে সক্ষমতা আসুক”। তিনি আরও বলতেন, “নোট লিখে পরীক্ষা দেয়া হলে স্কুলের প্রতিটি ছাত্রের উত্তরপত্র একই রকম হবে।তখন পাবলিক পরীক্ষার পরীক্ষকগণ খাতা মুল্যায়ন করার সময় বিষয়টি অনায়াসে বুঝতে পারবে”।তাই শ্রদ্ধেয় শিক্ষক এডভোকেট শাহআলম নোটথেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিতেন। জানি না আজকাল পরীক্ষকদের খাতা মুল্যায়নের মাপকাঠি। কারণ দেখা যায়, সারা বছর কোচিং সেন্টারে শিক্ষার্থীদের ভীড়। ভাল রেজাল্টও করছে অহরহ।জিপিএ ফাইভের ছড়াছড়ি।আবার জিপিএ ফাইভ না পেলে অভিভাবকগণ মনে করে যে তাদের সন্তান প্রতিভাবান নয়।সন্তানদের শুনতে হয় বকাঝকা। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে তা আধো টিক নয়।দেশে কিংবা বিদেশে অনেক ছাত্র ফাস্ট /সেকেন্ড না হয়েও অনেক সৃষ্টিশীল কাজ নিয়ে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। বলা হয়ে থাকে যে,”মেধা একজন মানুষের বিশেষ কিছু গুণ ও দক্ষতা, অপর দিকে প্রতিভা হল একজন মানুষের সৃষ্টিশীল মানষিকতাএবং অনেক দুরূহ কাজে হাত দেওয়া এবং আবিষ্কার করা”। তাই মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে শিক্ষকদের ভূমিকাই অগ্রগণ্য।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,” সবক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ গবেষণা। গবেষণার মাধ্যমে সমাজ এগিয়ে যাবে”।এক অনুষ্ঠানে তিনি খাদ্যে স্বনির্ভরতার জন্য কৃষিক্ষেত্রের গবেষণার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে গবেষণার উন্নতি না হওয়ার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন।শিক্ষাকে বাস্তব জীবনমুখী ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে গবেষণার বিকল্প নেই। মুখস্ত বিদ্যায় অর্জিত সার্টিফিকেট নিয়ে দেশের কোন কাজে আসবে না। উল্লেখ্য যে,ইলিশিয়া জমিলা বেগম উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে মেধাবী শিক্ষকমণ্ডলী দিয়ে পাঠদান করে আসছে।এই স্কুলের সুনামের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক,কৃতজ্ঞতার সহিত কামনা করি ।

বর্তমানে যেকোনো জায়গায় দিন দিন আনুষ্ঠানিকতা বাড়ছে।লোকদেখানো আনুষ্ঠানিকতায় হারিয়ে যাচ্ছে চেতনা।জাতীয় দিবস কিংবা যে কোন সভায় তথ্যনির্ভর আলোচনা হয় না। দায়সারা ভাবে মাইকের সামনে দাঁড়াতে পারলেই হল, সফল অনুষ্ঠান। বক্তার সংখ্যা এত বেশি হয় যে, সল্প সময়ে কোন আলোচকই মর্মার্থ বিশ্লেষণের সময় পায় না।বক্তাকে শুরুতেই কথা সংক্ষিপ্ত করার পরামর্শের ফলে,বক্তব্যে মুল বিষয় তুলে ধরার আগেই সময় শেষ হয়ে যায় ।বক্তার সংখ্যাধিক্যের কারণে প্রধান অতিথি বা আলোচক বক্তব্য রাখার সময় পায় কম। এই নিয়ে অনেক রাজনৈতিক সংগঠনের মিটিংএ প্রধান অতিথি প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা যায়। সমালোচকমহল ইদানীং এই বিষয়টিকে ফটোসেশান বক্তৃতার সভা বলা শুরু করেছে।শুধু তাই নয়, অনেক জায়গায় অতিথিদের ভারে মঞ্চ ভেঙে পড়ার উদাহরণও অনেক।তাই সচেতন মহলের অভিমত,এসবের গুনগত পরিবর্তন না আসলে প্রজন্মের কাছে ইতিহাস চর্চা নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে।স্কুল কলেজে বিভিন্ন জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন হয়। এসব অনুষ্ঠানে গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।কারণ, বিদ্যালয়ই শিক্ষার্থীদের আলোকিত জীবন গড়ার বাতিঘর।শিশুদের মধ্যে সততা নৈতিকতাসহ ইত্যাদির বিকাশ নিয়ে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করে বিদ্যালয়। কক্সবাজার পৌর প্রিপারেটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন,” বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কিংবা প্রধান আলোচক হিসেবে একজন আলোকিত শিক্ষাবিদ কিংবা সৃষ্টিশীল কাজে সফল ব্যক্তিত্বকে আমন্ত্রণ করা দরকার।যিনি নিজের সফলতার গল্প শুনাবে, শিক্ষার্থীদের উত্সাহিত করবে”। শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্টদের মতে দেশবরেণ্য আলোকিত ব্যক্তিত্বদের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ শিক্ষার্থীর জন্য একটা অনুপ্রাণিত স্মরণীয় স্মৃতি আজীবন।উচ্চতর শিক্ষাঙ্গন কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায় যে, সমাবর্তন অনুষ্ঠান বা যেকোনো অনুষ্ঠানে সবসময় একজন বিশ্বজোড়া খ্যাতিমান ব্যক্তি আমন্ত্রিত হয়ে আসেন।তিনি দেশের কিংবা বাইরের ও হতে পারেন ।যার মোটিভেশনাল বক্তৃতা উজ্জীবিত করবে শিক্ষার্থীদের মনন জগৎ।তাই একজন জ্ঞানতাপস প্রধান অতিথি বা আলোচক হিসেবে আমন্ত্রিত করা হলে অনুষ্ঠান আরও অর্থবহ হবে মনে করে শিক্ষার সাথে যুক্তমহল। .

অভিনন্দন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রামের নব নির্বাচিত সচিব,অধ্যাপক রেজাউল করিম। চট্টগ্রাম বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন তিনি এবং চকরিয়ারই কৃতি সন্তান। চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয় কতৃপক্ষ অধ্যাপক রেজাউল করিমের সন্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করেন ।একজন প্রতিভাবান মানুষকে কাছে পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা আনন্দে মেতে উঠে। স্কুলের বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন শিক্ষার্থীদের অভিমত,কক্সবাজারের অনেক প্রতিভাবান মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় দক্ষতার সাথে নিজেদের প্রতিভার সাক্ষর রেখে যাচ্ছেন।তাদের পরিচয় তুলে ধরা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হলে
আমাদের শিক্ষার্থীরা তাদের সান্নিধ্যে উত্সাহিত হবে, অনুপ্রাণিত হবে।

 

  • বদরুল ইসলাম বাদল
    সমাজকর্মী ও সাবেক ছাত্রনেতা।

অনুসরণীয় চেতনা এবং নির্ভয়ে যাতায়াত প্রসঙ্গে –

লেখকঃ- বদরুল ইসলাম বাদল


(ক) কোন কাজই ছোট নয়,প্রসঙ্গে চকরিয়ার জালাল;
অভিজ্ঞ  মানুষদের অভিমত ,”বহুকিছু করার সংক্ষিপ্ত পথ হচ্ছে,তাত্ক্ষণিক  একটি কাজ শুরু করে দেওয়া”।সভ্যতার ইতিহাসে দেখা যায় যে, কেউ হঠাৎ করে বড় হয় নাই।পরিশ্রম ছাড়া সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়।কাজই মানুষকে  জীবনের লক্ষ্য অর্জনের দিকে ধাবিত করে। দারিদ্রতার কারণে কাজ করতে হবে কিংবা বাবার অনেক সম্পদ আছে বিধায় কাজ করার প্রয়োজন নাই কিংবা ছোট কাজগুলো আমার জন্য আসে নাই, এমন চিন্তাধারা গুলো অসুস্থ মানষিকতার পরিচায়ক।দেশে বেকারত্বের সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষিত অনেক ছেলেমেয়েরা চাকরির পিছনে ঘুরছে। কিন্তু চাকরি নামের সোনার হরিণের দেখা খুব কম যুবকদের হাতে ধরা দিচ্ছে।সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,যুবকদের চাকরির পিছনে না ঘুরে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বারবার। তিনি বলেন,” চাকরির পিছনে ছোটার  আমাদের যে মানষিকতা সেটার পরিবর্তন করতে হবে”। তিনি যুব সমাজকে চাকরি করার চেয়ে চাকরি দেওয়ার মনোযোগী হওয়ারও আহবান জানান।যেকেউ  ইচ্ছে থাকলে  কাজ খুঁজে বের করে নিতে পারে।তবে কাজ করার মানষিকতার অভাবের প্রবনতাটাই বেশি তরুণ প্রজন্মের। তাই নানাবিধ অজুহাত তুলে  অভিযোগ করতেই দেখা যায় সচরাচর তাদের ।

বিগত সপ্তাহ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে   জালাল উদ্দীন নামীয় এক ছাত্রের সবজি ব্যবসার কথা ভাইরাল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।তিনি চকরিয়া কলেজের একজন নিয়মিত ছাত্র।চকরিয়া পৌরসভায় বাড়ি । ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত তিনি।  রমজানকে সামনে রেখে তিনি চিরিংগা ষ্টেশনে ফুটপাতে  সবজির  পশরা সাজিয়ে বসে।আর্থিক ভাবে দুর্বল হওয়ায় অন্তত নিজের লেখাপড়ার খরচের জন্য তিনি  সবজির ব্যবসা শুরু করে ।অনেকের  নানাবিধ তিরস্কার মুলক কথা শুনেও  বেচাবিক্রি চালিয়ে যাচ্ছিলেন।এমতাবস্থায় একদিন তার সবজির উপর হামলা হয়,সব সবজি রাস্তায় ছুড়ে ফেলে, অমানবিক ভাবে।।তার এফবি  ষ্ট্যাটাসের মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক  যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় উঠে। তবে স্বস্তির বিষয় হলো সমস্যাটি ইতিমধ্যে  সমাধান হয়ে গেছে। ঘটনাটি যারা করেছে তারা তার ব্যক্তিগত শত্রু কিংবা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কিংবা দূর্বৃত্তরা করেছে তা আজকের আলোচনার বিষয় নয়।যেহেতু মীমাংসা হয়ে গেছে, তাই উভয় পক্ষেরই ধন্যবাদযোগ্য।তবে জালাল উদ্দীন সমাজের কাছে  একটি ইতিবাচক উদাহরণ হয়ে রইল। তিনি গরীব ঘরের ছেলে বা মধ্যবিত্ত বা উচ্চ ভিত্তের ঘরের ছেলে তা বড় কথা নয়,সব শ্রেণীর মানুষেরই জীবিকার তাগিদে   কাজ করতেই হয়।কাজটি ছোট  কিংবা বড় হোক, কাজ কাজই।আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের একটি উক্তি এখানে  উল্লেখযোগ্য, “কোন কাজ ছোট নয়,ছোট সে, যে, কাজকে ছোট ভেবে বিদ্রুপ করে”।আব্রাহাম লিংকলন প্রথম জীবনে  কখনো নৌকা চালিয়ে, কখনো কাঠ কেটে সংসার চালিয়েছেন।বলা যেতে পারে যে, ব্যবসা ছোট হলেও জালাল উদ্দীন যে মানষিক ভাবে তৈরী হতে পেরেছে  সেটাই শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রানিত উদাহরণ। হয়তো তার দেখাদেখি আরও অনেকে উত্সাহিত হবে।সমাজে অনেক অভাবগ্রস্ত পরিবারের সন্তান আছে কাজ করতে চায় না,কিংবা ভরসা পায় না।বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া অনেক ছাত্র বড় টাউনে ভাড়ায়চালিত গাড়ি চালায়।বিভিন্ন অফিসে পার্টটাইম কাজ করে  ।বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান স্কুল জীবনে দুধ বিক্রি করে পড়াশোনার খরচ যোগাড় করতেন।জীবনের সাথে লড়াই করে তিনি পরবর্তী সময়ে  স্বনামধন্য একজন অর্থনীতিবিদ।সফল মানুষ।তাই লড়াকু যুবকদের  উদ্যোগকে সহযোগিতা করা সমাজিক দায়িত্বের পর্যায়ে আসে। আমাদের দেশের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী বিদেশে  গিয়ে পড়াশোনার  অবসরে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে  নিজের খরচের টাকা ইনকাম করার জন্য। হয়তো  সবজি ব্যবসার চেয়েও অনেক নিম্নমানের কাজও করে থাকে তারা ।তাতে লজ্জা পাওয়ার কিছু নাই।তবে নিজেদের দেশেও  শিক্ষার্থীরা এভাবে এগিয়ে আসলে অনেক অভিভাবকের কষ্টের বোঝা কিছুটা হলেও লাঘব হবে,আশাবাদ সমাজের সচেতন মহলের।এই মহলের  মতে”রোজগার অল্প হোক কিংবা বেশি, নিজের উপার্জিত টাকার চলার তৃপ্তিটাই আলাদা”।

জালাল উদ্দীন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। বর্তমান সময়ে রাজনীতির প্রতি সাধারণ মানুষের  ধারণা ইতিবাচক নয়। সরকার সমর্থিত সংগঠনের পদবিধারী হলেই অনেকে মনে করে, টাকা ইনকামের একটি লাইসেন্স পেয়ে গেল।দৃশ্যমান কোন কাজ  না থাকলেও  অনেকে অনেক টাকার মালিক হতে দেখা যাচ্ছে ।অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান একটি সেমিনারে উল্লেখ করেছেন,”রাজনীতি এখন ব্যবসার সম্প্রসারিত অংশ আর টাকা নির্বাচনে পথ করে দাঁড়িয়েছে।দলগুলোর ভিতরে অর্থ ও পেশীশক্তি প্রবেশ করেছে।ফলে রাজনীতি ধনীদের খেলায় পরিণত হয়েছে”।তাই এই মুহূর্তে রাজনীতির প্রতি  সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধাবোধ নাই। ।বাংলাদেশের ইতিহাসে রাজনীতিবিদদের অনেক অর্জন রয়েছে। কিন্তু পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত রাজনীতিতে সততা ক্রমে নির্বাসিত হয়ে যাওয়ার ফলে দিনদিন রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যতদিন সত্ দেশপ্রেমিক মানবহিতৈষী নেতৃত্ব সৃষ্টি না হবে, ততদিন রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের অবসান হবে না।সেই দিনের  ঘটনার পর জালাল উদ্দীন চকরিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়।কিন্তু তার  সংকটকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের  সহযোগিতা ও সমর্থনের  কথা না ভুলবার পরামর্শ থাকবে শুভাকাঙ্ক্ষীদের পক্ষে । নীতি-আদর্শ লালন করে সুস্থ শুদ্ধ রাজনৈতিক সংস্কৃতির পক্ষে জোরালো অবস্থান থাকবে। সেই পথ বেয়েই  জীবনের স্থায়ী  সফলতার চুড়ায় পৌঁছানো সক্ষম।এই চেতনায়  তরুণদের যে যেই দলেরই হোক না কেন কর্মমুখী হবে ।আর্থিক সচ্ছলতা থাকলে কারও লেজুড় রাজনীতি করার প্রয়োজন হয় না।তখন নিজের স্বাধীনতা নিয়ে নীতি নৈতিকতা নিয়ে জনগণের সেবা করার পথ সহজ হবে।।তখনই রাজনীতির হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসার দুয়ার খুলে যাবে।

(খ) সড়কের নিরাপত্তার দাবীতে প্রশাসনের নজরদারি কামনাঃ   চকরিয়া উপজেলাধীন প্রস্তাবিত মাতামুহুরি( সাং) উপজেলার বদরখালী টু চকরিয়া কেবি জালাল উদ্দীন সড়ক নিয়ে  উদ্বীগ্ন  হওয়ার মতো সংবাদ তুলে ধরেন ফেইসবুক বন্ধু সমাজকর্মী আলাউদ্দিন আলো।তিনি  লিখেন,”আতংকের নাম বদরখালী টু চকরিয়া কেবি জালাল উদ্দীন সড়ক। বিকাল হলে সিএনজি গুলো ভাড়া নিয়ে আসতে আগ্রহী হয় না।ড্রাইভাররা বলেন এমন কোন জায়গা নাই ডাকাতি হয় না”।সবচেয়ে যে স্থানে বেশি ডাকাতি হয় তার নাম উল্লেখ করে  তিনি  লিখেন”,বাটাখালী ব্রিজ, রামপুর,কোরালখালী,চৌয়ার ফাঁড়ি ষ্টেশনের দুই পাশে, লাল ব্রীজের পাশের লম্বা রাস্তা, লাল গোলা এবং বদরখালী কলেজের পাশ্ববর্তী এলাকা। তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে উক্ত সড়কে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়াতে আবেদন করেন।রমজান এবং ঈদকে সামনে রেখে সারাদেশে  প্রতিবছর ছিনতাই,অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টিসহ অন্যান্য অপরাধী গুলোর তত্পরতা বেড়ে যায়। মাতামুহুরি নদীবেষ্টিত সাত ইউনিয়ন নিয়ে  মাতামুহুরি উপজেলা (সাং) চকরিয়া সদর থেকে বেরিয়ে  উপকূলীয় জনপদ।ঈদের সদাইয়ের জন্য সাত ইউনিয়নের বাসিন্দা  এবং মহেশখালী উপজেলার মানুষও  চকরিয়ায় মার্কেটিং করতে আসে। উল্লেখিত সড়ক দিয়েই  যাতায়াত করে।গ্রামীণ জনপদ হওয়ায় সন্ধ্যার পরে সড়ক গুলো নির্জনতা জেঁকে বসে।অনাঙ্ক্ষিত অনেক ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনা  হামেশা শুনতে পাওয়া যায় ।আবার টমটম সিএনজির  অদক্ষ চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোতে   অনেক দুর্ঘটনায় মানুষ হতাহত হয়।এসব অনিয়ম প্রতিরোধে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো   আবশ্যক মনে করে এলাকার বাসিন্দারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ফারজানা রহমানের একটি পরামর্শ এখানে তুলে ধরছি, ” আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করলেও,ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে। সচেতন নাগরিক হিসেবে পুলিশের হেল্প লাইনগুলো সবার জানা দরকার এবং এই নাম্বার গুলো মোবাইলের ডায়ালে রাখা প্রয়োজন”।ফলে নিজে সমস্যার সম্মুখীন হলে কিংবা অন্য কাউকে সমস্যার সম্মুখীন হতে দেখলে তাত্ক্ষণিকভাবে প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া যাবে।।

তরুণরাই সমাজ এবং  দেশের ভবিষ্যত। উন্নয়ন অগ্রগতিতে এদের সম্পৃক্ত করতে না পারলে দেশ এগিয়ে যাবার পথে স্থবিরতা নেমে আসবে।তাই তাঁদের সঠিক পথে পরিচালিত করা সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়  দায়িত্ব।নিরাপদ নিরাপত্তার মাধ্যমে রাস্তায়  মানুষের চলাচল আশংকা মুক্ত হউক। প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে।

চোর ও মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সংঘর্ষে তোলপাড় কৈজুরি

টিটুল মোল্লা,,,মাদক বিক্রির ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও একটি ট্রাকের ব্যাটারি চুরির অপরাধের সুত্র ধরে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের তুলাগ্রামের দূর্র্ধষ মাদক ব্যবসায়ী সুমন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মিলে তাদের অপর সদস্য সুফল কর্মকার (৩৮) কে বেধরক পিটিয়ে দুই পা ভেঙ্গে ফেলার খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে কৈজুরিতে। যদিও পুর্বশত্রæতার কথা উল্লেখ করে গত ৩০ শে মার্চ সুফলের বড় ভাই গোপাল কুমার তুলাগ্রামের মিজানুর মোল্যার ছেলে মো: মিরাজ মোল্যা (২৫) কে ১ নং আসামী, মো: সোবাহান মোল্যার ছেলে মো: লাবলু মোল্যা (৩৫) কে ২ নং আসামী, মৃত মো: বাবু মাতুব্বর এ ছেলে সুমন মাতুব্ব (৪০) কে ৩ নং আসামী, মো: আহমত এর ছেলে মো: রাতুল (২২) কে ৪ নং আসামী, মো: সাজু মোল্যার ছেলে মো: আরিফ মোল্যাকে ৫ নং আসামী করে কোতয়ালী থানায় মোট ৫ জন ও অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি এজাহার দায়ের করেছেন। ঐ এজাহারে বলা হয়েছে পুর্বশত্রæতার জের ধরে আমার ভাইয়ের সাথে কথা আছে বলে মিরাজ মোল্যা ও লাবলু মোল্যা গত ২৯ শে মার্চ সাড়ে ১২ টার দিকে বাইপাস সড়ক থেকে মোটরসাইকেল যোগে তুলাগ্রাম নতুন আশ্রয়ন প্রকল্প ঈদগাহ মাঠে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধোর করে। এসময় সুমন জিআই পাইপ দিয়ে সুফলের ডান পায়ের গিড়ার নিচ, রাতুল লোহার রড দিয়ে বাম পায়ের গিড়ার নিচ, মিরাজ লোহার রড দিয়ে গিড়া থেকে মাঝা পর্যন্ত আঘাত করে গুরুতর হাড় ভাঙ্গা জখম করে। এছাড়াও লাবলু ইট দিয়ে সুফলের মাথায় আঘাত করে এবং মামলার ৫ নং আসামী নগত ২৯ হাজার টাকা নিয়ে সকলের চলে যাওয়ার পর আহত সুফলকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, মামলার আসামীগনসহ আহত সুফল একই চক্রের সদস্য হয়ে সকলে দুর্র্ধষ মাদক ব্যবসায়ী সুমনের মাদকের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করে আসছিলো। তবে এদের অনেই মাদকের পাশাপাশি বিভিন্ন বাড়ির মোটর, টিউবওয়েলের মাথার অংশ, বিভিন্ন গাড়ির ব্যাটারি চুরি করে এলাকায় একটি চুরির আতংঙ্ক সৃষ্টি করে রেখেছে। তবে ঘটনার আগের রাতে মামলার ১ নং আসামী লাবলুর চাচাতো ভাইয়ের নিয়ন্ত্রনে থাকা ট্রাকের একটি ব্যাটারী চুরি হয়ে গেলে তা সুফলের উপর দায় চাপিয়ে সুফলকে চোর বলে সনাক্ত করে তারই দলের সদস্যরা। এর আগে সুমনের লুকিয়ে রাখা মাদকের চালান সুফল বিক্রি করে অনেক গুলি টাকা আত্মসাৎ করেছিলো বলে এলাকায় একটি কথা ছড়িয়েছিলো। তবে সকল সদস্য এক চক্রের হওয়ায় তাদের এমন কোন কথা আমলে নেয়নি এলাকাবাসী। এরই ধারাবাহিকতায় লাবলুর ভাইয়ের ট্রাকের ব্যাটারী চুরির সুত্র ও সুমনের মাদকের টাকা নিয়ে সুফলের সাথে বাকবিতন্ডা হওয়ায় এধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছে স্থানীয়রা। গত ২৯ তারিখের কথা উল্লেখ করে এসময় একজন বয়োস্ক ব্যাক্তি রহস্য করে জানান, “বাবায় মারছে গাঁজারে অথবা গাঁজায় মারছে বাবারে” এর আবার কি বিচার। তবে এসব চোর ও মাদক ব্যবসায়ীদের উৎপাতে এলাকার ভাবমুর্তি নষ্টসহ বিভিন্ন বাড়িতে চুরি ও মাদক কান্ডে জড়িয়ে ইউনিয়নের যুব সমাজ আজ ধংসের মুখে চলে যাওয়ার কথা তুলে ধরে এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনেরও দাবি জানান স্থানীয়রা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়নের একাধীক ব্যাক্তিরা জানান, এ গ্রামের দুর্ধষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে খ্যাত সুমন কৈজুরীসহ ফরিদপুর ও আশপাশের জেলা এবং বিভিন্ন স্থানে মাদকের রমরমা ব্যবসা করে আসছে। তবে বিভিন্ন স্থানে ব্যবসায়ের সুবাদে সুমন ফরিদপুরের সিএন্ডবি ঘাট, কানাইপুর, দৌলতদিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের প্রয়োজন হওয়ায় সে কৈজুরির তুলা গ্রামে সবসময় সময় না থাকার ফলে সুফলসহ সুমনের বাকি সাঙ্গপাঙ্গরাই মাদকের সিন্ডিকেটটি নিয়ন্ত্রন করত। এ ছাড়াও তার নামে অনেক গুলি মামলা চলমান ও নিত্য নতুন মামলা হওয়া প্রায়ই তাকে জেলের ভেতরেই থাকতে হয়। ঘটনার বিষয়ে আহত সুফল এর সাথে কথা হলে তিনি ব্যাটারী চুরির ঘটনা নিশ্চিত করে মাদক বিক্রির টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি জানান, ঐ ব্যাটারিটি ভোর রাতেই শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড গাউছিয়া হেটেলের পাশ্ববর্তি একটি ব্যাটারির দোকানে বিক্রয় করা হয়। এদিকে লাবলু ও আরিফ বাইপাস থেকে কথা আছে বলে তুলাগ্রামের ২ নং আশ্রয়ন কেন্দ্র সংলগ্ন একটি বাগানে নিয়ে যায়। এ সময় সুমন, মিরাজ, রাতুলসহ আরো কয়েকজনকে দেখার পর তারা ব্যাটারির সম্পর্কে জানতে চাইলে আমি ব্যাটারি ফেরত দেওয়ার কথা জানাই। পরে ব্যাটারী আনতে শহরে আসলে ততক্ষনে দোকানদার অনত্র সড়ে পরে। তবে দোকানের পাশেই তার ভাড়া বাসায় সুজনের স্ত্রীকে পাওয়া গেলেও তাকে আর পায়নি। এদিকে সুমন আমার সাথে দেওয়ার লোককে ফোন করে নতুন আশ্রয়ন কেন্দ্র ঈদগাহ মাঠে যেতে বলে। পরে আনুমানিক সাড়ে ১২ টার দিকে ঈদগাহ মাঠে পৌছানোর পর সুমন ও তার সাথে থাকা দলবল নিয়ে আমার উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় সুফল আবেগ প্রবন হয়ে জানায়, আমি তো চোর, চুরি করলে সুমনরা কেন আমাকে এভাবে পিটাবে। তাছাড়া ওড়াওতো আমারই সাথে মিশে। আমি কোন অন্যায় করলে আমাকে পুলিশে দিতে পারতো। এ বিষয়ে মাদক ব্যবসায়ী সুমন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমার মাদক বিক্রির প্রায় ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে সুফল। এ ছাড়াও ঐ দিন সুফলের বিরুদ্ধে একটি ট্রাকের ব্যাটারী চুরির অভিযোগ ছিলো। তাই তাকে মারধোর করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার বিষয়ে সুমনের মা চুরির অভিযোগে সুফলকে মারধোর করার বিষয়টি লোকমুখে শুনতে পেলেও সুমনের মাদক ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করা সত্তে¡ও সুমন শুনছেনা বলে জানান। এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ এম এ জলিল মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান ঘটনার সাথে জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়াও তদন্তে মাদককান্ড বা অন্য কিছু থাকলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এ দিকে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত পুর্বক এসব চোর ও মাদকব্যবসায়ীদের নির্মূল করে ইউনিয়নকে আধূনিক ও মাদকমুক্ত ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছে স্থানীয়রা।

রমজানের শুরুতেই কৈজুরীর নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানের আশ্রয় কেন্দ্রে ঈফতার ও দোয়ার আয়োজন

টিটুল মোল্লা: রমজানের শুরুতেই ফরিদপুর সদর উপজেলার ১০ নং কৈজুরী ইউনিয়নে, ক্ষমতাসীন দলের মনোনিত নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মো: ছিদ্দিকুর রহমান এর ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের তুলা গ্রাম আশ্রয়ন কেন্দ্র সংলগ্ন মসজিদে ঈফতার ও রমজানের তাৎপর্য তুলে ধরে এক দোয়া মাহফিল এর আয়োজন করা হয়। ২৪ শে মার্চ শুক্রবার রোজার প্রথম দিনে আশ্রয়ন কেন্দ্রের ১০০ পরিবারের অন্তত ৪ শতাধীক জনগনসহ আশপাশের অনেকেই এ ঈফতার ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহন করেন। নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষ হতে সেলিম মোল্ল্যা, জাহাঙ্গীর হোসেন, নুরু শেখ, গফুর ব্যাপারী, আবেদ শেখসহ বেশ কয়েকজন কর্মি সমর্থক এসব ঈফতার সামগ্রী সকলের হাতে তুলে দেন। এ দিকে ১ম রোজায় এ সব ঈফতার পেয়ে আশ্রয়ন কেন্দ্রের উপকার ভোগীরা, নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। একই সাথে আশ্রয়ন কেন্দ্রের সুখে দু:খে চেয়ারম্যানের সর্বদা পাশে থাকার আশাবাদ ব্যাক্ত করে তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন এ সব উপকার ভোগীরা। এ বিষয়ে নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মো: ছিদ্দিকুর রহমান সাথে কথা হলে, ১ম রোজায় আশ্রয়ন কেন্দ্রের ঈফতার মাহফিলে সকলের উপস্থিতি তাকে অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন। তিনি বলেন, “মহান সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টির প্রত্যাশায় আমরা মুসলমানরা এক মাস ধরে রোজা পালন করি, যার মূল দর্শন হলো আত্মসমর্পণ। ধৈর্য, সংযম আর আত্মশুদ্ধির শিক্ষায় দীক্ষিত হয়ে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সৌহার্দ্য, মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত হওয়ার মাস। এ সময় তিনি কৈজুরী ইউনিয়নবাসীকে মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তাকে নৌকা প্রতিকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করায় সকলের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। একই সাথে তার প্রতি আস্থা রেখে নৌকা প্রতিকে মনোনয়ন দেওয়ায় আওয়ামীলীগের দলীয় সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সহ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি-সম্পাদককে ধন্যবাদ জানান। একই সাথে সুমহান সেবার ব্রত নিয়ে আশ্রয়ন কেন্দ্রসহ ইউনিয়ন বাসীর সর্বদা পাশে থাকার প্রতিশ্রæতি দিয়ে কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদকে একটি আধুনিক ও সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য পবিত্র রমজান উপলক্ষে তুলা গ্রামের এই আশ্রয়ন কেন্দ্রে গত বুধবার নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মো: ছিদ্দিকুর রহমান এর ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে ঈফতারী রান্নার একটি পাত্র, ৩ টি ফ্যান ও নগত অর্থ প্রদান করা হয়। এ ছাড়াও এ কেন্দ্রে বসবারত উপকারভোগীদের বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে তাদের কষ্ট লাঘব করার চেষ্টা চালিয়ে আসছেন তিনি। এ বছরের পবিত্র রমজান মাসে ইউনিয়নের বিভিন্ন মসজিদে পর্যায়ক্রমে ঈফতারের আয়োজন করারও ঘোষনা দিয়েছেন তিনি।

1 2 3 357