বাবুনগরীর নেতৃত্বে হেফাজতের নতুন কমিটি ঘোষণা

ঢাকা- অবশেষে বহুল আলোচিত-সমালোচিতসংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টায় খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদরাসায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটিতে জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির এবং নুরুল ইসলাম জিহাদীকে মহাসচিব হিসেবে বহাল রাখা হয়েছে। কমিটির বর্তমান পরিধি ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট।

সেখানে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত আমীর শাহ আহমদ শফীর বড় ছেলে মো. ইউসুফকেও রাখা হয়েছে।

কমিটিতে মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, মাওলানা মুহিব্বুল হক (সিলেট), মাওলানা আবদুল কুদ্দুসসহ (ফরিদাবাদ) কয়েকজনকে নায়েবে আমির হিসেবে রাখা হয়েছে।

যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে রয়েছেন- মাওলানা সাজিদুর রহমান (বি-বাড়িয়া), মাওলানা আবদুল আউয়াল (নারায়নগঞ্জ) ও মাওলানা লোকমান হাকিম। সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনিত হয়েছেন মাওলানা মীর ইদ্রিস।

তবে নতুন কমিটিতে বাদ পড়েছেন বিলুপ্ত কমিটির যুগ্মমহাসচিব মামুনুল হক ও সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীসহ অনেকেই। বিতর্কিত হওয়ায় তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের একটি বড় কওমি মাদরাসা এবং হেফাজতে ইসলামের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসা। এই মাদরাসা থেকে ২০১০ সালে হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

কিন্তু দলটির সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর হেফাজতে ইসলাম রাজনৈতিক দলের দিকে মোড় নেয়। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ হেফাজতের কমিটিতে যুক্ত হতে থাকেন।

একপর্যায়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন এর আমির জুনাইদ বাবুনগরী।

ওই দিনই কয়েক ঘণ্টা পর বিলুপ্ত কমিটির উপদেষ্টা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীর নেতৃত্বে আহ্বায়ক কমিটিতে প্রথমে আমির জুনাইদ বাবুনগরী ও মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদীকে রাখা হয়। এর পর তাদের সালাহ উদ্দিন নানুপুরী ও মিজানুর রহমান চৌধুরীকে যুক্ত করে কমিটির সদস্য সংখ্যা পাঁচ জন করা হয়।

স্বাধীনতার ৫০ বছর: ছয় দফা ঘোষণা করে যেভাবে নেতা হয়ে ওঠেন শেখ মুজিব

ছয় দফা ঘোষণার পর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বা ন্যাপ-এর পূর্ব পাকিস্তান প্রধান অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ শেখ মুজিবুর রহমানকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “আপনি এই যে ৬ দফা দিলেন তার মূল কথাটি কী?” আঞ্চলিক ভাষায় এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন শেখ মুজিব: “আরে মিয়া বুঝলা না, দফা তো একটাই। একটু ঘুরাইয়া কইলাম।”

ঘুরিয়ে বলা এই এক দফা হলো পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন অর্থাৎ স্বাধীনতা।

এর আগে বিভিন্ন সময়ে এই অঞ্চলের স্বাধিকার আন্দোলনের দাবী উঠেছে কিন্তু ছয় দফার দাবির মধ্য দিয়ে এটি একক এজেন্ডায় পরিণত হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে লাহোরে বিরোধী দলগুলোর এক সম্মেলনে এই দফা পেশ করেন। অনেকে এসব দাবিকে “রাজনৈতিক বোমা” বলে উল্লেখ করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও যুক্তরাষ্ট্রে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রওনক জাহান বলেন, এর আগে বাঙালির রাষ্ট্রভাষা থেকে শুরু করে আরো অনেক এজেণ্ডা ছিল। কিন্তু ছয় দফা দেওয়ার পর থেকে জাতীয়তাবাদের বিষয়টি একমাত্র এজেন্ডায় পরিণত হল।

”তখন লোকজনকে সংগঠিত করা অনেক বেশি সহজ হল। হয় আপনি আমাদের পক্ষে অথবা বিপক্ষে,” তিনি বলেন।

”একারণে শেখ মুজিব খুব দ্রুত সকল মানুষকে জাতীয়তাবাদী এজেন্ডার পক্ষে নিতে পারলেন এবং ৭০-এর নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে দেশকে স্বাধীনতার চূড়ান্ত পথে নিয়ে গেলেন,” রওনক জাহান বলেন।

ছয় দফার পটভূমি

ছয় দফা কোন রাতারাতি কর্মসূচি ছিল না। এর প্রস্তুতি ছিল দীর্ঘদিনের। উনিশ’শ চল্লিশ সালের লাহোর প্রস্তাব, ‘৪৭ সালের ভারত ভাগ, ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ‘৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন – এসবই ছয় দফার ভিত তৈরি করেছে।

রাজনৈতিক ইতিহাসবিদ মহিউদ্দিন আহমদ তার ‘আওয়ামী লীগ: উত্থানপর্ব ১৯৪৮-১৯৭০’ গ্রন্থে লিখেছেন, “ছয় দফা হঠাৎ করে আসমান থেকে পড়েনি। দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি ও ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এর তাত্ত্বিক ভিত্তি তৈরি হচ্ছিল। একই সঙ্গে তৈরি হয়েছিল রাজনীতিবিদদের সঙ্গে অর্থনীতিবিদদের যুগলবন্দী, স্বাধিকারের দাবিতে যাঁরা এক মোহনায় মিলেছিলেন।”
সুএঃ BBC

মালালার ‘মানুষ কেন বিয়ে করে, বুঝি না’ মন্তব্যে উত্তাল পাকিস্তান

সবচেয়ে কম বয়সী নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি তালেবানদের হাতে গুলিবিদ্ধ হন। সেই থেকেই তিনি বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত। ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল বিষয়ক বিখ্যাত ‘ভোগ’ পত্রিকার জুন সংখ্যায় তাকে এবার প্রচ্ছদে স্থান দেওয়া হয়েছে। মালালার একটি সাক্ষাৎকারও প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যায়।

নোবেলজয়ী মালালা ম্যাগাজিনটির সঙ্গে ব্যক্তিজীবন, বিশ্বাস, পড়াশোনা, টুইটারে কর্মকাণ্ড এবং অ্যাপলটিভি প্লাসের সঙ্গে তার নতুন অংশীদারিত্ব নিয়ে কথা বলেছেন। সেই সাক্ষাৎকারে মালালার কাছে বিয়ের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারি না, কেন সবাই বিয়ে করেন? দু’জনের সম্পর্ক একটি পার্টনারশিপও হতে পারে।

মালালার এমন মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা চলছে। একই সঙ্গে পাকিস্তানে মালালার মন্তব্য নিয়ে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। এই মন্তব্য মালালাকে পাকিস্তানে গরম পানিতে ফেলে সমালোচনার তীরে বিদ্ধ করতে সময় নেয়নি। দেশটির সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে ধর্মীয় নেতা, শিক্ষাবিদ এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সাধারণ ব্যবহারকারীরাও মালালাকে এক হাত নিয়েছেন। অনেকে তার বিরুদ্ধে পশ্চিমা সমাজ-সংস্কৃতি ও ভাবধারার বিস্তার মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন।

পাকিস্তানের পার্লামেন্টেও মালালা ইউসুফজাইয়ের বিয়ে-বিতর্কের মন্তব্যের সমালোচনা হয়েছে। এমনকি দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), জামায়াত-ই-ইসলামি ও জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলামের সদস্যরা মালালা বিয়ের মন্তব্য পরিষ্কার করতে তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

মালালা ইউসুফজাই বলেন, প্রত্যেকে তাদের সম্পর্কের গল্পগুলো সামাজিক যোগাযোগে শেয়ার করছেন। আমি এখনও বুঝি না মানুষ কেন বিয়ে করে? আপনার জীবনে যদি একজন মানুষের দরকার হয়, তাহলে কেন আপনাকে বিয়ের কাগজে স্বাক্ষর করতে হবে? কেন শুধুমাত্র এটি এক ধরনের পার্টনারশিপ হতে পারে না?’

মালালার বাবা টুইটে বলেন, মালালার মন্তব্যের সত্যতা নেই। গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মালালার মন্তব্যকে প্রেক্ষাপটের বাইরে নিয়ে গেছে এবং নিজেদের ইচ্ছে মতো ব্যাখ্যা করছে।

ভয়াবহ আগুন লেগেছে রাজধানীর সাততলা বস্তিতে, নিয়ন্ত্রণে ১৮ ইউনিট

রাজধানীর মহাখালীর সাততলা বস্তিতে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৭ জুন) ভোর ৪টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার কামরুল হোসেন বলেন, আগুন লাগার খবরে ফায়ার সার্ভিসের একে একে ১৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গেছে। ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের সঙ্গে বস্তির বাসিন্দারাও আগুন নেভাতে চেষ্টা করছেন।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনো কোনো হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।কাঠ ও টিনশেডের তৈরি মহাখালীর এই বস্তিতে প্রায় দুই হাজার ঘর রয়েছে বলে জানা গেছে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে তাও প্রাথমিকভাবে জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী ২ ঘন্টার চেষ্টার পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে আগুন।

1 2