মসজিদে ঈদ জামায়েত হবে থাকছে না কোলাকুলি

ইসলাম ডেস্ক-দেশে আগামী ২১ জুলাই উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের মতো এবারও ঈদগাহ বা খোলা মাঠের পরিবর্তে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করতে নির্দেশনা দিতে যাচ্ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

এ ছাড়া কোলাকুলিও করা যাবে না। এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তরা জানিয়েছেন, সবাইকে বাসা থেকে অজু করে মাস্ক পরে মসজিদে যেতে হবে। কাতারে দাঁড়াতে হবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে। নামাজ শেষে কোলাকুলি বা হাত মেলানো যাবে না। এসব স্বাস্থ্যবিধি সবাইকে মানতে হবে।

আজ রোববার জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় বলা হয়, ঈদুল আজহার প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাহের পরিবর্তে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে। সারাদেশের বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বেসরকারি সংস্থা প্রধানরা জাতীয় কর্মসূচির আলোকে নিজ নিজ কর্মসূচি অনুযায়ী ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন।
এ ছাড়া কোরবানি করা পশুর রক্ত, বর্জ্যে যাতে পরিবেশ দুর্গন্ধময় না হয়, সে বিষয়ে সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মানবতার পুলিশ এস আই মোঃ নাজমুল ইসলাম

আমান আহম্মেদ সজীব //
সাব ইন্সপেক্টর মোঃ নাজমুল ইসলাম বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদানের পর প্রথম কর্মস্থল হিসেবে (২৭ মার্চ ২০২০)শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানায় যোগদান দান করেন। সখিপুর থানায় যোগদান করলে বিভিন্ন রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। তবে মানুষের জন্যে কিছু করতে পারলে কি যে আনন্দ অনুভূত হয় সেটা পুলিশের চাকরিতে না আসলে বুঝতে পারতাম না। এমন অনুভূতি প্রকাশ করেন এস আই নাজমুল ইসলাম।

এস আই নাজমুল ইসলাম, পিতা: হাফেজ মোঃ শামসুল আলম , গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার, তেলিহাটি ইউনিয়নের উওর পেলাইদ গ্রাম এর বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স করেছে। সংসারে দুই ভাই এক বোন। বোন বড় , বিবাহিত। ছোট ভাই এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছে। আর বিবাহিত স্ত্রী উওরা মাইলস্টোন কলেজে এবার এইস এসসি পরিক্ষা দিবে। বাবা মসজিদের ইমাম। মা গৃহিণী।

একটি অভিযোগের তদন্তে গিয়েছিলো সখিপুর থানাধীন দক্ষিণ তারাবুনিয়া ইউনিয়নের প্রধানিয়া কান্দি , ৯ নং ওয়ার্ড । বাদী জনৈক কালা মিয়া দেওয়ানের বাড়িতে। ৬৮ বছর বয়সী কালা মিয়া দেওয়ান তার স্ত্রী,সহ ছেলে , মেয়েদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন সখিপুর থানায় । সমাজের মুরুব্বী সহ আশেপাশের লোকজনদের ডাকলে। প্রায় ৩ ঘন্টা বসে কথা শুনেন এস আই নাজমুল ইসলাম । প্রায় আড়াই থেকে তিন বছর যাবত নিজে রান্না করে খেতে হয়। কালা মিয়া দেওয়ানকে। গ্রামে গ্রামে হেঁটে নারিকেল কিনে বাজারে বিক্রি করে কালা মিয়া দেওয়ান। স্ত্রী ও পরিবার পরিজন ছাড়া বুকে কষ্ট জমিয়ে এভাবেই কালা মিয়ার বৃদ্ধ বয়স কেটে যাচ্ছে। জানাযায় কালা মিয়া দেওয়ানের তিন ছেলে এক মেয়ে রয়েছে তার । শত পরিশ্রমের ফলে এবং বাড়িতে পালা গরু বিক্রি করে প্রবাসে পাঠিয়েছে ছেলেকে । কিন্তু প্রবাসে যাওয়ার পর সে বৃদ্ধ বাবার খোঁজ খবর রাখেনি। আরেক ছেলে বউ বাচ্চা নিয়ে সুখের সংসারে দিন কাটাচ্ছে ঢাকা সহড়ে। সে ও বাবার খোঁজ খবর রাখে না। স্ত্রীর সাথে মনমালিন্য হওয়ার পর থেকে স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে পাশে আলাদা বাড়ি করে থাকে স্ত্রী ও মেয়ে। কালা মিয়ার বড় ছেলে কৃষি কাজ করে । তাকে ডাকা হলে , কাঁচি হাতে করে ক্ষেত থেকে আসে। এস আই নাজমুল ইসলাম জিজ্ঞেস করলো আপনারা থাকতে আপনার বাবা রান্না করে খেতে হয় কেন ? বড় ছেলে বললো স্যার আমি আমার বাবাকে খাওয়াইলে আমার মা,ও বোন আমাকে মারধর করতে আসে। আমার সাথে ঝগড়া করে। এই জন্য আমি তাদের ভয়ে আমার বাবাকে খাওয়াইতে পারি না।
বৃদ্ধ বাবা নিজ বাড়ির আম গাছের আম পারতে গেলেও মার খেতে হয় স্ত্রী ও মেয়ের হাতে।
বাবার বয়সী কালা মিয়ার পড়নের লুঙ্গিটি ছেঁড়া, গায়ে থাকা পাঞ্জাবি ও গেঞ্জিটি ও ছেড়া, মনে হচ্ছে কয়েক বসর যাবত গায়ে থাকা গামছাটি । গামে বেজা গামছাটিও অনেক পোড়ানো বিভিন্ন জায়গায় ছিদ্র। এমন একটি ঘটনা দেখে মানবতার পুলিশ এস আই নাজমুল ইসলাম
তার চোখের পানি ধরে রাখতে পারলো না।

সারাদেশের মতো শরীয়তপুরে ও লকডাউন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।পাশে থাকা বাজারের সলক দোকান পাঠ বন্ধ। তখন এস আই নাজমুল ইসলাম সখিপুর উত্তর তারাবুনিয়া চেয়ারম্যান বাজারের এক কাপর ব্যবসায়ী মেম্বার হালিম মোল্লাকে ফোন দেন। বল্লো ভাই আমার কিছু জরুরী জামা কাপড় লাগবে। হালিম ভাই তার ছেলেকে দোকানে পাঠাল । বাবার বয়সী কালা মিয়াকে নিয়ে গেলো দোকানে। ২টা লুঙ্গি , ২ টা পাঞ্জাবি, ১ টা গেঞ্জি, গামছা ও ১ জোড়া জুতা কিনে দিলো এস আই নাজমুল ইসলাম। প্রথমে নিতে চায় নাই। খালি চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলো বৃদ্ধ বাবার বয়সী কালা মিয়া দেওয়ান। তখন এস আই নাজমুল ইসলাম নিজে বাবার বয়সী কালা মিয়া দেওয়ান কে নতুন লুঙ্গি, পাঞ্জাবি ও গেঞ্জি পরিয়ে দেয়। তখন বৃদ্ধ কালা মিয়া দেওয়ান । এই মানবতার পুলিশ এস আই নাজমুল ইসলাম এর দিকে তাকিয়ে দু চোখের অশ্রু ছেড়ে দিলো কালা মিয়া দেওয়ান । তার সাথে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি আরো অনেকেই।

পুলিশের চাকরি করেও মানবতায় মানুষের পাশে।
এমন কথা বলে আল্লাহর দরবারে দু হাত তুলে দোয়া করলেন বৃদ্ধ বাবার বয়সী কালা মিয়া দেওয়ান।

এস আই নাজমু ইসলাম বলেন প্রথমে আমি স্যালুট
করি পুলিশি চাকুরি কে এই পুলিশের চাকরিতে না আসলে বুঝতাম না মানুষের জন্য কিছু করতে পাটারা কত যে আনন্দ অনুভূত হয় সেটা পুলিশের চাকরিতে না আসলে বুঝতে পারতাম না। তাই মহান আল্লাহ তায়ালা যেন সর্বদা সুস্থ রাখেন। এবং মানুষের কল্যাণের জন্য যেন কাজ করতেপারি। আমিন।

অসহায় রাস্টন মিয়াকে অটোবাইক কিনে দিলেন উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

আমান আহমেদ সজিবঃ
শরীয়তপুরের সখিপুর থানার চরভাগা ইউনিয়নের পশ্চিম ঢালী কান্দি বাসিন্দা। ৬ সদস্যের সংসারে আয়ের একমাত্র অবলম্বন ছিলো তার একটি ব্যাটারিচালিত (অটোবাইক)। ঋণের টাকায় কেনা সেই অটোবাইকটি মঙ্গলবার (৭ জুলাই) রাতে চুরি হয়ে যায়। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ে পরিবারটি।

বিষয়টি নিয়ে অসহায় রাস্টন মিয়ার ছেলে আবজাল গাজী ফেসবুকে আবেগঘন একটা স্ট্যাটাস দেন “বুধবার ফেসবুকে রাস্টন মিয়ার ছেলে আবজাল গাজী লেখেন, ‘আমার বাবা, অটোবাইক চালিয়েই আমাদের সংসারের ঘানি টেনে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সেই সম্বলটাও নিজেদের বাড়ির সামনে থেকে কারা যেন নিয়ে গেছে। এভাবেই জরাজীর্ণ জীবন। আর এই অটোরিকশাটাও ঋণের টাকায় কেনা ছিলো। কিছু দিন আগে নতুন ব্যাটারিটাও ধারের টাকায় কেনা। এখন পথে নামা ছাড়া আর কোনো উপায় নাই। বশির মাস্টার কাকার বাড়ির পাশে রেখে প্রতিদিনের ন্যায় আজও বাবা বাসায় যান; কিন্তু ফিরে এসে দেখেন অটোবাইকটি নাই। কী করবো, দিশেহারা। একটা গাড়ি একটা স্বপ্ন। গাড়ির চাকাটা থেমে গেছে। এবার মনে হয় স্বপ্নটাও থেমে যাবে!”।

এই স্ট্যাটাস দেখে শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম নামুল হক শামীম এমপি ওই ছেলের সাথে কথা বলেন। শুক্রবার বিকালে ভেদরগঞ্জ বাজার থেকে রাস্টন মিয়ার পছন্দমতোএক লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা মূল্যের নতুন অটোবাইক কিনে দেন।

উপমন্ত্রীর পক্ষে শরীয়তপুর জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও চরভাগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান সিকদার অটোবাইক ও চাবি বুঝিয়ে দেন রাস্টন মিয়াকে। এছাড়াও দুর্দশার কথা শুনে রাস্টন মিয়ার সন্তানদের লেখাপড়ার দায়িত্বও নেন উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম।

আবেগে আপ্লুত হয়ে রাস্টন মিয়া বলেন, ‘আমাগো মন্ত্রী এনামুল হক শামীম সাহেবের জন্য দোয়া করি। আমি ও আমার পরিবারের সবাই তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আল্লাহ তার ভাল করুক।’

এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান সিকদার বলেন, জননেতা এ কেএম এনামুল হক শামীম মাটি ও মানুষের জন্য রাজনীতি করে। তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখে অসহায় ব্যক্তিকে নতুন অটোবাইক কিনে দিলেন। পাশাপাশি অটো চুরির ঘটনা উদঘাটন ও দোষীদের খুঁজে বের করার জন্য সখিপুর থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেন। তিনি সবসময় এলাকার মানুষের পাশে ছিলো, আছে ও আগামীতেও থাকবে।ইনশাআল্লাহ

এদিকে নতুন অটোরিকশা কিনে দেয়ায় উপমন্ত্রী শামীমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফেসবুকে আবজাল গাজী আবারও লেখেন, ‘ধন্যবাদ এ কে এম এনামুল হক শামীম ভাই, মাননীয় পানিসম্পদ উপমন্ত্রী, এমপি শরীয়তপুর-২ আমার বাবার অটোবাইক গত ৭ জুলাই চুরি হয়ে যাওয়ায় আমি ফেসবুকে ঘটনাটি নিয়ে কয়েকটা পোস্ট দেই। আমি ও আমার পরিবারের সবাই ভেঙে পড়েছি। এই ঘটনা মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের নজরে এলে তিনি নিজে থেকে আমাকে একাধিক বার ফোন দেন। আমাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। গাড়ির ব্যবস্থা করে দবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এমন এমপি, মন্ত্রী সর্বত্র বাংলায় হোক, তাহলে তো সোনার বাংলা হবেই। যারা আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে সবারই খোঁজ খবর রাখেন। ধন্য এমন জনপ্রতিনিধি পেয়ে।’

এর আগে শুক্রবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সখিপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ষ্টেশন বাজারে সাথে কার্পেটিং রাস্তা ভেঙে পড়ে যাওয়ায় দ্রুত মেরামতের জন্য জিওব্যাগ ডাম্পিং প্লেসিং কার্যক্রমের খোঁজখবর নেন ও নির্দেশনা দেন উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম।

চলমান লকডাউনের মেয়াদ বাড়লেও যেসব ক্ষেত্রে শিথিল থাকবে বিধিনিষেধ

১৪ জুলাইয়ের পর চলমান বিধিনিষেধ ফের বাড়তে পারে! রোববার (১১ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন সম্ভাবনার কথাই জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

তবে এ বিষয়ে সোমবার (১২ জুলাই) রাতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আগামী ২১ জুলাই বুধবার দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ( চাঁদ দেখা গেছে, কোরবানির ঈদ ২১ জুলাই)

এমন অবস্থায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়লেও নির্দিস্ট কিছু ক্ষেত্রে শিথিল করা হতে পারে বিধিনিষেধ।

জানা গেছে, কোরবানির পশু কেনাবেচা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের জন্য কিছুটা শিথিল করা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। একই সঙ্গে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলাচল, শপিংমল ও দোকান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে। তবে সবকিছু চূড়ান্ত হবে আগামী মঙ্গলবার (১৩ জুলাই)।

আজ রোববার (১১ জুলাই) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা যদি সংক্রমণ কমাতে চাই তবে এই প্রক্রিয়াটি (বিধিনিষেধ) আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে বিভিন্ন পর্যায়ে। আমাদের কোরবানির হাট আছে। এই দুটি বিষয় কীভাবে সমন্বয় করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাতে পারব, সেটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। আমরা হাঁটগুলোতে কতটা নিয়ন্ত্রিত উপায়ে করতে পারি সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।’

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ১৪ দিনের সুফল আমাদের ধরে রাখতে হবে। তবে, যে পরিমাণ রোগী বাড়ছে তাতে বিধি-নিষেধ এ মুহূর্তে তুলে নেওয়া হয়তো সম্ভব হবে না। তবে আগামী দুইদিনের পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাবে। ঈদ এবং অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে কিছুটা শিথিলতা থাকবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এর আগে বিকেলে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির পরামর্শে চলমান বিধিনিষেধ আবারও বাড়তে পারে।

করোনা সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে কঠোর বিধিনিষেধ ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়িয়ে গত ৫ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

গত ২৪ জুন জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সারাদেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউনে’র সুপারিশ করা হয়। কমিটির সুপারিশের আলোকে ২৮ জুন থেকে ৩০ জুন তিন দিন সীমিত পরিসরে লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। এরপর ১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী শুরু হয় কঠোর বিধিনিষেধ। যা চলমান অবস্থায় গত ৫ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনে বাড়ানো হয়।

হাসপাতালে ৩০০ টাকা খাবার বরাদ্দে রোগী পায় ৭০ টাকার খাবার এ দুর্নীতি’: খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিকের হাতে হাতকড়া

‘৩০০ টাকা বরাদ্দে রোগী পায় ৭০ টাকার খাবার’, এমন খবর প্রকাশ করে ঠাকুরগাঁওয়ের তিন সাংবাদিক ডিজিটাল আইনের মামলার শিকার হয়েছে৷ তাদের একজনকে গ্রেপ্তারের পর অসুস্থতার কারণে আদালত জামিন দিয়েছেন৷

খবরটি ছিলো ঠাকুরগাঁও সদর আধুনিক হাসপাতাল নিয়ে৷ সপ্তাহ খানেক আগে বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে এ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় ওই হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য প্রতিদিন খাবারের বরাদ্দ ৩০০ টাকা৷ কিন্তু তাদের প্রতিদিন যে খবার দেয়া হয় তার দাম ৭০ টাকা৷

প্রতিবেদনগুলোতে খাবারের ছবি, রোগীদের অভিযোগ ও কর্তৃপক্ষের বক্তব্য প্রকাশ করা হয়৷ কিন্তু এরপর গত শুক্রবার তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. নাদিরুল ইসলাম৷ মামলায় যে তিনজনকে আসামি করা হয় তারা হলেন, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের তানভীর হাসান তানু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের আব্দুল লতিফ লিটু এবং নিউজ বাংলা টুয়েন্টিফোর ডটকমের ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি রহিম শুভ৷

তানভীর হাসান তানু শনিবার সন্ধ্যায় সদর থানায় গেলে পুলিশ তাকে ওই মামলায় আটক করে৷ রোববার তাকে আদালতে হাজির করা হলে অসুস্থতার কারণে আদালত জামিন দেন৷ মামলার আসামি অন্য দুইজন সাংবাদিকের একজন রহিম শুভ জানান, ‘‘আটকের পর তানুকে হাতকড়া পরিয়ে থানার লকআপে রাখা হয়৷ তিনি করোনা পজেটিভ ছিলেন, দুইদিন আগে নেগেটিভ হন৷ গভীর রাতে তার শ্বাসকষ্ট হলে থানা থেকেই তাকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ সেখান থেকেই রবিবার তাকে একই অবস্থায় আদালতে পাঠানো হয়৷

জামিন পাওয়া সাংবাদিক তানভির হাসান তানু অভিযোগ করেন, ‘‘গোপনে মামলা করায় আমি জানতাম না৷ থানায় পেশাগত কাজে গেলে আমাকে আটক করা হয়৷ আমি বারবার অসুস্থতার কথা বলার পরও আমাকে হাতকড়া পরানো হয়৷’’

তিনি বলেন, ‘‘আমার প্রতিবেদনে কোনো অসত্য তথ্য নাই৷ নানা ফলসহ হরলিক্স দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয় না৷ বাজার যাচাই করে দেখেছি যে খাবার দেয়া হয় তার দাম ৭০-৮০ টাকার বেশি না৷ অথচ বরাদ্দ ৩০০ টাকা৷ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কও আমাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন করোনার ব্যস্ততার কারণে নজর দিতে পারেননি, কিছু সমস্যা হয়েছে৷ তারপরও মামলা করা হলো৷’’

তিনি অভিযোগ করেন, এই মামলায় স্থানীয় এমপির হাত আছে৷ কারণ খাবারের ঠিকাদার এমপির কাছের লোক৷ আর মামলা করার কথা ঠিকাদারদের কিন্তু মামলা করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক৷

তিনি জানান, ‘‘ওই প্রতিবেদনের পর ৩০০ কোটি টাকার আরেকটি অনিয়ম নিয়ে আমরা কাজ করছিলাম৷ ধারণা করি সে কারণেই মামলা হয়েছে৷’’ তিনি বলেন, সাংবাদিকদের চাপে রাখতে এখন মামলার কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে৷ দুর্নীতি অনিয়মের খবর প্রকাশ করায় এর আগেও একইভাবে মামলা হয়েছে৷ এটা নিয়ে সাংবাদিকরা আতঙ্ক আছেন৷

আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. নাদিরুল ইসলাম মামলার অভিযোগে বলেছেন, তারা তদন্ত করে দেখেছেন ওই প্রতিবেদনের তথ্য সত্য নয়৷ ওই খবর প্রকাশ হওয়ায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে৷ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷

তিনি রোববার সন্ধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এবছর করোনা বেড়ে যাওয়ার পর কয়েকটা দিন অসঙ্গতি দেখা দেয়৷ দুধ পাওয়া না যাওয়ায় দুধ দেয়া হচ্ছিল না৷ আমরা ঠিকাদারকে বলেছি দুধের সমপরিমাণ দামের ডিম দিতে৷ তারা লিখেছেন, ৭০ টাকার খাবার দেয়া হয়৷ আমার প্রশ্ন ৭০ টাকায় তিন বেলা খাবার দেয়া কি বাংলাদেশে সম্ভব?’

তার দাবি, ‘‘প্রতিবেদনে আমাদের বক্তব্য দেয়া হয়েছে৷ তারা আসলে হাসপাতালে আসেননি, আমাদের সঙ্গে কথাও বলেননি৷’’

ঠিকাদারের পরিবর্তে তিনি মামলা কেন করলেন জানতে চাইলে বলেন, ‘‘ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্দেশে মামলা হয়েছে৷ স্থানীয় এমপি এই কমিটির সভাপতি৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘এর আগেও কিছু প্রতিবেদন হয়েছিল সামাজিক দূরত্ব না মানা এবং মাস্ক না পরা নিয়ে৷ তখন আমরা সাংবাদিকদের অনুরোধ করেছিলাম আর প্রতিবেদন না করতে৷ সমস্যার সমাধান যদি হয়ে যায় তাহলে প্রতিবেদন করা কী দরকার৷ কারণ প্রতিবেদন করলে জনরোষ হয়৷ চিকিৎসকরা বিপদে পড়েন৷ কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেননি৷’’

তার কথা , ‘‘আমরা করোনার জন্য এত কাজ করছি সেটা নিয়ে প্রতিবেদন না করে অসত্য প্রতিবেদন করা হচ্ছে৷’’

কারফিউ জারি সমাধান নয়: মির্জা ফখরুল

ঢাকা- করোনা নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি কোনো সমাধান নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার (১১ জুলাই) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

করোনা-বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির কারফিউ জারি করার পরামর্শের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি মনে করি, কারফিউ জারি কোনো সমাধান নয়। এই লকডাউনে যদি আপনি সঠিকভাবে সাধারণ মানুষের অর্থের ব্যবস্থা করতে না পারেন এবং যদি তাদের খাদ্যের ব্যবস্থা করতে না পারেন তাহলে এই অপরিকল্পিত লকডাউন দিয়ে তো সঠিক সমাধান আনতে পারবেন না।’

‘আমাদের পরপর যে লকডাউনগুলো হয়েছে- সরকারি ছুটি, লকডাউন, কঠোর লকডাউন- তাতে সামাজিক দূরত্ব, শারীরিক দূরত্ব সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি। লকডাউনে কি দেখা যাচ্ছে? মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, কষ্ট পাচ্ছে, বলা যায় যে, অনেকে খাদ্যের অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘লকডাউনের লক্ষ্যটা হচ্ছে- মানুষকে মানুষের কাছ থেকে দূরে রেখে, দূরত্ব সৃষ্টি করে সংক্রমণটা প্রতিরোধ করা। সেটার জন্য তো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোথায় সেই সচেতনতা? খালি ধমক দিয়ে আর গরিব মানুষকে জেলের মধ্যে পুরে দিলে তো হবে না।’

‘আমি পত্রিকায় দেখলাম, সাড়ে চার হাজার মানুষকে জেল দেয়া হয়েছে। এরা কারা? তারা সব সাধারণ গরিব মানুষ। তারা দিনে আনে দিনে খায়, হয়তো রিকশা চালায়, ঠেলাগাড়ি চালায়, হয়তো কোনো একটা রেস্টুরেন্টে চাকরি করে। এরা যখনই বেরিয়েছে তাদের ধরে নিয়ে গেছে। এমন কথাও বেরিয়েছে, বাবার জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার আনতে গেছে সেখানে তাকে গ্রেফতার করার ফলে সেই বাবা অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন। এ অপরিকল্পিত ব্যবস্থার ফলেই আজকে এই ঘটনা ঘটছে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজকে ‘দিন আনে দিন খায়’ মানুষ তারা কোনো রকমের সহযোগিতা পাচ্ছে না। ইনফরমাল সেক্টর তো এমনিতেই তারা ছোট ছোট পুঁজি নিয়ে কাজ করে। দুবার লকডাউনের ফলে এই ক্ষুদ্র মানুষগুলো তাদের পুঁজি হারিয়েছে, তারা নিঃস্ব হয়ে গেছে, পথে বসে গেছে।

‘আমি ব্রিটেনের খবর জানি, যুক্তরাষ্ট্রের খবর জানি, যারা ছোট ছোট রেস্টুরেন্ট চালান, ইনফরমাল সেক্টর যেগুলো আছে এরা কিন্তু সবাই আগেই প্রণোদনা পেয়ে গেছে। অর্থাৎ মাস শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রণোদনা পেয়ে যায়; ফলে তাদের ওখানে যারা কাজ করে তারা বেতন পেয়ে যায়, যারা মালিক তারাও ভালো একটা অর্থ পায়।’ সরকার এমনই হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

করোনা মোকাবিলায় বিএনপির দেওয়া আপতকালীন কমিটি গঠনসহ ৫ দফা প্রস্তাব সম্পর্কে আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারা সুনির্দিষ্টভাবে বলুক কোনটা কোনটা বাস্তবায়ন করেছেন। চর্বিত চর্বণ তো প্রতিদিন তারা করছে। তাদের সমস্যাটা হচ্ছে, তারা কোনো সমালোচনা শুনতে চান না। আমরা শুধুমাত্র সমালোচনা করি না, পাশাপাশি সমস্যা সমাধানের প্রস্তাবও দেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই যে তাদের একলা চলো নীতি, দুর্নীতি করো নীতি, লুটপাট করো নীতি এটাই তো এই দেশটাকে, জাতিকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে নিয়ে গেছে।

করোনা মোকাবিলায় সরকারের ওয়ার্ড পর্যায় কমিটি গঠন সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন আবার ওয়ার্ড কমিটিতে দুর্নীতি শুরু হবে। ওখানে টাকা-পয়সা ভাগ করে নেবে আরকি। আমরা মনে করি এটা ফিজিবল না।

‘প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প’ নামের আড়ালে উপহারের ঘর নির্মাণে ‘হরিলুট’ চলছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল, অবিলম্বে দুর্নীতির এ লোক দেখানো প্রকল্প বন্ধ করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খুঁজে বের করতে হবে।

1 2