বঙ্গমাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের সহযাত্রী

নিউজ ২৪লাইনঃ
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের ঘনিষ্ঠ সহযাত্রী। এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতার প্রতিটি পদক্ষেপে জড়িয়ে আছে বঙ্গমাতার নাম। তিনি শুধু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণীই নয় তিনি একজন মহীয়সী বাঙালি নারী। 

বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালি নারীকে জাগ্রত করার অগ্রসৈনিক ছিলেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর জীবনের কঠিন দিনগুলোতে বঙ্গমাতাই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ ধরে রেখেছেন। 

আমৃত্যু নেপথ্যে থেকে জীবন সঙ্গী হিসেবে পরম মমতায় বঙ্গবন্ধুকে আগলে রেখেছিলেন এই মহীয়সী নারী। 

রোববার বিকেলে রূপগঞ্জের পার্শ্ববর্তী বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় রংধনু গ্রুপের প্রধান কার্যালয় রংধনু বিজনেস পয়েন্টে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান  ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান ও আলহাজ্ব রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বাবু। 

বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের জনশক্তি ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক লায়ন শাহিন মালুম, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমান, রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হোসেন ভূইয়া রানু, রেজাউল করিম মাঞ্জু, আওয়ামী লীগ নেতা মুকুল পাশা, সাইফুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা হাজী সফিকুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা লুৎফর রহমান মুন্না, রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রমজান হোসেন প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতার জীবনী নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও  উনার রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

উখিয়ায় অতিবর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে ‘স্কাস’

সংবাদদাতা:

উখিয়ায় অতিবর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে নিজস্ব তহবিল থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে বেসরকারি সংস্থা- সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা( স্কাস)।

 

৮ আগষ্ট রবিবার সকালে রাজাপালং ২ নং ওয়ার্ডের শতাধিক পরিবারেরর মাঝে এ ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়।

 

স্কাসের উদ্দেগে অসহায় এসব মানুষের মাঝে পৌঁছে দেয়া হয় চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজ, তৈল, লবন সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য। দূর্ভোগ, করোনার এই মহামারির সময়ে সাহায্য পেয়ে খুশি গ্রামের সাধারণ মানুষ। ত্রাণ নিয়ে আসা মাহমুদা বেগম জানান- বন্যায় দু’ দফায় ৫ দিন পানি বন্দি ছিলাম। ঘরের চুলায় আগুন জ্বলেনি।এখন পানি নেমে গেছে। স্কাসের পক্ষ থেকে চাল, ডাল, আলু সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য পেয়েছি। এই সব নিয়ে পুরো পরিবার সপ্তাহ খানেক চলতে পারব।

 

সুজাত উদ্দীন জানান, বন্যায় ঘরে পানি উঠে সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। স্কাসের দেয়া ত্রাণ পেয়ে অন্তত: সন্তানদের মুখে কিছু আহার তুলে দিতে পারব।

 

এদিকে বেসরকারি সংস্থা- সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা-স্কাস চেয়ারপার্সন জেসমিন প্রেমা বলেন- বরাবরের মতোই তাঁরা দায়িত্ব হিসেবে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে নিজস্ব তহবিল থেকে সহযোগিতার করতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন জেসমিন প্রেমা।

ভবিষ্যতে স্কাস অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।এসময় তিনি সমাজের বিত্তবানদেরকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহব্বান জানান।

 

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন  রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো: সালাহ্ উদ্দীন। বক্তব্যে তিনি বলেন, এবারের বন্যায় তার এলাকায় ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।তিনি সমাজের বিত্তবানদের অসহায় এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

 

ত্রাণ বিতরণকালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্কাসের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর তৌহিদুল মোস্তফা।

উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে উখিয়ায় বন্যায় ভেসে যাওয়া নিহত তিন পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলো সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা( স্কাস)।

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী আজ

নিউজ ২৪লাইনঃ- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী আজ। বঙ্গমাতা ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ছিল রেণু।

বাবার নাম শেখ জহুরুল হক ও মায়ের নাম হোসনে আরা বেগম। এক ভাই-দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে তিনি জাতির পিতার হত্যাকারীদের হাতে নির্মমভাবে শাহাদাৎ বরণ করেন।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

দিবসটিতে সরকারি কর্মসূচি ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আপোষহীন লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে শুধুমাত্র বাঙালি জাতির পিতাই হননি, বিশ্ব বরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছিলেন। এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তাঁরই সহধর্মিণী, মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব।

মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বেগম মুজিব তার পিতা-মাতা দুই জনকেই হারান এবং ১৯৩৮ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শুধু সহধর্মিণীই ছিলেন না, ছিলেন সহযোদ্ধা ও কর্মপ্রেরণাদাত্রী। এই ত্যাগী নারী বঙ্গবন্ধু পরিবারের সব দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জাতির সেবায় মনোনিবেশ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, রাজনীতির নানা দুঃসময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুকে দিয়েছিলেন গঠনমূলক পরামর্শ। তার বলিষ্ঠ ও সময়োপযোগী পরামর্শসমূহ জাতির জীবনে সুফল বয়ে এনেছে, যা জাতীয় ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হিসেবে দীর্ঘকাল তার পাশে থেকে মানবকল্যাণ ও রাজনীতির যে শিক্ষা তিনি লাভ করেছেন, তাতে তিনি একজন বিদুষী ও প্রজ্ঞাবান নারীতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবনে ছায়ার মতো অনুসরণ করে তাঁর প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস হয়েছিলেন বেগম মুজিব।

বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয়-দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বারে বারে পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি ছিলেন, তখন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বঙ্গমাতার নিকটে ছুটে আসতেন। তিনি তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা বুঝিয়ে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা যোগাতেন। বিশেষ করে আগরতলা যড়যন্ত্র মামলায় প্যারোলে বঙ্গবন্ধুর মুক্তি নিয়ে একটি কুচক্রীমহল বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাঙালির মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল।

মহান মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি ভেঙ্গে না পড়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন দৃঢ়তার সঙ্গে। যুদ্ধ পরবর্তীকালে দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে কাজ করেছেন, গরীব-এতিম-অসহায় মানুষদের সাহায্য করেছেন, বীরাঙ্গনাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার মতো মহৎ দায়িত্ব পালন করেছেন।

এদেশের মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে বেগম মুজিব যে কর্তব্যনিষ্ঠা, দেশপ্রেম, দূরদর্শী চিন্তা, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তার ফলে জাতির পিতার পাশাপাশি তিনি আজ বঙ্গমাতার আসনে অধিষ্ঠিত। এ দেশের রাজনীতিতে তার অনন্য সাধারণ ভূমিকার জন্য চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এই মহীয়সী নারী ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সপরিবারে খুনিচক্রের বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে শহীদ হন।