নিউগ২৪লাইন
আলোচিত তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান এর ব্যাপারে নানা তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে একসময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ছাত্র সংগঠন কলেজে পড়ার সময় ছাত্রদলে যুক্ত ছিলেন বলে তৎকালীন ছাত্রনেতারা নিশ্চিত করেছেন।
, ময়মনসিংহ- অডিও কেলেঙ্কারিতে মন্ত্রিত্ব হারাতে বসা তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় ছাত্রদলে যুক্ত ছিলেন বলে তৎকালীন ছাত্রনেতারা নিশ্চিত করেছেন।
তবে কি ডাক্তার মুরাদ হাসান কারো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে এ নিয়ে সচেতন মহলে জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে
খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে বর্ণ ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্যের পর এক চিত্রনায়িকার সঙ্গে অশালীন ফোনালাপের অডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর সোমবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, মুরাদকে পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আফসোস করে বলেন এত বড় বেয়াদব কিভাবে ছাত্রদলের মতো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল
আমার বুঝে আসেনা
মুরাদ বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল থেকে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগে যুক্ত হয়েছিলেন বলে তৎকালীন ছাত্রনেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
জানা যায়, ১৯৯৪ সালে ডা. মুরাদ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে (মমেক) যখন পড়াশোনা শুরু করেন তখন ছিল বিএনপির শাসনামল। তাই তিনিও ক্ষমতার লোভে নাম লেখান ছাত্রদলে। ১৯৯৫ সালে মমেক শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক হন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতার পালাবদলে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ছাত্রদলের পদেই থেকে যান মুরাদ হাসান। কিন্তু ১৯৯৮ নিজের ভোল পাল্টে নাম লেখান ছাত্রলীগে। বাবার ক্ষমতার দাপটে মমেক ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকও হন। এরপর ২০০০ সালে মমেক শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ নিয়ে নিজেকে জাহির করেন সাচ্চা আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে।
ডা. মুরাদের বাবা মতিউর রহমান তালুকদার ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। তৎকালীন সময়ে মুরাদের একাধিক রাজনৈতিক সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলে মিলেছে এতসব তথ্য।
জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের মমেক ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক থাকাকালে সভাপতি ছিলেন আব্দুল ওয়াহাব সরকার বাদল ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বিজয় কুমার পাল। কিন্তু ছাত্রদল ইস্যুতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মুরাদকে কমিটিতে জায়গা দেওয়ার বিষয়ে ঘোর বিরোধী ছিলেন তারা।
তবে তৎকালীন একাধিক ছাত্রলীগ নেতার দাবি, বাদল-বিজয় কমিটিতে মুরাদকে পদ দিতে চাননি ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা। তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি মির্জা খালিদ আল আব্বাসও চাননি মুরাদ ছাত্রলীগের কমিটিতে আসুক। অপরদিকে অন্য একটি গ্রুপ মুরাদকে ছাত্রলীগের কমিটিতে অনুপ্রবেশ করানোর জন্য জোর ভূমিকা রাখে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ১৯৯৮ সালের মমেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. বিজয় কুমার পাল বলেন, ডা. মুরাদের বাবা জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও উনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ একজন সহচর ছিলেন। সে জন্য মুরাদকে পদে আনতে চারদিক থেকেই আমাদের চাপ ছিল। যার ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই আমরা তাকে সাংগঠনিক সম্পাদক বানিয়েছিলাম।
ডা. মুরাদের এক ব্যাচ সিনিয়র ও ১৯৯৮ সালের মমেক ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ইসহাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বর্তমান তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান তার পিতার জোরে ছাত্রলীগের পদ বাগিয়েছেন। মুরাদ ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক থাকা অবস্থাতেই ক্ষমতার পালাবদল হয়। অর্থাৎ বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই আমলেই তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী।
তবে এতদিন কেন এই বিষয়টি জানা গেল না, এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. মো. ইসহাক বলেন, যখন কাউকে নিয়ে বিতর্ক হয় তখনই পেছনের ইতিহাসও সামনে আসে।
এ বিষয়ে মুরাদ হাসানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ছাত্রদল থেকে ছাত্রলীগে আসার এই তথ্য প্রকাশের আগে রোববার থেকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। সোমবার এক অনুষ্ঠানে তার অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি সেখানে যাননি।