‘গাঁজায় রাজা’ উখিয়ার পাগলিরবিলের সোহেল

বিশেষ প্রতিবেদক

এক সময় ‘নুন আনতে পান্তা পুরাতো যার, এখন আলিশান ফ্ল্যাটে বসবাস তার।চট্টগ্রাম থেকে গাঁজার সবচেয়ে বড় চালান যার হাত ধরেই উখিয়া আসে তার নাম উখিয়ার মরিচ্যা এলাকার পাগলিরবিলের মোঃ মুজিবুর রহমানের ছেলে সাবিত চৌধুরী সোহেল।

এক সময় অর্থাভাবে পেটে ভাত না জুটলেও মাত্র অল্প সময়ের ব্যবধানে চট্টগ্রামে এখন তার বিশাল দামী ফ্ল্যাট ও মার্কেটের সবচেয়ে দামী গাড়িটাই তিনি ব্যবহার করেন।

সোহেল চৌধুরীর হঠাৎ এমন উত্থানের বিষয়ে অনুসন্ধান করে পাওয়া যায় ‘গাঁজায় রাজা’ বনেছেন তিনি।

গত কয়েক বছর আগে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট এলাকা থেকে ছিনতাইয়ের সময় পুলিশের কাছে হাতেনাতে গ্রেপ্তার হন সোহেল, দীর্ঘদিন কারাভোগ করে বের হয়েই হঠাৎ ব্যবসায়ী  এবং চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটেই আলিশান  ফ্ল্যাটের মালিক বনে যান সোহেল।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে পিলে চমকানোর মতো তথ্য।

চট্টগ্রামের জেলে থাকা অবস্থায়  চট্টগ্রামের এক ব্যক্তির (কয়েদি) সাথে তার পরিচয় হয়। জেলে থাকা অবস্থায় ওই ব্যক্তির সাথে তার বউ দেখা করতে আসলে সাথে থাকা সোহেলকেও তার বউয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। চট্টগ্রামের ওই ব্যক্তির বউ তার স্বামীর জন্য  জেলে কোনো কিছু পাঠালে সাথে সোহেলের জন্যও পাঠাতো।এভাবে কয়েকমাস যাওয়ার পর সোহেল জেল থেকে বের হলে ওই নারীর সাথে তার সম্পর্ক শুরু হয়।প্রেম এবং একপর্যায়ে তা বিয়ে পর্যন্ত গড়ায় তার সাথে। চট্টগ্রামের মইজ্যারটেক এলাকায় ওই নারীর পরিচয়  ছিলো  মাদক সম্রাজ্ঞী হিসেবে।পরে তার হাত ধরেই মরিচ্যার সোহেল মাদক ব্যবসায় নিজের নাম লেখান, শুরু হয় মাদকের বিশাল ব্যবসা।

উখিয়ার মরিচ্যা, পাগলিরবিল, পশ্চিম মরিচ্যা, এবং কোটবাজার ও উখিয়াতে গড়ে তুলেন তিনি একাধিক গাঁজা সিন্ডিকেট।

বিশেষ করে জালিয়া পালংয়ের সোনারপাড়ায় বেশ কয়েক বছর ধরে গাঁজা সাপ্লাইয়ের শক্ত সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন এই সোহেল।অন্যদিকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও পৌঁছে যায় তার গাঁজার চালান। সেখানেও রয়েছে তার শক্ত সিন্ডিকেট। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে ক্যাম্পে নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি সংগঠনের সাথে জড়িত জৈনক হেড মাঝি।

তবে মরিচ্যার বিশাল সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে মরিচ্যার এক প্রভাবশালী ব্যক্তির হাতে।

সূত্র বলছে, চট্টগ্রাম থেকে মালবাহী গাড়ি,কোন কোন সময় বাইকে করে আসা গাঁজা মরিচ্যাতেই সংগ্রহ করে আবার বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব মরিচ্যার ওই প্রভাবশালী  ব্যক্তির।

মরিচ্যাতেই গুদামে রাখা হয় গাঁজা, পরে সেখান থেকে উখিয়ার বিভিন্ন জায়গায় চলে যায়।

তবে এ বিষয়ে সাবিত চৌধুরী সোহেলের কাছ জানতে চাওয়া হলে তিনি অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।চট্টগ্রামে ফ্ল্যাট এবং গাড়ীর কথা স্বীকার করলেও গাঁজা ব্যবসার কথাটি একেবারেই অস্বীকার করেছেন তিনি।