শার্শার পুটখালী সীমান্তের অস্ত্রধারী চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোল্ড নাসির এখন বেপরোয়া

নিউজ২৪লাইন:
বেনাপোল প্রতিনিধি: স্বর্নপাচার, অস্ত্র ব্যবসা ও মাদক ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন শার্শার পুটখালী সীমান্তের অস্ত্রধারী চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোল্ড নাসির। নিজ নামে একটি বাহিনী তৈরী করে অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তিনি উপজেলা ব্যাপী রামরাজত্ব কায়েম করে চলেছে ন। এলাকার সাধারণ মানুষ তার ভয়ে আতংকিত হয়ে আছেন। প্রশাসনের বড় বড় কর্মকর্তাদের তিনি ম্যানেজ করে চলেন। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে তাকে বিভিন্ন মামলা হামলায় জড়িয়ে সর্বশান্ত করে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর
তাই স্থানীয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোন অবস্থান নিতে পারে না। ফলে কোটি কোটি টাকার স্বর্ন পাচার হচ্ছে শার্শা সীমান্ত দিয়ে। জানাগেছে, যশোরের শার্শা উপজেলার সীমান্তবর্তী পুটখালী গ্রামের মৃত বুদো সরদারের ছেলে উপজেলার শ শীর্ষ সন্ত্রাসী স্বর্ণ পাচার, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী নাসির উদ্দীন ওরফে গোল্ড নাসির কয়েক বছর পূর্বে শতাধিক যুবকদের নিয়ে নিজ নামে একটি বাহিনী তৈরী করে তিনি স্বর্ণ পাচার, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী চালিয়ে আসছেন। এছাড়া তিনি ভারত থেকে চোরাই পথে আনা গরু দিয়ে একটি ফার্মগড়ে তুলেছেন; যেখানে ৩-৪শ গরু রয়েছে। এ সকল গরুর বৈধ কোন কাগজ নেই বলেও স্থানীয়রা দাবি করেছেন।
ফলে শার্শা উপজেলা এখন দেশের স্বর্ণ পাচারের প্রধান রুট হিসাবে পরিচিত হয়েছে। একইসাথে তিনি ভারত থেকে মাদকদ্রব ও অস্ত্র এনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। তার নামে বেনামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। তৈরি করেছেন আলীসান বাড়ি ও গাড়ি। এক সময়কার দুর্ধর্ষ বিএনপি ক্যাডার গোল্ড নাসির বর্তমানে আওয়ামীলীগের কথিত নেতা সেজে বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসীর রাজত্ব।
সম্প্রতি, যশোরের শার্শার পাঁচ পুকুর এলাকার ওরিয়েন্টাল ওয়েল কোম্পানি লিঃ ফ্যাক্টারির সামনে পুলিশ সোনা পাচারকারীদের প্রাইভেট কার ( ঢাকা মেট্রো-গ ২২-০৪২৪) আটক করলে ২০/ ২৫ টি মোটর সাইকেলে ৪০/৫০ জন গোল্ড নাসির বাহিনীর সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর হামলা করে প্রাইভেট কার ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে নাসির বাহিনীর এক সদস্য মারা যান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৯ কজি ৭শ ৫৮ গ্রাম ওজনের ৩০টি স্বর্নের বারসহ দুজন কে আটক করে।
এছাড়াও গোল্ড নাসির নামের এই কুখ্যাত সন্ত্রসীর বাড়িতে সম্প্রতি র্যাব -৬ অভিযান চালিয়ে চারিদিকে ঘিরে তল্লাশি চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সে পালিয়ে যায়। এসময় তার দোতলা বিল্ডিংয়ে তল্লাশি চালিয়ে দুইটি দেশী তৈরি ওয়ান শুটার গান, দুই রাউন্ড গুলি ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে র্যাব।
সূত্র জানায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর ভোরে জেলা ডিবি পুলিশ উপজেলার মহিষাকুড়া গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় নাসির বাহিনীর ক্যাডার শাহাবাজের বসতবাড়ির গোয়াল ঘর থেকে ১ পিস দুনালা বন্দুক ৬ পিস বারো বোর কার্তুজ উদ্ধার করে। আটক করা হয় ওই গ্রামের মৃত নুর আলী মন্ডলের ছেলে শাহাবাজ মন্ডল, আবেদার রহমানের মোল্লার ছেলে জসিম উদ্দিন, আমীর আলী মোড়লের ছেলে সাহেব আলী বিল্লাল।
তাছাড়াও নাসির বাহিনীর সদস্য সম্রাট হোসেনকে গত ১ অক্টোবর বেনাপোল সীমান্ত থেকে ৭টি নাইন এমএম পিস্তল, ৪টি ম্যাগাজিন ও ১০ রাউন্ড গুলিসহ আটক করে বর্ডার গার্ড বিজিবি সদস্যরা। তার বাহিনীর আর এক সদস্য জহুরুল ইসলামকে
বেনাপোল সীমান্ত থেকে পিস্তল, ম্যাগজিন ও গুলিসহ আটক করেন বিজিবি।
অপরদিকে চলতি বছরের ১৮ অক্টোবর ঝিকরগাছা উপজেলার ব্যাঙ্গদা সীমান্ত থেকে গোল্ড নাসিরের এক সদস্যকে ১৩ কেজি ওজনের ১০৬ পিস স্বর্ণের বারসহ আটক করে বর্ডার গার্ড বিজিবি সদস্যরা। গত ২৭ অক্টোবর বেনাপোলের গাজিপুর এলাকা থেকে ১০ পিচ (১কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের) স্বর্ণের বার সহ তার সদস্যকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।
গত ৩০ অক্টোবর গোগা গাজিপাড়া থেকে ৯ পিচ (১কেজি ৫১ গ্রাম ওজনের) স্বর্ণের বার সহ কওসার আলী নামের তার বাহিনীর এক সদস্য কে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা। সবশেষে গত ৬ নভেম্বর ভারতে পাচারের সময় বেনাপোলের পুটখালী সীমান্ত থেকে ১ কেজি ১৬৫ গ্রাম ওজনের ১০ টি স্বর্ণের বারসহ গোল্ড নাসির বাহিনীর মহিলা সদস্য রত্না বেগমকে আটক করেছে বিজিবি সদস্যরা। আটক রত্না বেগম গোল্ড নাসিরের নিজ গ্রাম পুটখালি গ্রামের কামাল হোসেনের স্ত্রী।
এবিষয়ে নাসির উদ্দীন ওরফে গোল্ড নাসিরের মুঠোফোনে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। এমতাবস্থায় শার্শা উপজেলা বাসী তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়,এনবিআর, দুদক সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।