জাজিরায় পারিবারিক ধন্দে আত্মহত্যায় এক যুবকের মৃত্যু

নিউজ২৪লাইনঃ
রতন আলী মোড়ল
জেলা প্রতিনিধি (শরিয়তপুর)

শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জাজিরা পৌরসভার ০৫ নং ওয়ার্ডের ফকির মাহমুদ আকন কান্দী গ্রামের বাসিন্দা মোঃ হানিফ শাহ (৩৫) পিতা মোঃ নয়ন শাহ এর পাঁচ জন সন্তানের মধ্যে একমাত্র মেজ ছেলে হানিফ শাহ ,

রবিবার (২২) জানুয়ারি সকাল ৭:৩০ এর দিকে ফকির মাহমুদ আকন কান্দি গ্রামের হানিফের নিজ বাড়িতে তার নিজের তৈরি ঘর থেকে তার ঝুলন্ত অবস্থায় মৃত লাশ উদ্ধার করেন জাজিরা থানার এএসআই বিশ্বজিৎ।

নিহত হানিফ শাহের স্ত্রী সুমি আক্তার (২৬) তার ৮ বছর বয়সী একটা ছেলে সন্তান রয়েছে হাবিব শাহ সন্তানকে রেখে দীর্ঘদিন যাবত সৌদি আরবে প্রবাস থেকে গত তিন মাস যাবত দেশে ফিরে আসেন নিহত হানিফ শাহ,

সরজমিনে গিয়ে স্থানীয় তথ্য সুত্রে জানা যায়, হানিফ শাহ দীর্ঘদিন যাবৎ প্রবাসে থাকায় তার বোন যথাক্রমে শাহনাজ, জাহানারা,রেহানা, ও শারমিন দের সাথে তার স্ত্রী সুমি আক্তারের ধন্ধে চলে আসছিলো। হয়ত তাদের এই দন্ধে মানসিক ভাবে ভেঙে পরেন হানিফ শাহ,পরিবার আর বোনদের কলহে মাসিক ভারসাম্য হারিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

এদিকে নিহত হানিফ শাহ’র স্ত্রী সুমি আক্তার বলেন, তার স্বামী দীর্ঘদিন সৌদি প্রবাসী ছিলেন।গত তিন মাস যাবত দেশে আসছেন। প্রবাস থাকাকালীন সময়ে আমাকে আমার শাশুড়ি ও ননদেরা মারধর করত।
দেশে আসার পর থেকেই তারা বিভিন্ন ভাবে আমাকে হুমকি দিত যে আমাকে তারা বিধবা বানাবে বা আমি তার ভাইয়ের সংসার করতে পারব না। আজ সকালে আমি আমার স্বামীকে বাড়িতে রেখে আমার বাবার বাসায় আসি।এরপর ফোনের মাধ্যমে খবর পাই, রুমের ভেতর ফ্যানের সাঙ্গে রশি পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছেন আমার স্বামী।আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। প্রশাসনের যেন সঠিকভাবে তদন্ত করে আসামীদের শাস্তি প্রদান করেন।

অন্যদিকে নিহত হানিফ শাহ’র মা বলেন, আমার ছেলের বউ আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। বিদেশ থাকাকালীন সময়ে এবং দেশে আসার পরেও আমার ছেলের বউ আমার ছেলেকে নানা ভাবে অত্যাচার করত,তার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে।

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান,সংবাদ পেয়ে সাথে সাথে ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠাই মৃত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। যদি কেউ অভিযোগ করেন পরবর্তীকালে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ডামুড্যায় দারুল আমান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন ও মিলনমেলা

নিউজ২৪লাইনঃ
ইয়ামিন কাদের নিলয়
বিশেষ প্রতিনিধি

শরীয়তপুরের ঐতিহ্যবাহী দারুল আমান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন ও সাবেক, বর্তমান ছাত্রদের মিলনমেলাকে কেন্দ্র করে আনন্দে মেতে উঠেছে ডামুড্যা উপজেলা। দিনব্যাপী এই উৎসবকে কেন্দ্র করে আনন্দে মাতোয়ারা বর্তমান ও সাবেক ছাত্ররা।
শনিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শরীয়তপুর-৩ আসনের এমপি নাহিম রাজ্জাক। তিনি উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি ছাত্রসমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এমপি বলেন, আজকের ছাত্রসমাজই আগামী বাংলাদেশের হাল ধরবে, তাই তাদের সব বিষয়ে সমান পারদর্শী হতে হবে। তাদের ডিজিটাল প্রযুক্তিকে মানিয়ে নিতে হবে। আর তারা যদি ডিজিটাল প্রযুক্তিকে মানিয়ে নিতে পারে তাহলেই কেবল প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন ও মিলনমেলার সমিতির সভাপতি মো. আবুল হাসেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারের জন-নিরাপত্তা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—সাবেক সচিব ও শিক্ষাবিদ মো. আক্তার হোসেন, জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান, শরীয়তপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার, পুলিশ সুপার মো. সাইফুল হক, পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট শিক্ষাবিদ বি.এম ইউসুফ আলী।
অনুষ্ঠানে আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ছাড়াও খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার উন্নয়নের জন্য যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরলঃ নাহিম রাজ্জাক এমপি

নিউজ২৪লাইনঃ
ইয়ামিন কাদের নিলয়
বিশেষ প্রতিনিধি

শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাহিম রাজ্জাক বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার জেষ্ঠ কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শিক্ষার উন্নয়নে যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। তিনিই একমাত্র সরকার প্রধান যে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেন। দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষার সুযোগ আর শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি দিয়ে সোনার মানুষ তিনি গড়তে চান। নিরক্ষতার অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করে সব নাগরিককে শিক্ষিত করে তোলার জন্য তিনি শিক্ষার উপর জোর দিয়েছিলেন অনেক বেশি। তিনি শনিবার (২১ জানুয়ারী) ডামুড্যা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দারুল আমান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। আওয়ামীলীগ সরকারের টানা ১৪ বছরের ক্ষমতা কালিন সময়ে দেশের শিক্ষা, যোগাযোগ, চিকিৎসা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের বর্ননা দিয়ে নাহিম রাজ্জাক বলেন, এ উন্নয়নের জন্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে। তিনি বলেন আপনাদের সন্তান জাতীয় বীর আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাক শরীয়তপুরের উন্নয়নের যে সূচনা করে গেছেন আমরা তা এগিয়ে নিচ্ছি। এ উন্নয়ন অগ্রযাত্রা চলমান রাখতে আগামী নির্বাচনে আপনাদের কে শেখ হাসিনা আওয়ামীলীগ ও নৌকার প্রশ্নে আপোষহীন থাকতে হবে।
দারুল আমান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোঃ আবুল হাসেম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জন নিরাপত্তা বিভাগ সিনিয়র সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিনিয়র সচিব (পি আর এল) জন নিরাপত্তা বিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মোঃ আক্তার হোসেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মুন্সী আবদুল আহাদ, জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান, শরীয়তপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাবেদুর রহমান ( খোকা সিকদার) পুলিশ সুপার সাইফুল হক, শিক্ষাবিদ ও সমাজ সেবক আ,কা, ফজলুল হক, পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও বি এম ইউসুফ আলী, শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুল জলিল। বক্তব্য রাখেন, ডামুড্যা উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মাঝি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাছিবা খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) আবু সাঈদ।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ূন কবির বাচ্চু ছৈয়াল, ডামুড্যা পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম রাজা ছৈয়াল, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ গোলান্দাজ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খাদিজা খানম লাভলী, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র দারুল আমান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু সিকদার, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইনু বেপারী, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমসহ সাবেক ও বর্তমান হাজারো শিক্ষার্থী।
সভায় নাহিম রাজ্জাক আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এবং তারই চিন্তাচেতনার আলোকে গঠিত কুদরাত-এ-খুদা কমিশন জাতিকে উপহার দিয়েছিল এমন একটি প্রতিবেদন যার মধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল জাতির প্রত্যাশা আর বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শন ও শিক্ষাভাবনা।
সোনার বাংলা গড়ার জন্য যে রকম সোনার মানুষ তিনি চাইতেন, সে রকম মানুষ গড়ার জন্য, নিরক্ষতার অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করে সব নাগরিককে শিক্ষিত করে তোলার জন্য তিনি শিক্ষার উপর জোর দিয়েছিলেন অনেক বেশি। তিনি চেয়েছিলেন, প্রত্যেকটি শিশুর চিত্তে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র আর ধর্মনিরপেক্ষতার সুস্পষ্ট বোধ প্রোথিত হোক, তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক, প্রত্যেকের মধ্যে সম্পূর্ণ ব্যক্তিত্বের বিকাশ সাধিত হোক। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যাকান্ডের ঘটনা যদি না ঘটতো আর পঁচাত্তর-পরবর্তী অগণতান্ত্রিক সামরিক সরকার যদি বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগে গঠিত খুদা কমিশন বাতিল করে না দিতো এবং দেশটাকে পাকিস্তানের ভাবাদর্শের জিঞ্জিরে নিক্ষিপ্ত করার অপপ্রয়াস না নিতো, তাহলে বাংলাদেশকে কখনো পেছনে ফিরে তাকাতে হতো না। দীর্ঘ সময় পর হলেও বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা প্রাণ ফিরে পেয়েছে; অন্তর্ভুক্তিমূলক, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর এবং মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু যেমন বুঝেছিলেন, তেমনি তার যোগ্য উত্তরসূরি জ্যেষ্ঠকন্যাও বুঝেছেন যে সততা, নৈতিকতা আর সামাজিক মূল্যবোধের আলোকমন্ডিত শিক্ষায় আলোকিত করে প্রতিটি নাগরিককে গড়ে তুলতে না পারলে আদর্শ জাতি যেমন প্রতিষ্ঠা করা যাবে না, তেমনি এদেশকে দারিদ্র্যের বৃত্ত থেকে কখনো বের করে আনা যাবে না, অর্থনৈতিক মুক্তিও মিলবে না।