নিউজ২৪লাইন:
আমান আহমেদ সজিব : শরীয়তপুর
শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ২৪০২ তম হয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন শরীয়তপুরের সখিপুর থানাধীন উত্তর তারাবুনিয়ার কৃষক পরিবারের সন্তান জাহিদ হাসান।এর সকল দায়িত্ব নিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মাননীয় উপমন্ত্রী শরীয়তপুর ০২ আসনের সংসদ সদস্য
অষহায় মানুষের নেতা এ কে এম এনামুল হক শামীম এমপি।
এক ঘণ্টা সময়ের ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষায় জাহিদ পেয়েছেন ৭৯ দশমিক ৭৫। তার মেরিট স্কোর ২৭৯ দশমিক ৭৫। তার ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ।
জাহিদ হাসান সাধারণ এক কৃষক পরিবারের সন্তান। কৃষক বাবাসহ পরিবারের সবার মুখ উজ্জ্বল করেছেন তিনি। ছোটবেলা থেকে জাহিদের মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। নিজের চেষ্টা, পরিবারের সদস্যদের এবং ছোট মামা মোঃ মানিক সৈয়াল ও খালা নয়নতারাসহ শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় মেধাবী এ শিক্ষার্থী নিজেকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। কোনো বাধাই থামিয়ে রাখতে পারেনি প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে বেড়ে উঠা জাহিদের শিক্ষাজীবনের পথ চলাকে। কৃষক পরিবারের সন্তান সেই জাহিদ এবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
জাহিদ হাসান শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানাধীন উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের পাইক বাড়ি গ্রামের ইয়াছিন বকাউল এর ছেলে।
ইয়াছিন বকাউল পেশায় একজন কৃষক। ও মা হাছিনা গৃহিনী। দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহিদ বড়। ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধাবী ছিলেন বলে জানান তার পরিবার।
জাহিদ হাসান আব্বাস আলী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।২০২০ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন জাহিদ হাসান।পরে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হয়ে ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পান তিনি। এ ছাড়া জাহিদ শিক্ষাজীবনে বৃত্তিসহ বিভিন্ন মেধা নির্বাচনি পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করেন।
এদিকে ভেদরগঞ্জ উপজেলা থেকে একমাত্র কুমিল্লা মেডিকেলে চান্স পাওয়া শিক্ষার্থী জাহিদ কে
উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইউনুস আলী মোল্লা।
একমাত্র শিক্ষার্থী হিসেবে জাহিদ চান্স পাওয়ায় পুরো উপজেলার মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনন্দন জানাচ্ছেন তাকে।
জাহিদ হাসান গণমাধ্যমকে জানান,কুমিল্লা মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় প্রথমেই মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি। এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি মাননীয় উপমন্ত্রী আমাদের অসহায় মানুষের নেতা একেএম এনামুল হক শামীম এমপির প্রতি। যিনি আমার সকল দায় দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিলো ডাক্তার হওয়ার। আর সেই লক্ষ্যে আমি লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছি। সরকারি মেডিকেলে চান্স পেয়ে সত্যিই খুব ভালো লাগছে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যাতে একজন আদর্শবান ডাক্তার হয়ে নিজ গ্রামসহ আমাদের উপজেলার দরিদ্র-অসহায় মানুষের
সেবা ও কল্যাণে কাজ করতে পারি। তিনি আরও বলেন, আমি সাধারণ কৃষক পরিবারের একজন সন্তান হওয়ায় নিজে লেখাপড়ার পাশাপাশি মাঠে বাবার কৃষি কাজেও সহযোগিতা করতাম। আমার এই ভালো ফলাফলের পেছনে মা-বাবা, মামা,খালা ও শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের অবদান অপরিসীম।
ছেলের এই সাফল্যে আনন্দে কেঁদেই ফেলেন জাহিদের মা-বাবা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছেলের সাফল্যে খুব আনন্দ হচ্ছে। আল্লাহ আমাদের পুরস্কৃত করেছেন। আমাদের ছেলে যাতে ভালো ডাক্তার হয়ে গরীব ও অসহায় মানুষের সেবা করতে পারে, সে জন্য সবার দোয়া করবেন।
জাহিদের প্রতিবেশী সাজাহান পাইক বলেন, ছোটবেলা থেকেই জাহিদ লেখাপড়ায় ছিলো মেধাবী। অবশেষে আমাদের পরিবারের সবার প্রচেষ্টা, শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা ও সর্বোপরি জাহিদের নিজ প্রচেষ্টায় সে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। তার জন্য রইলো অফুরন্ত ভালোবাসা ও দোয়া।
আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাউসার
আহম্মেদ (বি এস সি) বলেন, জাহিদ খুবই মেধাবী ছাত্র। সে জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। তার কৃতিত্বে আমরা গর্বিত।
কুমিল্লা মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় জাহিদ হাসান কে অভিনন্দন জানিয়েছেন, পানিনসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপমন্ত্রী শরীয়তপুর ০২ আসনের সংসদ সদস্য জননেতা এ কে এম এনামুল হক শামীম এমপি, এবং তার সকল দায় দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি
এবং ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল- মামুন বলেন, জাহিদ তার লালিত স্বপ্ন পূরণের মাধ্যমে একজন গর্বিত ডাক্তার হয়ে যেন দেশের সাধারণ মানুষের সেবা করতে পারেন সেই প্রত্যাশা রাখছি। এবং অতি শিঘ্রই জাহিদকে ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে ।
এবং পানিনসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপমন্ত্রী শরীয়তপুর ০২ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম এনামুল হক শামীম এমপি স্যার তার সকল দায় দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।