শরীয়তপুরে বেগুনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম বেড়ে দ্বিগুন

ইয়ামিন কাদের নিলয়
বিশেষ প্রতিনিধি

শরীয়তপুরে বেগুন-শসা-লেবু, করলা, মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এমনকি, মাছও সাধারণ ভোক্তাদের নাগালের বাইরে। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী প্রতিবছরই রমজানকে ঘিরে দেশের পাইকারি-খুচরা সব বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে থাকে। তাই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নমুনা দেখা দেয় স্থানীয় জেলা উপজেলার বাজারগুলোতেও। বাজার পরিস্থিতি এবারও অস্থিরতা বিরাজ করছে।
পবিত্র মাহে রমজান শুরুর আগেই শরীয়তপুরের বিভিন্ন বাজারে বেড়েছে বেগুন, শসা,করলা, মরিচ লেবুসহ অন্যান্য কাঁচামালের দাম। লোভনীয় মাছের দাম আগের তুলনায় আরও বেড়েছে। বাজারে মাছ, শাক-সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও রমজান উপলক্ষে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে করেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ সাধারণ ক্রেতাদের।
শরীয়তপুর সদর পালং বাজার সহ বিভিন্ন উপজেলা বাজারে ঘুরে জানা যায়, দুদিন আগেও বেগুনের দাম ছিল ৩৫-৪০ টাকা। রমজান শুরুর ঠিক আগের দিন দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০-১২০ টাকা দরে। একইভাবে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ এখন ৯০-১০০ টাকা হয়েছে। ৪০ টাকা কেজি করলা বেড়ে ৮০ টাকা হয়েছে। উচ্চদামে ৮০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে লেবুও। শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। অন্য দিকে কেজি প্রতি ৩০ টাকা দরে টমেটো বিক্রি হচ্ছে।
অন্য সবজির দাম কমবেশি বেড়েছে। বেড়েছে বয়লার মুরগীর দামও। বয়লার মুরগীর দাম এখন বজারে প্রতিকেজি ২৪০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক অর্থে রমজানকে ঘিরে সবজি ব্যবসায়ীরা এখন লালে লাল।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং বাজারের খুচরা কাঁচামাল ব্যবসায়ী ফয়সাল মাহমুদ বলেন, যে বেগুন দুদিন আগে ১৭০০ টাকা মণ কিনেছি, সেটাই আজ কিনতে হলো ২৮০০-৩০০০ টাকা দরে।
ভেদরগঞ্জ বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী হারুন বেপারী জাগো কন্ঠকে বলেন, কাঁচামরিচ দুদিন আগে কিনেছি ১৭০০ টাকা মণ। এখন কিনতে হচ্ছে ৩০০০-৩২০০ টাকা মণ। আমরাও কি করবো মোকামের দামের অনুসারেই আমাদের বেচতে হবে।
ভেদরগঞ্জ বাজারের কাঁচামাল পাইকারি ব্যবসায়ী দেলোয়ার বেপারী বলেন, বাজারের চাহিদা অনুপাতে আমদানি কম থাকায় এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। আমাদের আলু, পিয়াজ এগুলা পন্যের দাম ততটা বাড়ে নাই। কাঁচা মালের দাম খুবই বেড়েছে।
খুচরা ব্যবসায়ী রাজন বেপারী বলেন, কাঁচামরিচের ১০ কেজির পাল্লা ৮০০ টাকা দিয়ে কিনেছি। লাভ করতে হলে খুচরা বাজারে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হবে। আর লেবুর চাহিদা বেশি, তবে গিরস্থালি থেকে লেবু আমদানি কম তাই বেশি দাম দিয়ে যশোর সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আমরা কি করবো বলেন। আর বেগুন ও কাঁচামরিচের ওপর ভর করে রমজানে ব্যবসা চলে।
রোজার জন্য বাজার করতে আসা অটোভেন চালক জামাল সরদার বলেন, কাঁচামরিচ গত সপ্তাহে কিনেছি ৫০ টাকা কেজি, আজ কিনলাম ১২০ টাকায়। গরুর মাংস কেনার টাকা না থাকায় ব্রয়লার কিনতে গিয়ে দেখি সেটাও ২৫০ টাকা কেজি। আর বেগুনের দাম আগুন হওয়ায় ধারে কাছেও যেতে পারিনা! আমরা গরিব মানুষ এখন কী খাবো? মনে হয় ব্যবসায়ীরাই ইচ্ছে করে বেশি দাম চাচ্ছে।
এ বিষয় জানতে চাইলে, জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে ও পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মনিটরিং টিম মাঠে নামানো হয়েছে। প্রত্যেক উপজেলার ইউএনও, এসিল্যান্ড বাজারের অভিযান করছে। ভেক্তাদের ন্যায্য দামে ব্যবসায়ীদেরকেও শতর্কতা মুলক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। কেউ অতিরিক্ত মুনাফার লোভে দাম বেশি ও পন্য মজুদ করলে আইননুসারে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Spread the love

পাঠক আপনার মতামত দিন